২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর সাথে বৈঠক

রিজার্ভ কমার কারণ জানতে চায় বিশ্বব্যাংক

-

রিজার্ভের পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৩৭ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। প্রতি মাসে ৮ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসেবে মজুদ এ বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে সাড়ে চার মাসের বেশি আমদানি খরচ মেটানো সম্ভব। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে বাংলাদেশ কী ভাবছে, সামনে এটা বাড়বে না কমবে তা জানতে চেয়েছে বিশ্বব্যাংক। রিজার্ভ কমার কারণও বিশ্বব্যাংক জানতে চেয়েছে বলে জানালেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক আমাদের বাজেট সাপোর্ট দিচ্ছে। এটা দিতে গিয়ে তারা আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা জানতে চেয়েছে। আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির নানা উদ্যোগের পরেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমছে না।
আগারগাঁওস্থ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে তার দফতরে প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলমের সাথে বৈঠক করেছে বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিনিধিদল। এতে নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়ার রিজিওনাল ডিরেক্টর ম্যাথিউ ভারগিস। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
ড. শামসুল আলম বলেন, বৈদেশিক রিজার্ভ নিয়ে আমরা কী ভাবছি, এটা বাড়বে না কমবে তা জানতে চেয়েছে বিশ্বব্যাংক। সব থেকে বেশি জানতে চেয়েছে ক্ষুদ্র অর্থনীতি কোন অবস্থায় আছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আমরা কী কী পদক্ষেপ নিয়েছি। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির সাথে সাথে রিজার্ভ যে কমলো এটা কমার কারণটা কী? এটা কিভাবে উঠাতে পারব এই বিষয়ে সংস্থাটি জানতে চেয়েছে। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি কিভাবে কমাতে পারব তাও জানতে চেয়েছে বিশ্বব্যাংক। তিনি বলেন, আগামী দিনগুলোতে বাজেট ও পরিকল্পনার সমন্বয়টা হচ্ছে কিনা, প্রকল্প প্রণয়নে কিভাবে সময়টা কমিয়ে আনতে পারি, প্রকল্প প্রণয়নে শৃঙ্খলা ফেরানোর বিষয়ে বিশ্বব্যাংক জানতে চেয়েছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের মূল্যস্ফীতি যতটা বৃদ্ধির কথা ছিল ততটা বাড়েনি। খাদ্যপণ্য বেশি বাড়েনি। মূল্যস্ফীতি কমাতে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। অনেক আমদানি কমিয়েছি। বিশেষ করে বৈদেশিক মুদ্রার যে ব্যবধান ব্যালেন্স অব পেমেন্টের ঘাটতি তৈরি হয়েছিল। এটা মেটাতেই রিজার্ভে হাত দিতে হয়েছে। চলতি বছরের জুলাই থেকে ভালো হচ্ছে। দুই মাসে ৩৫ শতাংশ হারে এক্সপোর্ট বেড়েছে। রেমিট্যান্স অফিসিয়াল লাইনে ভালো হচ্ছে। প্রতি মাসে দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার মতো রেমিট্যান্স পাচ্ছি। একসাথে দুই বিলিয়ন ডলার কখনো পায়নি। আমদানি কমছে কিন্তু রফতানি বাড়ছে।


ড. আলম বলেন, অর্থনীতি ও সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় আমরা স্বস্তির দিকে যাচ্ছি। এক্সচেঞ্জ রেট বাজারের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। বৈদেশিক মুদ্রার বাজারও স্থিতিশীল হবে। রিজার্ভ আর কমবে না। উৎপাদনশীল কোনো খাত ব্যাহত হয়নি। কৃষি ও শিল্পে সমানতালে উৎপাদন হচ্ছে। উৎপাদন ব্যবস্থা ঠিক আছে। বাইরে মূল্যস্ফীতি বেশি বলেই আমাদের এখানে বেড়েছে। দেশের পুরো অর্থনীতি আমাদের আয়ত্তের মধ্যে আছে। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক জানতে চেয়েছে বাজেটে প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় কী করেছি, কিভাবে প্রকল্পে খরচ কমিয়ে সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন করা যায়। আমরা এই বিষয়ে কাজ করছি। গ্রিন ক্লাইমেট ফাইন্যান্সিং গ্রোথে জোর দেবে বাংলাদেশ। ডেল্টাপ্ল্যানও গ্রিন গ্রোথের একটা অংশ। রেভিনিউ ১৬ শতাংশ বেড়েছে সামনে আরো বাড়বে। আমরা ভ্যাট আইনও সংস্কার করছি। তবে এসব বিষয়ে বিশ্বব্যাংক মৃদুভাবে জানতে চেয়েছে, শর্তের কিছু বলেনি সংস্থাটি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংকের প্রতিশ্রুতি দেয়া ২৫ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা ছাড় করার আগে তারা বেশ কিছু বিষয় জানতে চেয়েছে। এর মধ্যে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি, রিজার্ভের অবস্থা, মূল্যস্ফীতি, ভ্যাট আইন সংস্কার, সিপিটিইউকে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথোরিটি করার অগ্রগতি এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীর গতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। এর উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন থেকে কমে গেছে এটা চ্যালেঞ্জ। কিন্তু আমাদের রফতানি বাড়ছে ২৫ শতাংশ হারে। আমদানি বাড়ছে ২৩ শতাংশ হারে। এক্ষেত্রে আমদানির রফতানি বাড়ছে। গত এক মাসে রেমিট্যান্স এসেছে দুই বিলিয়ন ডলার। ফলে আমরা এখন স্বস্তিদায়ক অবস্থায় আছি। রিজার্ভের ওপর চাপ কমবে। আমাদের বিনিময়ের মূল্য স্থিতিশীল আছে কোথায় উৎপাদন ব্যাহত হয়নি। তিনি আরো বলেন, মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিতে বাইরের প্রভাব পড়েছে। আশা করছি আগামীতে তা কমে আসবে। অর্থনীতি আমাদের আয়ত্তে আছে, তবে রিজার্ভ ধরে রাখতে আমাদের বাজেট সকহায়তা প্রয়োজন। প্রচুর বৈদেশিক ঋণ এবং সরাসরি বিনিয়োগ দরকার।
সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের গতি প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, মেগা প্রকল্পসহ দেশের সব প্রকেল্পের গতি বৃদ্ধির প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। আমরা গ্রিন গ্রোথে গুরুত্ব দিচ্ছি। তবে ব্যবস্থাপনার অদক্ষতাই প্রকল্প বাস্তবায়নে বড় চ্যালেঞ্জ। এ ক্ষেত্রে উন্নয়ন করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং নিজস্ব গ্যাস অনুসন্ধানে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন মো: মামুন-আল-রশীদ, পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য (সচিব) ড. কাওসার আহমেদ প্রমুখ।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
বছরে ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলার জলবায়ু অর্থায়নের দাবি বাংলাদেশ অরবিসের সাথে কাজ করতে আগ্রহী : অধ্যাপক ইউনূস ঢাবি সিন্ডিকেটে এখনো বহাল আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা হাসিনা বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করতে দিগন্ত টেলিভিশনসহ অসংখ্য গণমাধ্যম বন্ধ করেছে : ফখরুল শীত শুরু হচ্ছে তবু কমেনি ডেঙ্গুর প্রকোপ ব্যয়বহুল তদন্তেও শনাক্ত হয়নি লাশটি কার ‘রহস্যজনক’ কারণে নেয়া হয়নি ডিএনএ নমুনা নবনির্মিত ওয়ামি কমপ্লেক্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন যুদ্ধবিরতির মার্কিন চেষ্টার মধ্যে লেবাননে ইসরাইলি হামলায় চিকিৎসাকর্মী নিহত অস্বস্তিতে ক্রেতারা : কমিয়ে দিতে হচ্ছে কেনাকাটা গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৪৪ হাজার ছাড়াল আমরা মানুষের সম্মিলিত প্রজ্ঞাকে সম্মান করি

সকল