ইউনিলিভার, সিটি গ্রুপসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১১ মামলা
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০
বাজারে চাল, আটা-ময়দা, ডিম, ব্রয়লার মুরগি ও নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য আট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১১টি মামলা করেছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। এ তালিকায় নাম রয়েছে ইউনিলিভার, সিটি গ্রুপ, কাজী ফার্মস ও প্যারাগনের মতো বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের।
কমিশন বলছে, এসব প্রতিষ্ঠানের কারসাজির জন্যই নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। কোম্পানিগুলো সঙ্কট তৈরি করে দাম বাড়িয়েছে। সেজন্য প্রতিযোগিতা কমিশন স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেছে। প্রতিযোগিতা কমিশনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বাজারের সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার নিয়ম ভেঙে অস্বাভাবিকভাবে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। আগামী সোমবার এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে শুনানি শুরু হবে।
কমিশন থেকে পাওয়া তালিকায় দেখা গেছে, চালের বাজারে সঙ্কট সৃষ্টির জন্য কুষ্টিয়ার রশিদ এগ্রো ফুড প্রডাক্ট লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী আব্দুর রশিদ ও নওগাঁর বেলকন গ্রুপের বেলকন প্রাইভেট লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী বেলাল হোসেনের নামে মামলা করা হয়েছে। একই কারণে বাজারে চাল সরবরাহকারী আরো দুটি করপোরেট প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ ও বাংলাদেশ এডিবল অয়েল লিমিটেডের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
অন্যদিকে আটা-ময়দার বাজারেও সঙ্কট তৈরির অভিযোগে সিটি গ্রুপের নামে পৃথক মামলা করেছে প্রতিযোগিতা কমিশন। ডিমের বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরির অভিযোগে প্যারাগন পোলট্রি লিমিটেড, কাজী ফার্মস গ্রুপ ও ডিম ব্যবসায়ী আড়তদার বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি আমানত উল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া মুরগির বাজারে সঙ্কট সৃষ্টির অভিযোগে প্যারাগন পোলট্রি লিমিটেড ও কাজী ফার্মস গ্রুপের নামে দুটি আলাদা মামলা হয়েছে। এদিকে বাজারে কাপড় কাচা, সুগন্ধী ও গুঁড়া সাবানের মতো নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরির অভিযোগে ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের নামে মামলা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রতিযোগিতা কমিশন আইনের ১৫ ও ১৬ ধারা অনুযায়ী এসব মামলা হয়েছে। ধারা ১৫তে বলা হয়েছে, বাজারে প্রভাব বিস্তার করে একপক্ষীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি করলে তারা শাস্তির আওতায় আসবে। আর ধারা ১৬তে উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো পণ্যের বাজারজাত বা উৎপাদনে শীর্ষে থাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে পণ্যের দামে কারসাজি করলে সেই অপরাধও শাস্তিযোগ্য।
উল্লেখ্য, কয়েক মাস ধরে দেশে চাল, তেল, আটা, ডিম, মুরগি, সাবান, ডিটারজেন্ট ও টুথপেস্টের বাজারে অস্থিরতা দেখা গেছে। এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম সময় সময়ে অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর নিয়মিত বাজার তদারকির পাশাপাশি এসব পণ্যের উৎপাদনকারী ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে সভা করেছে, যেখানে অস্বাভাবিকভাবে মূল্যবৃদ্ধির অভিযোগ ওঠে।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেন, যারা বাজারে অস্থিরতা তৈরির জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিদের ডাকা হয়। সেখানে বলা হয়, বিভিন্ন অজুহাতে সাবান ও ডিটারজেন্টের দাম ৫০ ভাগেরও বেশি বাড়ানো হয়েছে। অন্যদিকে, ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে এসব পণ্যের দাম ৮০ শতাংশের ওপরে বেড়েছে। ভোক্তা অধিদফতর ডিমের বাজারে কারসাজিতে জড়িত সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদনও পাঠিয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা