ভাষার দাবিতে প্রথম হরতাল
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:১৯
পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে ভূখণ্ড গত ব্যবধান যেমন ছিল তেমনি মানসিক দূরত্বও ছিল। শাসকগোষ্ঠী শুরু থেকেই যে উদারতার প্রয়োজন ছিল তা দেখাতে ব্যর্থ হয়। তাদের মানসিকতায় উপনিবেশিক আমলের ধ্যান-ধারণা স্পষ্ট ছিল। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী বাস করলেও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক আচরণ চলতে থাকে। রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নে পাকিস্তানি শাসকদের একচোখা মনোভাব স্বাভাবিকভাবেই সবাইকে ক্ষুব্ধ করে তোলে। ফলে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরই দূরদর্শী সম্পন্ন ব্যক্তিরা এর ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েন।
রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে হরতাল পালিত হয়। এটি ছিল পাকিস্তানোত্তর এ দেশে প্রথম হরতাল। তমদ্দুন মজলিস ও পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ যৌথভাবে এই হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করে এবং সমগ্র পূর্ববাংলায় সফলভাবে হরতাল পালিত হয়।
১৯৪৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তমদ্দুন মজলিস ও পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় ১১ মার্চ পূর্ববাংলায় হরতাল পালনের সিদ্ধান্ত হয়। ১১ মার্চ হরতালের দিন ‘বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করা হবে’ মর্মে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিনের সাথে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কর্মপরিষদের একটি লিখিত চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এটি ছিল ভাষা আন্দোলনের প্রথম বিজয়। ১৯৫২ সালের আগ পর্যন্ত প্রতি বছর ১১ মার্চকে ‘রাষ্ট্রভাষা দিবস’ হিসেবে পালন করা হতো।
কিন্তু খাজা নাজিমুদ্দিন ১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে এক জনসভায় ঘোষণা করেন ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’। ফলে ভাষা আন্দোলন আবার একটি নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করে। নতুন মাত্রা লাভ করে। শুরু হয় নতুন অধ্যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এই ঘোষণার প্রতিবাদে ধর্মঘট পালন করে। এই ঘোষণার এক মাসেরও কম সময়ে আন্দোলন চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে এবং ২১ ফেব্রুয়ারির বিয়োগান্তক ঘটনার মধ্য দিয়ে সাফল্য আসে।
৩০ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বানে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ৩১ জানুয়ারি ঢাকা বার লাইব্রেরিতে মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে সর্বদলীয় বৈঠক হয়। বৈঠকে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন পরিচালনার জন্য ৪০ সদস্যের একটি সর্বদলীয় কর্মপরিষদ গঠিত হয়। মাওলানা ভাসানী ছিলেন কমিটির আহ্বায়ক। অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন- আবুল হাশিম, শামসুল হক, আব্দুল গফুর, আবুল কাসেম, আতাউর রহমান খান, কামরুদ্দিন আহমদ, খয়রাত হোসেন, আনোয়ারা খাতুন, আলমাস আলী, আব্দুল আওয়াল, অলি আহাদ, শামছুল হক চৌধুরী, মোহাম্মদ তোয়াহা, সৈয়দ আব্দুর রহিম, খালেক নেওয়াজ খান, কাজী গোলাম মাহবুব, মির্জা গোলাম হাফিজ, হেদায়েত হোসেন চৌধুরী, আনোয়ারুল হক খান প্রমুখ। এই কর্মপরিষদের দিকনির্দেশনা ও পরিচালনায় বেগবান হয়ে ওঠে রাষ্ট্রভাষার আন্দোলন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা