২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বিনা টেন্ডারে ৪ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানি হচ্ছে

-

বিনা টেন্ডারে বা সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে চার লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ভারতীয় একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ৫০ হাজার মেট্রিকটন নন-বাসমতী চাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
একই সাথে বিনা টেন্ডারে একাধিক প্রস্তাবে সোয়া দুই কোটি লিটার সয়াবিন তেল, ১৫ হাজার মেট্রিকটন মসুর ডাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। এগুলোসহ ১৫টি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে ব্যয় হবে চার হাজার ৪৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এর বাইরে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল কর্তৃক ‘পরিচয়’ প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে পরিষেবার মূল্য ও বণ্টনপদ্ধতি নির্ধারণের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
সচিবালয়ে গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়াল সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো: আব্দুল বারিক এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) পৃথক পাঁচটি স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে দুই কোটি ২৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল এবং পৃথক তিনটি স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে ১৫ হাজার মেট্রিকটন মসুর ডাল কেনার প্রস্তাবেও অনুমোদন দেয়া হয়েছে।


সয়াবিন তেল কেনার পাঁচ প্রস্তাবের মধ্যে- সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড ৫৫ লাখ লিটার, সিটি এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকে ৫৫ লাখ লিটার, মেঘনা এডিবল অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড থেকে ৫৫ লাখ লিটার এবং উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে একই প্রতিষ্ঠান থেকে ৩০ লাখ লিটার কেনা হবে। সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে বসুন্ধরা মাল্টি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড থেকে ৩০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে।
টিসিবি কর্তৃক পাঁচ হাজার মেট্রিকটন করে মসুর ডাল কেনার তিন প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে- প্রতি কেজি ব্লু স্কাই এন্টারপ্রাইজ থেকে পাঁচ হাজার মেট্রিকটন; চট্টগ্রামের মাসুদ অ্যান্ড ব্রাদার্স থেকে পাঁচ হাজার মেট্রিকটন এবং চট্টগ্রামের রুবি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড থেকে পাঁচ হাজার মেট্রিকটন মসুর ডাল কেনা হবে।
অতিরিক্ত সচিব জানান, এ ছাড়া খাদ্য অধিদফতর কর্তৃক ভারতের মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড থেকে ৫০ হাজার মেট্রিকটন নন-বাসমতী সিদ্ধ চাল আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ২০৮ কোটি ৫৭ লাখ ৭২ হাজার ৫০০ টাকা।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি জানান, ক্রয় কমিটির বৈঠকের আগে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে রফতানিকারক দেশ থেকে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে চার লাখ মেট্রিকটন চাল আমদানির নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া জরুরি ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে পাঁচ লাখ মেট্রিকটন চাল আমদানির ক্ষেত্রে দরপত্র দাখিলের সময়সীমা কমানো হয়েছে। দরপত্র দাখিলের সময়সীমা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে দাখিল করতে হবে। বর্তমানে এই সময়সীমা ৪২ নির্ধারিত রয়েছে। খাদ্য অধিদফতর এ চাল আমদানি করবে।


অতিরিক্ত সচিব জানান, ক্রয় কমিটিতে অনুমোদিত অন্যান্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে- ১৫১ কোটি ৩৯ লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয়ে ফ্লাড অ্যান্ড রিভারব্যাংক ইরোশন রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের একটি পূর্তকাজের ঠিকাদার নিয়োগ (এ কাজটি করবে যৌথভাবে সিআইএল ও হংজিয়াং)। ৯২৫ কোটি ৩৫ লাখ ৭২ হাজার টাকা ব্যয়ে সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের একটি পূর্তকাজের ঠিকাদার নিয়োগ (এ কাজটি করবে যৌথভাবে চীনা প্রতিষ্ঠান এলআরবিসি ও দেশীয় প্রতিষ্ঠান এমআইএল)। এক হাজার ৩৯৪ কোটি ৬৬ লাখ ৬৪ হাজার টাকা ব্যয়ে একই প্রকল্পের আরেকটি পূর্তকাজের ঠিকাদার নিয়োগ (এ কাজটি করবে যৌথভাবে চীনা প্রতিষ্ঠান জেডজেডএইচই ও দেশীয় প্রতিষ্ঠান এমআইএল)। ৩৮৬ কোটি ১৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকা ব্যয়ে বিএডিসি কর্তৃক কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন থেকে তৃতীয় লটে ৫০ হাজার মেট্রিকটন মিউরেট-অব-পটাশ (এমওপি) সার আমদানি; ২৯৬ কোটি ৯৩ লাখ ৬২ হাজার টাকা ব্যয়ে বিএডিসি কর্তৃক মরক্কোর ওসিপি এসএ থেকে অষ্টম লটে ৪০ হাজার মেট্রিকটন ডিএপি সার আমদানির একটি প্রস্তাব রয়েছে।
তিনি জানান, এ ছাড়া বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ কর্তৃক শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কে এবং গজারিয়া মুন্সীগঞ্জ সড়কে মেঘনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণে নিয়োজিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের একটি ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ১০৩ কোটি ৪৬ হাজার টাকা ব্যয় বাড়ছে।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement