২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব সোমবার পর্যন্ত মুলতবি

-

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে আলোচনায় সোমবার পর্যন্ত পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অধিবেশন স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অধিবেশনে স্পিকার আসাদ কায়সার এই অধিবেশন স্থগিতের ঘোষণা দেন। এর আগে স্থানীয় সময় শুক্রবার বেলা ১১টায় অধিবেশন শুরু হয়। পূর্বনির্ধারিত এই অধিবেশনে কুরআন তেলওয়াতের পর ধর্মমন্ত্রী নুরুল হক কাদরি ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির মরহুম সদস্য খায়াল জামান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট রফিক তারারের জন্য উপস্থিত সদস্যদের নিয়ে দোয়া করেন। এরপর স্পিকার আসাদ কায়সার বলেন, জাতীয় পরিষদের কোনো সদস্যের মৃত্যু হলে পার্লামেন্টের রীতি অনুযায়ী অধিবেশন মুলতবি করতে হয়। আগামী সোমবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেন তিনি।
এর আগে রোববার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সেক্রেটারিয়েট থেকে এই অধিবেশনের ঘোষণা করা হয়। গত ৮ মার্চ পাকিস্তানের সংবিধানের ৫৪ ধারার অধীনে বিরোধী দলগুলোর সম্মিলিত এক প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রতি অনাস্থা ভোটের জন্য ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি সেক্রেটারিয়েটে প্রস্তাব জমা দেয়। সংবিধানের ৫৪ ধারা অনুসারে, ২৫ শতাংশ সদস্যের স্বাক্ষরযুক্ত কোনো প্রস্তাব যদি জমা দেয় হয় তবে স্পিকারকে ১৪ দিনের মধ্যে ওই বিষয়ে অধিবেশন আহ্বান করতে হয়। এই ধারা অনুসারে সোমবার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অধিবেশনের আহ্বানের শেষ দিন ছিল।
তবে ২২ মার্চ থেকে জাতীয় পরিষদে ওআইসির দুই দিনব্যাপী পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন শুরু হওয়ায় তা আর হয়নি। এমন অবস্থায় গতকাল অধিবেশন ডাকেন স্পিকার। এ অধিবেশনে ক্ষমতাসীন দল পিটিআইয়ের নেতা শাহ মাহমুদ কোরেশি, শিরিন মাজারি, আসাদ উমর ও আলি মুহাম্মদ খান অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় পরিষদের বিরোধীদলীয় নেতা শাহবাজ শরিফ, পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি ও পিপিপির কো-চেয়ারম্যান আসিফ আলি জারদারিসহ বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ বিরোধীদলীয় নেতাকেও অধিবেশনে অংশ নিতে দেখা যায়। অধিবেশনের আগে বিরোধী দলগুলোর নেতারা নিজেদের মধ্যে বৈঠকও করেছেন। পিপিপির বরাতে ডন জানিয়েছে, বৈঠকে আইনপ্রণেতাদের প্রতি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার জাতীয় পরিষদ সচিবালয় থেকে এ অধিবেশনের জন্য ১৫ দফার আলোচ্যসূচি দেয়া হয়। এ সূচিতে ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপনের বিষয়টিও উল্লেখ করা ছিল। তবে আলোচ্যসূচিতে থাকার পরও অধিবেশনে আদৌ আলোচনার জন্য অনাস্থা প্রস্তাবটি উত্থাপন হবে কি না, তা নিয়ে আগে থেকেই সংশয় ছিল। ধারণা করা হচ্ছিল, জাতীয় পরিষদ সদস্য খায়াল জামানের মৃত্যুর পর আয়োজিত অধিবেশনের প্রথম দিনটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় চলবে না। পার্লামেন্টের বিধি অনুযায়ী, পরিষদের কোনো সদস্যের মৃত্যু হলে প্রথম দিনের অধিবেশনটি তার জন্য মাগফিরাতের দুয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয়ে যায়।
গুঞ্জন ছিল, জাতীয় পরিষদ স্পিকার ৩০ অথবা ৩১ মার্চ পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি করতে পারেন। অবশ্য তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী ডনকে বলেছিলেন, জাতীয় পরিষদের অধিবেশন মুলতবি ঘোষণার কোনো পরিকল্পনা নেই। অধিবেশন শুরুর আগে জাতীয় পরিষদের বিরোধীদলীয় নেতা শাহবাজ শরিফ বলেন, এ অধিবেশনেই যেন অনাস্থা প্রস্তাব তোলা হয়, সে চেষ্টা চালাবে বিরোধী জোটগুলো। তবে প্রস্তাব উত্থাপিত না হলে তারা তাদের নিজেদের মধ্য আলোচনা করবে। পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, ৩৪২ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় পরিষদে উত্থাপিত অনাস্থা প্রস্তাব পাসের জন্য প্রয়োজন ১৭২ ভোটের। সম্প্রতি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও কয়েকজন মন্ত্রী অভিযোগ করেছেন অনাস্থা ভোটকে সামনে রেখে বিরোধী দলগুলো বাণিজ্য শুরু করেছে। অর্থের বিনিময়ে ইমরানের নিজ দল পিটিআইয়ের আইনপ্রণেতাদের কিনে নেয়ার চেষ্টা করছে তারা।


আরো সংবাদ



premium cement