ডলারের দাম আরো বাড়ল বাড়ছে আমদানি ব্যয়
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০
আমদানি ডলারের দাম আরো বেড়ে গেছে। বেড়ে গেছে আন্তঃব্যাংকে ডলারের গড় দাম। গতকাল আগের দিনের চেয়ে আন্তঃব্যাংকে ডলারের গড় মূল্য ৭৫ পয়সা বেড়ে হয়েছে ১০৬ টাকা ৯০ পয়সা, যেখানে আগের দিন ছিল ১০৬ টাকা ১৫ পয়সা। ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, এ দর বাড়তেই থাকবে। ডলারের চাহিদা ও জোগানের মধ্যে পার্থক্য কমে আসতে সময় লাগবে। এ কারণেই শিগগিরই ডলারের মূল্য নিয়ন্ত্রণে আসছে না মনে করা হচ্ছে। এ দিকে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় পণ্যের আমদানি ব্যয়ও বেড়ে যাচ্ছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে মূল্যস্ফীতিতে।
গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে আন্তঃব্যাংক ডলারের ক্রয়মূল্য প্রকাশ করা হয়েছে ১০২ টাকা ৩৭ পয়সা, যা আগের দিন ছিল ১০১ টাকা ৬৭ পয়সা। তবে এ মূল্য ব্যাংকগুলোর। কেন্দ্রীয় ব্যাংক গতকাল ৪ কোটি ডলার বিক্রি করেছে ৯৬ টাকা মূল্যে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর আন্তঃব্যাংক দর নির্ধারণ করবে না। ব্যাংকগুলোকেই নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে। ব্যাংকগুলো যে দরে লেনদেন করবে ওই দরই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে দরে ডলার লেনদেন করবে তা ব্যাংকগুলোর নিজস্ব দর। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার নিজস্ব দরেই ডলার বিক্রি করবে।
এ দিকে গতকাল বুধবার দুপুরে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এবং সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাকিদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। বাজারের চাহিদা সরবরাহের ভিত্তিতে ডলারসহ অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার নির্ধারিত হবে। তবে ব্যাংক ঋণ ও আমানতের সুদহারে যে সীমা আরোপ করা আছে, তা আপাতত তোলার কথা ভাবছে না সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার অর্থই হবে ডলারের মূল্য আরো বেড়ে যাবে। কারণ প্রতিবেশী দেশসহ প্রায় সব দেশেই ডলারের মূল্য বেড়ে যাচ্ছে। এর প্রভাব দেশিয় বাজারে পড়বে। ডলারের দাম বাড়ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আন্তঃব্যাংকে ডলারের মূল্য ব্যাংকগুলোর ওপর ছেড়ে দেয়ায় এক দিনের ব্যবধানে ৭৫ পয়সা বেড়েছে। ডলারের মূল্য বৃদ্ধির এ ধারা শিগগিরই কমবে না। কারণ, ব্যাংকগুলোর যে হারে চাহিদা বাড়ছে, ওইহারে সরবরাহ বাড়ছে না। যদিও রেমিট্যান্সের সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। নির্ধারণ করা হয়েছে রফতানি আয়ের ডলার মূল্য। তবে এ মূল্য ব্যাংকগুলো কত দিন ধরে রাখতে পারবে সেটাই দেখার বিষয়। কারণ, গত সপ্তাহে যেখানে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করা হয়েছে প্রতি ডলার ১১০ টাকা থেকে ১১৫ টাকা পর্যন্ত। সেখানে ১০৮ টাকা নির্ধারণ করায় কাক্সিক্ষত হারে রেমিট্যান্স আসবে না বলে মনে করা হচ্ছে। আবার রফতানি আয় ৯৯ টাকা নির্ধারণ করায় ব্যবসায়ীরাও এটা কিভাবে সরবরাহ করবে সেটাও দেখার বিষয়। কারণ পণ্য আমদানি ব্যয় মেটাতে ব্যবসায়ীদের বেশি মূল্য ব্যয় করতে হচ্ছে। সেখানে বেশি মূল্যের পণ্য রফতানি করে উৎপাদিত পণ্য বিক্রির অর্থ কম মূল্যে কতদিন বিক্রি করতে পারবেন এটাই দেখার বিষয়। এ মূল্যও ব্যাংকগুলো ধরে রাখতে পারবে না বলে মনে করা হচ্ছে। আর এটা হলে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় মূল্য আরো বেড়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহ থেকেই বোঝা যাবে বৈদেশিক মুদ্রার বাজার কোন অবস্থানে থাকে। বর্তমানে ব্যাংকাররা বিগত পাঁচ কার্যদিবসের রেমিট্যান্স, রফতানি নগদায়ন ও আন্তঃব্যাংক দর গড় করে নতুন গড় মূল্য নির্ধারণ করছে। এর সাথে এক টাকা যুক্ত করে ব্যাংকগুলো লেনদেন করছে।
এ দিকে গতকালও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, টাকা ও ডলারের বিনিময়মূল্য ব্যাংকগুলো নির্ধারণ করেছে। জোগান ও চাহিদা এবং বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) দামের ভিত্তিতে ডলারের এই দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক দৈনন্দিন ভিত্তিতে ডলার কেনাবেচার মধ্যে নেই। তবে বাজার বিবেচনায় প্রয়োজন হলে কেনাবেচা করবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাংকগুলো যে দামে ডলার কেনাবেচা করবে, সেটিই হবে আন্তঃব্যাংক দাম।
সেটাই ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে, তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই দামে বিক্রি করবে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিক্রি করবে তার নিজস্ব মূল্যে। গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার রিজার্ভ থেকে প্রতি ডলার বিক্রি করেছে ৯৬ টাকা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা