২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯ ফাল্গুন ১৪৩০, ২২ শাবান ১৪৪৬
`

সহজ জয়ে শুরু দক্ষিণ আফ্রিকার

-


আফগানিস্তান বলেই অনেকের ধারণা ছিল, অঘটন ঘটাতে পারে। কারণ এই আফগানদের কাছেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে ২-১-এ ওয়ানডে সিরিজে হেরেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে বড় মঞ্চে ঠিকই স্বরূপে প্রোটিয়ারা। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সাবেক চ্যাম্পিয়নরা জয় দিয়েই শুরু করেছে এবারের আসর। গ্রুপ ‘বি’তে গতকাল তারা ১০৭ রানে সহজেই হারিয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে।
হাই স্কোরিং উইকেটগুলোর একটি করাচি ন্যাশনাল স্টেডিয়াম। এই পিচে বরাবরের মতোই এবারো বয়ে গেল রানের বন্যা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে গতকাল ৩১৬ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এতে বড় অবদান রাখেন ওপেনার রায়ান রিকেল্টন। এই উইকেটরক্ষক ব্যাপার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রথম খেলতে নেমেই উপহার দিলেন সেঞ্চুরি। তার সাথে আরো তিন ব্যাটারের হাফ সেঞ্চুরিতে বড় লক্ষ্য পায় টেম্বা বাভুমার দল। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে সব ক’টি উইকেট হারিয়ে ২০৮ রানে থেকে যায় আফগানদের ইনিংস।

বিশাল রানের পাহাড়কে তাড়া করতে নেমে দলীয় ১৬ রানেই প্রথম উইকেট হারায় আফগানিস্তান। লুঙ্গি এনগিডির বলে মাহরেজের হাতে ধরা পড়েন ১০ রান করা গুরবাজ। অপর ওপেনার ইব্রাহিম জাদরানও দলীয় ৩৮ ও ব্যক্তিগত ১৭ রানে ফেরেন রাবাদার বলে বোল্ড হয়ে। তিনে নামা সেদেকুল্লাহ আতাল রানআউটের শিকার। এরপর উইকেটে এসে দাঁড়াতেই পারেননি অধিনায়ক শাহিদিও। ৪ বল মোকাবেলায় রানের খাতা না খুলেই মুলডারের বলে বাভুমার হাতে ধরা পড়েন তিনি। উমরজাইয়ের ব্যাট থেকে আসে ১৮ রান। এরপর জনসেনের শিকার ৮ রান করা অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবি। গুলবাদিন নাইবকে ১৩ রানের বেশি করতে দেননি এনগিডি। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১৩ বলে ১৮ রান করেন রশিদ খান। ব্যাটারদের উইকেটে আসা যাওয়ার মাঝেও এক প্রান্ত আগলে থেকে ৯০ রানের ইনিংস খেলে শেষ উইকেট হিসেবে সাজঘরে ফেরেন রহমত শাহ। ৪৩.৩ ওভারেই অলআউট হয় আফগানিস্তান।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। উদ্বোধনী জুটিতে ২৮ রান যোগ করতেই টনি ডি জর্জিকে হারায় প্রোটিয়ারা। এরপর রিকেল্টনের সাথে যোগ দেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। দু’জনে মিলে গড়েন ১২৯ রানের জুটি। মোহাম্মদ নবির বলে সেদেকুল্লাহ আতালের ক্যাচে পরিণত হয়ে ৫৮ রানে বাভুমা ফিরলে ভাঙে জুটি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি পেতে রিকেল্টনের খেলতে হয় ১০১ বল। অবশ্য সেঞ্চুরি করার পর ব্যক্তিগত স্কোরে ৩ রান যোগ করেই সাজঘরে ফেরেন ২৯ ছুঁই ছুঁই এই ব্যাটার।

আইসিসি টুর্নামেন্টে প্রথম খেলতে নেমে উপলক্ষ রাঙিয়ে দেশের গ্রেটদের কাতারে নাম লেখালেন দক্ষিণ আফ্রিকার এই ওপেনার। ক্যারিয়ারের সপ্তম ওয়ানডেতে প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ পান তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শতক করা দক্ষিণ আফ্রিকার পঞ্চম ক্রিকেটার তিনি। আগের চার জন হলেন হার্শেল গিবস, গ্রায়েম স্মিথ, জ্যাক ক্যালিস ও হাশিম আমলা। রিকেল্টনের আগে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারদের মধ্যে আইসিসি টুর্নামেন্টে অভিষেকে সেঞ্চুরি করেছিলেন গ্যারি কারস্টেন। ১৯৯৬ বিশ্বকাপে রাওয়ালপিন্ডিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে অপরাজিত ১৮৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। যা ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ডও।
ব্যাট হাতে এদিন ঝড় তুলেন রাসি ভ্যান ডার ডুসেন ও এইডেন মার্করামও। ৪৬ বলে ৫২ রানে নূর আহমেদের বলে হাসমতউল্লাহ শাহিদির তালুবন্দি হয়ে ডুসেন ফিরলেও পাঁচে নেমে মার্করাম ফিফটি করেন ৩৩ বলে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে দ্রুততম ফিফটি এটি। ২০০৯ সালে সেঞ্চুরিয়নে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪০ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়েছিলেন গ্রায়েম স্মিথ। শেষ পর্যন্ত ৩৬ বলে ৫২ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন এই ব্যাটার। আফগানদের হয়ে দু’টি উইকেট নেন মোহাম্মদ নবি। একটি উইকেট ঝুলিতে পুড়েন ফজলহক ফারুকি, আজমতউল্লাহ উমরজাই ও নূর আহমেদ।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement