ভারতের শক্তিমত্তা নিয়ে ভাবছেন না শান্ত
- জসিম উদ্দিন রানা
- ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:৫৫
নিরপেক্ষ ভেনু দুবাইয়ে আজ বিকেল ৩টায় ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মিশন শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। শক্তিমত্তায় বাংলাদেশের চেয়ে যোজন-যোজন এগিয়ে ভারত। তবে ছেড়ে কথা বলতে চাইবে না বাংলাদেশও। প্রতিপক্ষ নিয়ে আপাতত বেশি কিছু ভাবছেন না বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। গতকাল গণমাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রতিপক্ষ নিয়ে ভাবার চাইতে নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নজর দিচ্ছেন টাইগাররা। একই সঙ্গে মাঠেও শান্ত থাকতে চান শান্তবাহিনী। সরাসরি সম্প্রচার করবে টি-স্পোর্টস ও নাগরিক টিভি।
আইসিসি ও এসিসির শেষ কয়েকটি টুর্নামেন্টে দেখা গেছে বাংলাদেশ ও ভারত ম্যাচ নিয়ে বাড়তি উত্তেজনা। এশিয়া কাপের ফাইনাল, নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে ওই উত্তেজনা ছিল। ভারতের বাংলাদেশ সফর ঘিরে ছিল বাড়তি উন্মাদনা। ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ বেশ হাইপ পেয়েছিল। নিরপেক্ষ ভেনু ভারতের পাশাপাশি গ্যালারিতে বাংলাদেশের দর্শকও থাকবে। এ ছাড়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ নতুন উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে।
ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচের রোমাঞ্চের কথা স্বীকার করেছেন শান্ত। তার কথায়, ‘ভারত বাংলাদেশের ম্যাচের তো একটা রোমাঞ্চ থাকেই। আমার মনে হয় যে প্লেয়াররা এটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করে না। প্লেয়াররা নিজেদের পরিকল্পনা কীভাবে কাজে লাগাবে সেটা নিয়ে চিন্তা করে। আর মাঠে যত শান্ত থাকা যায় সেটা চেষ্টা করবে।’ সাম্প্রতিক সময়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স হতাশাজনক। সর্বশেষ ১২ ম্যাচের মধ্যে মাত্র ৪টিতে জিতেছে টাইগাররা। এমন রেকর্ড সাথে নিয়েই শিরোপা জয়ের লক্ষ্য শান্তদের। ভারতে ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর ৫০ ওভারের ক্রিকেটে জয়ের চেয়ে বেশি ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার কাছে ২-১ ব্যবধানে জয় ছাড়া, অন্য তিনটি দ্বিপক্ষীয় সিরিজে হেরেছে টাইগাররা। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়, যা ছিল টাইগারদের শেষ ওয়ানডে সিরিজ। ২০১৭ সালে সর্বশেষ ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেমিফাইনাল খেলেছে বাংলাদেশ। যা এখনও আইসিসির যেকোনো ইভেন্টে টাইগারদের সেরা ফলাফল হিসেবে বিবেচিত।
গত দুই মাসে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বাকি সাত দল যার যার মতো করে ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে, কিন্তু এ সময়ে ঘরের মাঠে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) নিয়ে ব্যস্ত ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। ভারতের মতো দলকে হারাতে হলে তিন বিভাগেই ভালো খেলতে হবে বাংলাদেশকে, এমনটাও মনে করিয়ে দিলেন শান্ত। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে একেবারেই ওয়ানডে খেলেনি টাইগাররা। এমনকি পাকিস্তান শাহীনসের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচেও হেরেছে তারা।
শান্ত বলেন, ‘আমার মনে হয় সব বিভাগেই আমাদের ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে.. ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং। কারণ সবশেষ কয়েক বছরে ওয়ানডেতে আমরা যেভাবে খেলছি, ভালো দল হিসেবেই খেলেছি। কন্ডিশন প্রায় একই। যেভাবে নিজেদের প্রস্তুত করেছি তাতে আমরা আত্মবিশ্বাসী। আগামীকালের (আজ) ম্যাচে ভালো কিছুর আশা করছি।’
বিশেষ করে টপ অর্ডারের ব্যাটারদের কাছ থেকে বড় ইনিংসের প্রত্যাশা করছেন শান্ত। ভারতকে হারাতে হলে স্কোরবোর্ডে বিশাল রানের বিকল্প দেখছেন না তিনি। ‘ওয়ানডেতে উইকেট যেরকম থাকবে আমরা ওরকমই খেলার চেষ্টা করব। আমার মনে হয় ওপরের দিকে যারা খেলে ওদের লম্বা ইনিংস খেলা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যখন আমরা উপরে ভালো শুরু করতে পারব তখন বড় রান করা সম্ভব। কালকে (আজ) আসলে উইকেট, কন্ডিশন দেখার পরই আমরা ওভাবে সিদ্ধান্ত নেবো। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের ওই ক্ষমতা আছে। আমাদের প্রস্তুতি অনুযায়ী আমরা ভালো অবস্থানে আছি।’
এ দিকে বাংলাদেশ-ভারত লড়াইয়ের ভেতরও থাকছে লড়াই। পাওয়ার প্লেতে হতে পারে রোহিত বনাম মোস্তাফিজের চ্যালেঞ্জ। রোহিত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরির পরের ম্যাচেই ব্যর্থ হন। অন্য দিকে, বাঁহাতি পেসারদের বিরুদ্ধে রোহিত বরাবরই কিছুটা সমস্যায় পড়েন। নতুন বলে সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেন মোস্তাফিজুর রহমান। ওয়ানডেতে ১০ ইনিংসে মোস্তাফিজ তিনবার রোহিতকে আউট করেছেন। এই কাটার মাস্টারের বিপক্ষে ১২৩ বলে ১৩০ রান করেছেন রোহিত।
বিরাট কোহলি সম্প্রতি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫২ রান করেছেন, তবে তার অফস্টাম্পের বাইরের বল খেলার দুর্বলতা স্পষ্ট। তাসকিন আহমেদ সেই দুর্বলতাকে কাজে লাগাতে পারেন। ওয়ানডেতে কোহলি চার ইনিংসে তাসকিনের মুখোমুখি হয়েছেন, যেখানে মাত্র ৩৫ রান করলেও একবার আউট হয়েছেন। ওয়ানডেতে তাসকিনের বলে কোহলি কখনো ছক্কা হাঁকাতে পারেননি।
ভারতের জন্য হার্দিক পান্ডিয়া ও মেহেদি হাসান মিরাজের চ্যালেঞ্জটাও আছে। হার্দিক ব্যাটিংয়ে নিচের দিকে ভরসার প্রতীক, আবার পেস আক্রমণেও গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের মিরাজ একই রকম ভূমিকা পালন করেন। ব্যাটিংয়ে দলের প্রয়োজনে রান করেন, আবার বোলিংয়েও কার্যকর।
ভারতের স্পিন আক্রমণের সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড় রবীন্দ্র জাদেজা। ধারাবাহিক লাইন-লেংথের কারণে বিপজ্জনক তিনি। মাঝের ওভারে তার বিপক্ষে বাংলাদেশের ভরসা হতে পারেন মুশফিকুর। স্পিন ভালো খেলার জন্য পরিচিত মুশফিকের দায়িত্ব থাকবে জাদেজার বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তোলা।
বাংলাদেশের ওপেনার সৌম্য সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারেন ভারতের পেসার মোহাম্মদ শামি। ২০২৩ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন তিনি। নতুন বলের সুইং সামলে শুরুতে উইকেট ধরে রাখতে পারলে সৌম্য বাংলাদেশের ইনিংসকে স্থিতিশীল করতে পারবেন, তা না হলে শামির আগ্রাসী বোলিং শুরুতেই বাংলাদেশকে চাপে ফেলে দিতে পারে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা