২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

এক দিনে ব্যাংকে ২২ হাজার কোটি টাকা লেনদেন

ঈদে ব্যাংকের সব ডিজিটাল সেবা নিরবচ্ছিন্ন রাখার নির্দেশ
- ছবি - ইন্টারনেট

ঈদের আগে পূর্ণাঙ্গ আকারে ব্যাংক লেনদেন শেষ হচ্ছে আজ। কোরবানির পশু কেনাকাটার জন্য হাট এলাকায় কাল থেকে ঈদের আগের দিন রাত ১০টা পর্যন্ত সীমিত পরিসরে ব্যাংক খোলা থাকবে। তাই গতকাল ঈদের প্রয়োজনীয় কেনাকাটার জন্য ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে গ্রাহকদের ছিল উপচে পড়া ভিড়। ব্যাংকগুলো নিজেদের নগদ টাকা লেনদেন সামাল দিতে না পেরে কলমানি মার্কেটের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছেও হাত পাততে হয়। গতকাল এক দিনে ২২ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে কলমানি মার্কেটে লেনদেন হয়েছে ৯ হাজার কোটি টাকা। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে স্বল্প সময়ের জন্য সঙ্কটে পড়া ব্যাংকগুলো ধার নিয়েছে ১৩ হাজার কোটি টাকা। কলমানি মার্কেট থেকে ১০০ টাকা ধার করতে ব্যাংকগুলোকে সাড়ে ৭ শতাংশ সুদ গুনতে হয়েছে। আর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে স্বল্প সময়ের জন্য ধার নেয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে গুনতে হয়েছে ৯ শতাংশ সুদ।

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, ব্যাংক লেনদেনের স্বাভাবিক সময় পার হওয়ার পরও গ্রাহকদের চাহিদা মেটানো হয়েছে। সাধারণত বেলা ৩টা পর্যন্ত ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করা যায়। গতকাল অনেক ব্যাংকের শাখায় সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রাহকদের চাহিদা মিটিয়েছে। সাধারণত, বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে ঈদের আগে ব্যাংক থেকে নগদ টাকা বেশি উত্তোলন হয়। নিজেদের প্রয়োজনে ও ব্যাংক ছুটি থাকায় স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বাড়তি অর্থ উত্তোলন করা হয়। আগামীকাল থেকে ঈদের ছুটি শুরু হয়ে আগামী ১ জুলাই পর্যন্ত ব্যাংক বন্ধ থাকবে। অর্থাৎ এ পাঁচ দিনে নিজেদের প্রয়োজন মেটানোর জন্য গ্রাহকরা গতকাল বাড়তি টাকা উত্তোলন করেছে বলে ব্যাংকাররা জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গতকাল দুপুরের আগেই অনেক ব্যাংকের নগদ টাকার টান পড়ে যায়। অনেকেই কলমানি মার্কেট থেকে ধার নেয়। কিন্তু কলমানি মার্কেট থেকেও প্রয়োজনীয় চাহিদা না মেটায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ছুটে যায়। গতকাল কলমানি মার্কেট থেকে ব্যাংকগুলো টাকা ধার নিয়েছে ৯ হাজার কোটি টাকা। সাধারণত সুদের হার ছিল ৫ শতাংশের নিচে। গতকাল এক লাফে আড়াই শতাংশ বেড়ে সাড়ে সাত শতাংশ পর্যন্ত লেনদেন হয়েছে। আর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ১৩ হাজার কোটি টাকার জোগান দেয়া হয়েছে সঙ্কটে পড়া ব্যাংকগুলোর জন্য।

এদিকে পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি এক দিন বাড়িয়ে চার দিন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সেই হিসাবে আসন্ন ঈদুল আজহার ছুটি থাকবে ২৭ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত। তবে ঈদের আগের দিন রাত ১০টা পর্যন্ত বিশেষ ব্যবস্থায় ব্যাংক খোলা রাখার নির্দেশনা রয়েছে। বন্ধের মধ্যেও এটিএম বুথ, অনলাইন ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নিরবচ্ছিন্ন রাখার নির্দেশ দিয়ে রোববার নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নির্দেশনায় বলা হয়, এটিএম বুথ, পয়েন্ট অব সেল (পিওএস), ই-পেমেন্ট গেটওয়ে, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন লেনদেন নিশ্চিত করতে হবে। এসব লেনদেনে কোনোভাবেই গ্রাহক যেন হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

সার্বক্ষণিক এটিএম সেবা চালু রাখা, বুথের কারিগরি ত্রুটি দ্রুততম সময়ে সমাধান করা এবং বুথে সার্বক্ষণিক পাহারাদারদের সতর্ক অবস্থানসহ অন্যান্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সার্বক্ষণিক পিওএস সেবা নিশ্চিত করা, জাল-জালিয়াতি রোধে মার্চেন্ট ও গ্রাহককে সচেতন করতেও ব্যাংকগুলোকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ই-পেমেন্ট গেটওয়ের ক্ষেত্রে কার্ডভিত্তিক ‘কার্ড নট প্রেজেন্ট’ এবং অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেনের ক্ষেত্রে ‘টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন’ ব্যবস্থা চালু রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement