২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

তৃতীয় শিরোপা কুমিল্লার

শিরোপা জয়ের আনন্দে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের দুই ক্রিকেটার -

লড়াইটা ছিল দুই দলের দুই কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন ও মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের মধ্যেও। উভয়ই দেশের শীর্ষস্থানীয় কোচ। তাদের ক্রিকেট-মস্তিষ্ক ব্যবহার করে সাফল্য তুলে আনেন ক্রিকেটাররা। সুজন ফরচুন বরিশালের কোচ, আর সালাউদ্দিন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। বিপিএলে দু’জনই সফল। ফাইনালের মঞ্চে পরিসংখ্যানে অনেকটাই এগিয়ে সুজন। কোচ হিসেবে চারবার ফাইনাল খেলেছেন। ২০১৩ সালে চট্টগ্রাম কিংসকে নিয়েছিলেন প্রথম ফাইনালে। এরপর ঢাকা ডায়নামাইটসের সাথে টানা তিনবার ফাইনাল দেখেছেন- ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে। যদিও আগের চার ফাইনালে ট্রফি জিততে পেরেছেন মাত্র একবার। ২০১৬ বিপিএলে শিরোপা জিতলেও পরের দুইবার রানার্সআপ হয় সুজনের দল।
অন্য দিকে সালাউদ্দিন তিনবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ফাইনালে তুলেছেন। আগের দুইবারই শিরোপা জিতেছেন। ২০১৫ সালে মাশরাফি মর্তুজার নেতৃত্বে এরপর ২০১৮ সালে আবারো সাফল্য পায়। ২০১৮ সালে ফাইনালে লড়াই হয়েছিল সুজন-সালাউদ্দিনের। সেবার সুজনকে হারিয়ে দেন সালাউদ্দিন। এবারো তাই হলো। বিপিএল অষ্টম আসরের ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে সুনিল নারিনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ওভারে ৯ উইকেটে ১৫১ রান করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। জবাবে ফরচুন বরিশাল ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫০ রানে থামলে হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বরিশালের বিপক্ষে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। অষ্টম আসরে এ নিয়ে মাত্র চারবার টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছে ভিন্ন দলের অধিনায়করা। লিটন দাসকে নিয়ে কুমিল্লার ইনিংস শুরু করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সুনিল নারিন। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ১৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি করা নারিন গতকাল অর্ধশতক করলেন ১৬ বলে। ২৬ বলে পাঁচটি করে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারিতে ৫৭ রান করে আউট হন। বরিশালের স্পিনার আফগানিস্তানের মুজিব উর রহমানের করা ইনিংসের প্রথম ওভারে ও শফিকুলের করা দ্বিতীয় ওভারে সমান ১৮ করে ৩৬ রান নেন নারিন। তৃতীয় ওভারে সাকিব প্রথম পাঁচ ডেলিভারিতে ৪ রান দেন। তবে শেষ বলে লিটনকে (৪) বোল্ড করেন সাকিব। পঞ্চম ওভারে ২টি চারে টি-২০ ক্যারিয়ারে ১১তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন নারিন। ছক্কায় পঞ্চম ওভার শুরু করলেও তৃতীয় বলে তাকে থামান পেসার মেহেদি হাসান রানা।
নারিনের বিদায়ে জ¦লে ওঠে বরিশালের বোলাররা। ৯৫ রানের মধ্যে কুমিল্লার ষষ্ঠ উইকেট তুলে নেন বরিশালের দুই বিদেশী মুজিব ও ব্রাভো। ৮ রান করে রানআউট হন মাহমুদুল হাসান জয়। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ফাফ ডু-প্লেসিসকে ৪ রানে আউট করেন মুজিব। আর সাতে নামা আরিফুলকে রানের খাতা খোলার আগেই দারুণ এক গুগলিতে বোল্ড করেন মুজিব। ১১তম ওভারে ষষ্ঠ উইকেট পতনে ব্যাকফুটে চলে যায় কুমিল্লা। এমন অবস্থায় উইকেট বাঁচিয়ে খেলার দিকে মনোযোগী হন কুমিল্লার ইংলিশ ক্রিকেটার মঈন আলি ও পেসার আবু হায়দার। টেস্ট মেজাজেই ব্যাট করেছেন এ জুটি। আরিফুলের বিদায়ের পর, পরের ৩৯ বলে রান ওঠে ৩১। ১৮তম ওভারে ১৫ এবং ব্র্রাভোর ১৯তম ওভারে আসে ৭ রান। শেষ ওভারের প্রথম বলে সাকিবের দুর্দান্ত থ্রোতে রানআউট হন মঈন। ৩২ বলে ৩৮ রান করেন তিনি। তৃতীয় বলে আবু হায়দারকে ও চতুর্থ বলে শহিদুল ইসলামকে থামিয়ে হ্যাটট্টিকের সম্ভাবনা জাগান পেসার শফিকুল। কিন্তু পঞ্চম বলে রান না পেলেও, শেষ বলে বাই থেকে ১ রান পায় কুমিল্লা। শেষ ওভারে ৩ রান দেন শফিকুল। আবু হায়দার ১৯ রান করেন। মুজিব ও শফিকুল ২টি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট নেন সাকিব, ব্রাভো ও রানা।
জবাবে খেলতে নেমে শুরুতেই সম্ভাবনাময় মুনিম শাহরিয়ারকে (০) হারায় বরিশাল। পরের চিত্রটা ভিন্ন। ক্রিস গেইল ধারার বিপরীতে টেস্ট মেজাজে থাকলেও ক্রিজে ঝড় তোলেন সৈকত আলী। কুমিল্লার বোলারদের তুলোধুনো করে ৩৪ বলে ১১টি চার ও একটি ছক্কায় ৫৮ রান করে তানভীরের বলে ইমরুলকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন। দলীয় রান তখন ৯.৪ ওভারে ৭৯। তখনো এক প্রান্তে অবিচল গেইল। শেষ দিকে কিছুটা হাতখুলে খেলে এক চার ও দুই ছক্কায় করেন ৩১ বলে ৩৩ রান। তারই স্বদেশী নারিনের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন। সাকিব এসে সবার আশার মৃত্যু ঘটান। অবশ্য এ ক্ষেত্রে সাকিবের ব্যাটিংয়ের চেয়ে বাহবা পেলেন মোস্তাফিজুর রহমান। তার দুর্দান্ত ক্যাচে সাকিব বিদায় নেন মাত্র ৭ রানে। এরপর সোহান ১৩ বলে ১৪ করে রানআউটের শিকার। ৫ উইকেটে ১৩৪ রান বরিশালের।
শেষ তিন ওভারে বরিশালের জয়ের জন্য দরকার ১৮ রান। উইকেটে নাজমুল ও ডোয়াইন ব্রাভো। নারিনের শেষ ওভারের শুরুতেই ধাক্কা। প্রথম বলেই এলবিডব্লিউ ডোয়াইন ব্রাভো। ১৩৪ রানে ৬ উইকেট হারায় বরিশাল। ১৭ বলে দরকার ১৮ রান। টানা দু’টি ডট। মোস্তাফিজের বলে আউট শান্ত। ১০ বলে দরকার ১৬ রান, হাতে ৩ উইকেট। ১৩৬ রানে ৭ উইকেট হারাল বরিশাল। বোলিংয়ে এলেন শহীদুল। প্রথম বলে ডট, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে এক রান করে দুই রান। ৩ বলে দরকার ৮। ওয়াইড ও ক্যাচ ড্রপে এলো ৩ রান। শেষ বলে রানআউট মুজিব। আট উইকেটে ১৫০ রানে থামে বরিশাল। ফলে এক রানের জয় নিয়ে গগনবিদারী আওয়াজে চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স : ১৫১/৯, ২০ ওভার (নারিন ৫৭, মঈন ৩৮, মুজিব ২/২৭)।
ফরচুন বরিশাল : ১৫০/৮ (সৈকত ৫৮, গেইল ৩৩, নারিন ২/১৫)
ফল : কুমিল্লা ১ রানে জয়ী।

 


আরো সংবাদ



premium cement
রাজধানীতে সংঘর্ষে ২ যুবক নিহত জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের বীরত্বগাথা তুলে ধরবেন ড. ইউনূস কুড়িগ্রামের উলিপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু তোফাজ্জল হত্যা : ঢাবির ৬ শিক্ষার্থীর দায় স্বীকার কুমিল্লা-১০ বিনির্মাণে আমাদেরকে কাজ করতে হবে : ইয়াছিন আরাফাত উন্নয়নের নামে দুর্নীতির মহোৎসবে মেতেছিল আ’লীগ : হামিদ আজাদ ভাইকে হত্যা করাতে ১৪ মাসের ষড়যন্ত্র ভান্ডালজুড়ি শোধনাগার প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে ঢাবি ও জাবিতে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে খুলনায় শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সাংবাদিক রনো ও তার পরিবার চট্টগ্রাম পানগাঁও নৌরুট জনপ্রিয় করার উদ্যোগ

সকল