২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

চলতি মাসে আবারো বন্যার আশঙ্কা

-

চলতি আগস্ট মাসে দেশে আবারো বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র তাদের পূর্বাভাসে জানিয়েছে, চলতি মাসের শেষদিকে মৌসুমি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। একই পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। আগস্ট মাসের দীর্ঘমেয়াদি আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে এ মাসের শেষ নাগাদ ফের স্বল্পমেয়াদি বন্যা হতে পারে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বর্ষাকাল শুরু হতেই এবার বেশি বৃষ্টি হচ্ছে। ধারাবাহিক পূর্বাভাস বলছে, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে আরেক দফা বন্যা হতে পারে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী, এখনকার বন্যাগুলো উত্তরাঞ্চল ও চট্টগ্রামের দিকে বিস্তৃত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
তাদের মতে, চলতি মাসে বাংলাদেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দু’টি বর্ষাকালীন লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার মধ্যে একটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। দেশের উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে উন্নতি হয়ে মধ্যভাগ নাগাদ স্বাভাবিক হয়ে আসতে পারে।
এ দিকে জাতিসঙ্ঘ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশবিষয়ক সংস্থা নাসার সহায়তায় বাংলাদেশের বন্যায় আক্রান্ত এলাকাগুলোর ওপর একটি মানচিত্র প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বন্যা কবে কোন এলাকায় ছড়াবে এবং কত দিন থাকতে পারে, তার একটি ধারণা দেয়া হয়েছে। ওই প্রতিবেদন ধরে জাতিসঙ্ঘের বিশেষজ্ঞদল মনে করছে, বাংলাদেশের বন্যা দীর্ঘস্থায়ী রূপ নিতে যাচ্ছে, যা শেষ হতে সময় লাগতে পারে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যা ও পানি ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম জানান, ভারতসহ পুরো দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে মৌসুমি বায়ু শক্তিশালী ও সক্রিয় রয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের উজানে ভারতীয় অংশে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। সামনের দিনে এ বৃষ্টি আরো বাড়তে পারে। ফলে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দফায় দফায় বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানিয়েছেন, এবার বর্ষার আগেই মে ও জুনের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এই বৃষ্টি আগামী অক্টোবর পর্যন্ত থেমে থেমে চলবে। ফলে চলতি মাসে ও আগামী মাসে আরেক দফা বন্যার ধাক্কা সামলাতে হতে পারে, যার বি¯ৃÍতি বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি জানান, জুন থেকে অক্টোবর বানের সময়। এ সময় অভ্যন্তরীণ বৃষ্টিতে বন্যা হয় না। পাহাড়ি ঢলে দেশে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
অপর এক পূর্বাভাসে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলেছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনার পানি ৭ আগস্টের মধ্যে কমতে পারে। আগামী সাত দিনে কুড়িগ্রাম, বগুড়া, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, টাঙ্গাইল ও মানিকগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি বাড়তে পারে। রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ পয়েন্ট, মুন্সীগঞ্জ জেলার ভাগ্যকূল পয়েন্ট এবং শরীয়তপুর জেলার সুরেশ্বর পয়েন্টে আগামী সাত দিন পানি ক্রমান্বয়ে কমতে পারে, যার ফলে আগামী সাত দিনে এসব জেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে।
অন্য দিকে ঢাকার চার পাশের নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে জানিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর পানি আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত স্থিতিশীল থাকতে পারে। তারপর কমে বিপদসীমার নিচে চলে আসতে পারে, যার ফলে জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি আগামী চার দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement