স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা নেই গণপরিবহনে
ঠাসাঠাসি করে নেয়া হচ্ছে যাত্রী; মাস্ক পরছে না চালক হেলপার- আমিনুল ইসলাম
- ১৮ আগস্ট ২০২১, ০২:১৪, আপডেট: ১৮ আগস্ট ২০২১, ০৮:৫০
স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করা হচ্ছে না গণপরিবহনে। শুধু রাজধানী ঢাকায় চলাচলরত সিটি সার্ভিসেই নয়, দূরপাল্লার বাসগুলোতেও মানা হচ্ছে না বিধিনিষেধ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে যাত্রীদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতা। কঠোর লকডাউন শিথিল করে স্বাস্থ্যবিধি পালনসহ কয়েক শর্তে বাস চলাচলের অনুমতি দেয় সরকার। বাসে চড়ার আগে যাত্রীদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেয়ার কথা থাকলেও কোনো বাসেই স্যানিটাইজার দেখা যায়নি। যাত্রী নেমে যাওয়ার পর আসনগুলোতে জীবাণুনাশক ছিটানোর কথা থাকলেও সেটিও করা হচ্ছে না। এমনকি চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারদেরও মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে না। এ দিকে রাজধানীতে চলাচলরত বাসে দাঁড়িয়ে যাত্রী নেয়া নিষেধ থাকলেও প্রতিনিয়ত ঠাসাঠাসি করে যাত্রী তোলা হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার নিয়ে দুই দিন রাজধানীসহ দূরপাল্লার কয়েকটি বাসে উঠে এমন চিত্র দেখা গেছে।
পিরোজপুর থেকে ছেড়ে আসা কমফোর্ট লাইন পরিবহনের যাত্রী নুর আলম জানান, এসব বাসে দাঁড়িয়ে যাত্রী না নেয়া হলেও স্যানিটাইজার পাওয়া যায়নি। বাসের দরজার কাছে নো মাস্ক নো এন্ট্রি লেখা স্টিকার সাঁটানো থাকলেও চালক হেলপার সুপারভাইজারই মাস্ক পরছে না। তারা বলছেন, ৮-৯ ঘণ্টার যাত্রাপথে এত সময় মাস্ক পরে থাকা যায় না। একাধারে মাস্ক পরে থাকলে তাদের নিঃশ^াস নিতে কষ্ট হয়। তিনি বলেন, শুধু বাসের স্টাফই নয়, অনেক যাত্রীও মাস্ক পারছেন না। তারাও নাকি দীর্ঘ সময় মাস্ক পরলে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। একই অবস্থা দেখা গেছে, সেবা গ্রীনলাইন পরিবহন, হানিফ পরিবহন, ঈগল পরিবহনসহ কয়েক কোম্পানির বেশ কিছু বাসে।
গতকাল রাজধানীর মিরপুর, মতিঝিল, দৈনিক বাংলা, পল্টন, মালিবাগ, রামপুরা, বাসাবো এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি পরিবহনেই রয়েছে সিটের অতিরিক্ত যাত্রী। ভাড়া কম না নিলেও দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানো বন্ধ করেননি চালক-হেলপাররা। বিশেষ করে সকাল ও বিকেলে অফিস শুরু ও ছুটির সময় এমনচিত্র সবার চোখে পড়ছে। বেশিরভাগ বাসেই গাদাগাদি করেই যাত্রী ওঠানো হচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করলে চালকের সহকারী বলছেন, ‘পছন্দ না হলে নেমে যেতে পারেন।’ এতে বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের।
এ বিষয়ে কথা হয় বিপ্লব সমদ্দারের সাথে যিনি নূর এ মক্কা পরিবহনে করে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় যাচ্ছিলেন। মাস্ক না পরার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মাস্ক পরে বেশিক্ষণ থাকতে পারি না। মনে হয় শ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যাবো। তবে কাছে মাস্ক আছে।’ মুহূর্তেই পকেট থেকে বের করে দেখালেন।
বিহঙ্গ পরিবহনের যাত্রী সুলায়মান বলেন, অফিসে যাওয়ার জন্য দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু বাসের আসন ফাঁকা ছিল না বলে ৩০ মিনিট কোনো বাসে উঠতে পারেননি। বাধ্য হয়ে জোর করে এই বাসে উঠে পড়েছেন। কোনো আসন ফাঁকা না থাকায় দাঁড়িয়েই যেতে হচ্ছে। তিনি বলেন, এটা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি জেনেও তিনি বাধ্য হয়েছেন। মক্কা পরিবহনের যাত্রী এহসান বলেন, বাসে আসন পূর্ণ হওয়ার পরেও হেলপার দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছে দেখে তিনি প্রতিবাদ করেন। এতে হেলপার ক্ষেপে গিয়ে বলেন, ‘এভাবে গেলে যাবেন, না হলে নেমে যান’। তবে রাজধানীতে চলাচলরত বাস যাত্রীদের একটি বড় অংশই এখন মাস্ক ব্যবহার করছেন। এ বিষয়ে কথা হয় ওই বাসেরই আরেক যাত্রী আনোয়ারের সাথে। তিনি বলেন, ‘কোভিড পরিস্থিতি এখনো ভালো অবস্থায় আসেনি। এ অবস্থায় আমরা সচেতন না হলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।’
নিয়ম না মেনে অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া হচ্ছে কেন জানতে চাইলে রাইদা পরিবহনের চালক রিপন জানান, অফিস টাইমে যাত্রীদের চাপ থাকে অনেক বেশি। সব যাত্রীই বাসে উঠতে চায়, আমার কী করার আছে?
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা