০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৬ মাঘ ১৪৩১, ৯ শাবান ১৪৪৬
`

মধ্য ফেব্রুয়ারিতে রাজনৈতিক দলের সাথে বৈঠক করবে সরকার

নির্বাচন দীর্ঘায়িত করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই : আসিফ নজরুল
-

সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ নিয়ে মধ্য ফেব্রুয়ারি থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে বৈঠক করবে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজনৈতিক দলগুলো রাজি থাকলে আসন্ন রমজান মাসেও আলোচনা চলবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।
গত সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ৬ কমিশনের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশের পর এ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশন ছাড়া বাকি ৫টির প্রতিবেদনে ‘আশু করণীয়’ সুপারিশ রয়েছে। সংবিধান সংস্কারের প্রতিটি সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিকদলোর সাথে ঐকমত্যের প্রয়োজন হবে।
তিনি বলেন, ৬ সংস্কার কমিটি দুই হাজার সুপারিশ করেছে। কমিশনগুলোর সুপারিশের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় উল্লেখ রয়েছে, আশু করণীয়, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি করণীয়। দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশ পরবর্তী সরকার করবে। আশু করণীয়র সুপারিশগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচনের আগেই করা হবে। আর যেটা মধ্যমেয়াদি, সেটি নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলো কতটা করতে রাজি আছে।

আসিফ নজরুল বলেন, যে সংস্কারগুলো সবাই চায় এবং খুবই স্বাভাবিক সেগুলোর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার প্রয়োজন নেই। তবুও চাইলে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সেগুলো নিয়েও আলোচনা করা হবে। রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘ ৫৫ বছরে অনেক সংস্কার করেছে। আশু করণীয় করতে ছয় মাস লাগবে। আমার বিবেচনায় আশু করণীয়ের মধ্যে অন্তত ৫০ শতাংশ এক মাসের মধ্যে করা সম্ভব। নির্বাচন কমিশনের আশু সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রয়োজন হবে।
নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি এই সংশয় দূর হয় যে, এই সংস্কার করা হচ্ছে ক্ষমতায় থাকা দীর্ঘায়িত করার জন্য নয়, তাহলে বহু কিছু বাস্তবায়িত করা সম্ভব হবে। আমি নিশ্চিত করে বলতে চাই, এই সরকারের অযথা সময় ক্ষেপণ বা ক্ষমতায় থাকার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাষ্ট্র্র মেরামতের ফান্ডামেন্টাল শর্ত পূরণের জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে এই সংস্কারগুলোর মধ্যে যেগুলো অতি জরুরি সেগুলো করার সাথে সাথে নির্বাচনের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা চলে যেতে চাই। এখানে কোনো দ্বিধা-দ্বন্দ্বের অবকাশ নেই।

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারের সহনশীলতা, অবাধ মতপ্রকাশের পরিবেশ এবং গণতান্ত্রিক চর্চার ক্ষেত্রে সরকারের অসীম শ্রদ্ধাবোধের কারণে এগুলো হচ্ছে।
সংস্কারের বিষয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ঐকমত্য তৈরির প্রচেষ্টা চালানো হবে বলে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো অনেক সংস্কার নিজেরাও করেছে। গত ৫৫ বছরে তারা অনেক ভালো ভালো কাজ করেছেন; কিন্তু সমালোচনার সময় তা আমরা ভুলে যাই। রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকার থেকে সংসদীয় সরকার, ভ্যাট প্রচলন, ই-প্রযুক্তিরসহ অনেক কাজ করেছেন। সংস্কার প্রস্তাবের মূল সুর তিনদলীয় জোটের রূপরেখার মধ্যেও ছিল।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, আশা করব জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষগুলো প্রক্রিয়াটা বেগবানের চেষ্টা করবে। এটা আমাদের ঐক্যের দলিল, রাজনৈতিক দলিল; আইনি দলিল নয়।


আরো সংবাদ



premium cement