২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯ ফাল্গুন ১৪৩০, ২২ শাবান ১৪৪৬
`

নিপাহর মতো বিপজ্জনক ক্যাম্পহিল ভাইরাস আবিষ্কার

-

নতুন একটি ভয়ানক ভাইরাস আবিষ্কার হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামায়। এটা নিপাহ ভাইরাসের মতোই বিপজ্জনক। নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্তদের ৭০ শতাংশের বেশি মৃত্যু হয়ে থাকে। এই ভাইরাসটির নাম রাখা হয়েছে ‘ক্যাম্পহিল ভাইরাস’। হেনিপাভাইরাস পরিবারের একটি ভাইরাস এটা। ২০২১ সালে ভাইরাসটি আবিষ্কৃত হলেও মাত্র গেল সপ্তাহে এটা নিয়ে মিডিয়ায় প্রথম রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে এটা ছিল গবেষণা জার্নালে। বাদুরবাহিত নিপাহ ভাইরাসও একই পরিবারের। নিপাহ ভাইরাসটি খুবই বিপজ্জনক, কিন্তু এই ভাইরাসটি ক্ষেত্রবিশেষে আরো বেশি বিপজ্জনক। ক্যাম্পহিল ভাইরাসের আবিষ্কার এটাই প্রথম। এটা এখনো বন্যপ্রাণীর দেহে থাকলেও যেকোনো সময় প্রাণী থেকে মানুষের দেহে চলে আসতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা হুঁশিয়ার করছেন। তারা বলছেন, এই ভাইরাসটি আগে কখনো মানুষকে আক্রান্ত করেনি। বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত জানেন না, এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হলে মানুষের মধ্যে কী কী লক্ষণ দেখা দিতে পারে এবং এর মৃত্যু হার কত। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ক্যাম্পহিল ভাইরাসের নিকটতম আত্মীয় ‘দ্য লাঙ্গিয়া ভাইরাস’। এই ভাইরাসটি চীনে ইঁদুর জাতীয় প্রাণী থেকে মানুষে স্থানান্তরিত হয়েছে। চীনের অভিজ্ঞতা থেকে বিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘দ্য লাঙ্গিয়া’ ভাইরাসে মানুষ আক্রান্ত হলে জ্বর, অবসন্নতা, কাশি, পেশীতে ব্যথা, লিভার অকার্যকর হওয়া এবং কিডনি নষ্ট হয়ে থাকে।

কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটির ড. রাই পেরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা অঙ্গরাজ্যে ইঁদুরজাতীয় প্রাণীর মধ্যে ক্যাম্পহিল ভাইরাসের উপস্থিতি প্রমাণ করেন। তিনি বলেন, ‘ইঁদুর জাতীয় প্রাণী থেকে ক্যাম্পহিল ভাইরাস বা হেনিপাভাইরাস মানুষের মধ্যে স্থানান্তর ঘটতে পারে। উত্তর আমেরিকায় এই ভাইরাস আবিষ্কার একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এই ভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়তে পারে।’ ইঁদুর জাতীয় প্রাণীর কিডনির ক্ষতি করে থাকে এই ভাইরাসটি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষ আক্রান্ত হলে মানুষের কিডনিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নতুন ভাইরাসের তালিকায় এই ক্যাম্পহিল ভাইরাসটিকেও স্থান দিয়েছে। এই ভাইরাসে উত্তর আমেরিকার উদ্বেগ বাড়াচ্ছে এবং ভবিষ্যতে এটা ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে ড. পেরি বলেন, ‘এই ভাইরাসটি নিয়ে আরো গবেষণা হওয়া উচিৎ। ভাইরাসটির কারণে অন্যান্য অঞ্চলে কঠিন রোগে শুধু মানুষই নয়, প্রাণীদের মৃত্যু হতে পারে।’

একই পরিবারের নিপাহ ভাইরাসে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ায় ৪০ থেকে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত মৃত্যু হচ্ছে। বাংলাদেশে মৃত্যুর হার ৭০ শতাংশের বেশি। নিপাহ ভাইরাসে নিউমোনিয়াসহ সর্দি ও শ্বাসতন্ত্রের রোগ হয়ে থাকে। এ ছাড়াও নিপাহ ভাইরাসে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্রেইনে ও স্পাইনাল কর্ডে জ্বলা-পোড়া দেখা দেয়, রোগীরা সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলে, তাদের খিঁচুনি হয়ে থাকে। আরো উল্লেখ্য, নিপাহ ভাইরাসের সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। নিপাহর মতো আলোচ্য ক্যাম্পহিল ভাইরাসটি অস্ট্রেলিয়ায় পাওয়া গিয়েছে বাদুরের দেহে কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে এটার পোষক দেহ পরিবর্তন হয়ে গেছে এবং ইঁদুরজাতীয় প্রাণীতে পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ক্যাম্পহিল ভাইরাস বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী দেহে টিকে থাকার জন্য বিকশিত হয়ে গেছে। ডেইলে মেইল গত ৩ ফেব্রুয়ারি এটা নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট করেছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement