২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ঝুঁকি নিয়েই ঢাকায় ফিরছে মানুষ

ঈদ উদযাপন শেষে রাজধানীতে ফিরছে মানুষ। মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়াঘাট থেকে তোলা ছবি : নয়া দিগন্ত -

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে যে যেভাবে পারছে এখন ঢাকায় আসছে। কোনো স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই রাস্তায় চলছে তারা। তারা কোনো কিছুই তোয়াক্কা করছে না। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এতে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। এমনতিইে প্রতিদিনই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আর এভাবে রাস্তায় অবাধে মানুষ চললে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় সেটাই দেখার বিষয়। এদিকে রাজধানীতেও মানুষের অবাধ চলাফেরা লক্ষ করা গেছে। কোনো নিয়মনীতিই মানুষ মানছে না।
ব্যাংকের লেনদেনসহ অনেক কিছুই স্বাভাবিক হচ্ছে আগামীকাল থেকে। যে কারণে দীর্ঘদিন অবরুদ্ধ থেকে মানুষ এখন কর্মস্থলে আসার চেষ্টা করছে। সে কারণে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও মানুষ শহরের দিকে ছুটছে। তাদের এখন টার্গেট কর্মস্থলে আসা। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় মানুষ এখন বিকল্পভাবে সড়ক-মহাসড়ক পাড়ি দিচ্ছে। যাদের ব্যক্তিগত গাড়ি নেই কিংবা ভাড়ায় চালিত প্রাইভেটকার বা মাইক্রোবাস ভাড়া করার টাকা নেই তারা অনেকটা অনিশ্চয়তার মধ্যেই বাড়ি ছাড়ছে। পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার এক বাসিন্দা সুজন গতকাল জানালেন, ১১ বার গাড়ি পরিবর্তন করে ভাণ্ডারিয়া থেকে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে এসেছেন। সেখান থেকে ফেরিতে চড়ে নদীর এপাড়ে এসে একটি অটোরিকশায় চড়ে কেরানীগঞ্জের কদমতলী এসেছেন। সেখান থেকে ইজিবাইকে নয়াবাজার ব্রিজ পর্যন্ত এসেছেন। সিএনজি অটোরিকশায় ব্রিজ পার হয়ে রিকশায় মালিবাগের বাসায় পৌঁছেছেন।
কাইউম নামের অপর এক পথচারী মোবাইল ফোনে জানিয়েছেন, পথে অনেক ঝক্কিঝামেলা। সবচেয়ে বড় অসুবিধা হয়েছে ফেরিতে চড়তে। কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া ফেরিঘাটে হাজার হাজার মানুষ। কেউ কেউ অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করেও ঢাকায় আসছে। মাইক্রোবাসে করে বরিশাল থেকে গাদাগাদি করে মানুষ ঢাকার দিকে আসছে। ফেরিতে মানুষের ভিড়ে মনে হয়েছে একজন আরেকজনের গায়ের উপর উঠে বসছে। তবুও মানুষ আসছে।
একই অবস্থা দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাটে। মানুষ মানুষের উপর চড়ে বসছে ফেরির মধ্যে। অনেকেই ট্রলারে করে বিকল্পভাবে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে। তবে গতকাল বিকেলের দিকে আবহাওয়া খারাপ থাকায় অনেকেই অপেক্ষা করেছে ফেরিতে চড়ার জন্য। কাঁঠালবাড়ি ঘাটের ম্যানেজার মো: আলম সাংবাদিকদের বলেছেন, মানুষ কোনো নির্দেশনাই মানছে না। ফেরিতে যাত্রী ওঠার পর এক ইঞ্চি জায়গাও ফাঁকা থাকছে না। মানুষকে কোনো কিছু বলেই শোনানো যাচ্ছে না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া দিয়ে ঢাকায় এসেছেন সেন্টু নামের এক ব্যক্তি। তিনি জানালেন, কখনো রিকশায়, কখনো হেঁটে মহাসড়ক অতিক্রম করেছেন। মাঝে মাঝে পুলিশের জেরার মুখে পড়েছেন। তিনি বলেন, এভাবে শতশত মানুষ ঢাকায় আসছে।
রোড সেইফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেছেন, নিয়মনীতি না মানায় ক্রমেই ঝুঁকি বাড়ছে। পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে।
রাজধানীরও বিভিন্ন এলাকা বিশেষ করে পাড়া মহল্লায় মানুষ হুমড়ি খেয়ে রাস্তায় নামছে। কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছে না। উল্টো যারা স্বাস্থ্যবিধি মানতে চাইছে তারা পড়ছে বিপাকে। এ নিয়ে কোথাও কোথাও ঝগড়া-বিবাদও হচ্ছে বলে জানা গেছে।


আরো সংবাদ



premium cement