জনদুর্ভোগ কমাতে আগে স্থানীয় নির্বাচন দিন
- চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
- ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:১৪
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান স্থানীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, এখন কোনো পৌরসভা ওয়ার্ডে মেয়র কাউন্সিলর নেই, একজন প্রশাসক দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা নির্বাচিত নন। তাই জনগণের কোনো দায় তাদের ওপর নেই। সিটি করপোরেশন পৌরসভাগুলো এখন অভিভাবক শূন্য। তাই জনদুর্ভোগ কমাতে আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিতে হবে। স্থানীয় নির্বাচন হলেই জনগণের এই দুর্ভোগ কাটবে।
তারপর অবশ্যই জাতীয় নির্বাচনও দিতে হবে। কিন্তু জাতীয় নির্বাচনের আগে জনগণ চায় মৌলিক কিছু সংস্কার।
গতকাল চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে পথসভায় তিনি আরো বলেন, আপনি যখন একটি পণ্যবাহী গাড়ি থেকে চাঁদাবাজি করেন তখন এর বোঝা গিয়ে পরে ১৮ কোটি মানুষের ঘাড়ে। একজন ভিক্ষা করা মানুষের উপরও পরে, পরিচ্ছন্নতাকর্মীর উপর পড়ে। চাঁদাবাজি বন্ধ করেন। বর্তমান পরিস্থিতিকে আল্লাহ তায়ালার নেয়ামত হিসেবে মনে করুন। আল্লাহ তাহলে সবার ভাগ্য সুপ্রসন্ন করে দেবে, দেশবাসীও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। তিনি বলেন, কোনো কোনো দলের নেতারা বলেন সংস্কার বড় কথা নয়, মানুষ কিভাবে খেয়ে পরে বাঁচবে- সেটা বড় কথা। আমি বলছি মানুষের খেয়ে পরে বেঁচে থাকার জন্য সংস্কার প্রয়োজন, নির্বাচনে কালো টাকা ও পেশিশক্তি প্রদর্শন বন্ধের জন্যই সংস্কার প্রয়োজন। ১৮ বছরের উপরে প্রত্যেকে যাতে নিজের ভোট নিজে দিতে পারে তার জন্য সংস্কার প্রয়োজন, প্রবাসীরা যারা জুলাই বিপ্লবের অন্যতম কারিগর তাদের ভোটের নিশ্চয়তা দেয়ার জন্যই সংস্কার প্রয়োজন।
এই সংস্কারগুলো করার জন্য যতটুকু সময় প্রয়োজন ততটুকু সময়ের পরেই নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। গরিমসি করে সময় নষ্ট করাও কাম্য নয়।
অনুষ্ঠানে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট মো: মাসুদুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে ও জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়ার পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি এ টি এম মা’ছুম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সহকারী সেক্রেটারি কামাল উদ্দিন, সাবেক জেলা আমির মাওলানা আবদুর রহিম পাটওয়ারী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান, বক্তব্য রাখেন- জেলা সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক আবুল হোসাইন জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, মুহাদ্দিস আবু নসর আশরাফী, শহর আমির অ্যাডভোকেট মো: শাহজাহান খান, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা সভাপতি অধ্যাপক রুহুল আমিন, ফরিদগঞ্জ আমীর ইউনুস হেলাল, শাহরাস্তি আমির মোস্তাফা কামাল, হাজীগঞ্জ উপজেলা কলিম উল্লাহ, কচুয়া উপজেলা আমির অ্যাডভোকেট আবু তাহের মিসবাহ, পৌরসভা আমির আবুল হাসানাত, ছাত্রশিবিরের শহর সভাপতি মোহররম আলী, জেলা সভাপতি ইব্রাহীম খলিল।
পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করেন সদর উপজেলা আমির মাওলানা আফসার উদ্দিন মিয়াজীসহ দলের সিনিয়র নেতারা।
পেশিশক্তির প্রদর্শন বন্ধের জন্য আরেকটা মৌলিক দাবি আমরা প্রকাশ করেছি। সেটি হচ্ছে, আমাদের ভোটের আনুপাতিক হারে নির্বাচন। যেই দল যত পারসেন্ট ভোট পাবে, সেই দল সংসদে ততটা আসন পাবে। এতে করে প্রত্যেক দলের মেধাবী নেতাদের আসন নিশ্চিত হবে।
অনেক ছোট দল আছে যাদের মধ্যে অনেক মেধাবী ও দেশপ্রেমিক নেতা আছে এতে করে তারাও সংসদে যেতে পারবে। একজন ৪২ পার্সেন্ট ভোট পেয়ে নির্বাচিত হবেন, আর কেউ ৪১ শতাংশ ভোট পেয়ে হেরে যাবেন ওই হেরে যাওয়া লোকের ভোটাররা বলতে পারবে না যে আমার ভোট নষ্ট হয়েছে।
এই নির্বাচন চালু হলে গডফাদাররা নির্বাচনে আসবে না। কারণ সে জানে না সে কত নম্বরে আছে। আপনারা বলবেন তাহলে এলাকার উন্নয়ন কে দেখবে? এলাকার উন্নয়ন দেখবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। এটা তাদের কাজ। এটা এমপিদের কাজ না। এমপিদের কাজ আইন প্রণয়ন করা। দুনিয়ার সব দেশে উন্নয়নের কাজ করে স্থানীয় সরকার। আর আমাদের দেশে তাদেরকে বঞ্চিত করে এটা নিয়ে নেয় এমপি এবং মন্ত্রীরা। এটা অন্যায় এটা সংবিধান বিরোধী।
আজহারকে মুক্তি না দিলে ৩ কোটি মানুষকে জেলে নিতে হবে
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, আমি বলেছি ২৫ তারিখের মধ্যে এ টি এম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দেয়া না হলে আমি স্বেচ্ছায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হবো। যত দিন আজহার ভাই কারাগারে থাকবে তত দিন আমিও কারাগারে থাকব। আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দেয়ার এক দিন পর আমি কারাগার থেকে বের হবো। জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারের মুক্তি এখন সারা দেশের জন দাবিতে পরিণত হয়েছে।
ডা: শফিকুর রহমান আরো বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার ছয় মাস অতিবাহিত হলেও তার ফ্যাসিবাদের বোঝা বয়ে চলেছেন জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম। দীর্ঘ ১৩টি বছর তিনি কারাগারে বন্দিজীবন কাটিয়ে আসছেন। এ সময় তার প্রিয় সহধর্মিণীকে হারান তিনি। আমরা তার এখনই মুক্তি দাবি করছি। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আজহারকে মুক্তি দেয়া না হলে স্বেচ্ছায় নিজেকে কারাবাসের পুনঃঘোষণা দিয়ে বলেন, না হয় সাড়ে তিন কোটি মানুষকে জেলে নিতে প্রস্তুত হয়ে যান।
গতকাল শনিবার সকালে লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত গণ জমায়েতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। জেলা জামায়াত আমির মাস্টার রুহুল আমিন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মা’ছুম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মো: আতিকুর রহমান, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম, ওষুধ শিল্প সমিতির সেক্রেটারি ডা: আনোয়ারুল আজিম, কুমিল্লা অঞ্চল পরিচালক কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, অধ্যক্ষ লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, মাওলানা আলা উদ্দিন, লক্ষ্মীপুর জেলা নায়েবে আমির এ আর হাফিজ উল্যাহ, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান।
জেলা সেক্রেটারি ফারুক হোসাইন নুরনবীর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন- শহীদ ডাক্তার ফয়েজ আহমেদের ছেলে ডা: হাসানুল বান্না, ফেনী জেলা আমির মুফতি আবদুল হান্নান, নোয়াখালী জেলা নায়েবে আমির মাওলানা সাইয়েদ আহমদ, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট নাজির আহমদ, এ আর হাফিজ উল্যাহ, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান, হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা অ্যাডভোকেট প্রিয় লাল, লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের সহ-সেক্রেটারি মাওলানা নাসির উদ্দীন, অ্যাডভোকেট মহসিন কবির মুরাদ, আবুল ফারাহ নিশান, শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল্লাহ আল মামুন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সমন্বয়ক আরমান হোসেন, শিবিরের শহর সভাপতি ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা