আগে জুলাই ২৪-এর বিচার, তার পর অন্য কাজ : ডা: শফিক
- কক্সবাজার অফিস
- ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:২৯
বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, ৫ আগস্টের পরও রাজনীতির সাথে দুর্বৃত্তপনা, চাঁদাবাজি দুর্নীতি বন্ধ হয়নি। বাংলাদেশে দুর্নীতি ও দুঃশাসন যতদিন থাকবে ততদিন জামায়াতকে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
গতকাল সকালে কক্সবাজার সরকারি কলেজ মাঠে জেলা জামায়াত আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জামায়াতের আমির বলেন, আওয়ামী লীগ আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীসহ জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হত্যা করা হয়েছে; কিন্তু একজন নেতাও বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যায়নি। শহীদদের আত্মার সাথে বেঈমানি করা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন ২৪-এর গণহত্যার বিচার হতে হবে।
প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করে সম্মানের সাথে বিদায় নেয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জামায়াত ইসলামীর আমির বলেন, জামায়াত রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে কাজ করবে। আগামী নির্বাচনে জামায়াতকে ক্ষমতায় আনতে জামায়াতের পক্ষে ভোট চান তিনি।
নিজ দলের প্রতি অবিচারের প্রসঙ্গ টেনে জামায়াতের আমির বলেন, আইনের অঙ্গনে এসে যারা বেআইনি কর্মকাণ্ড করেছেন, প্রধান বিচারপতির দরজায় এসে লাথি দিয়েছিলেন, আওয়ামী লীগ তাদের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বানিয়েছিলে। এদের কাছ থেকে বিচার পাওয়া যাবে না এটাই স্বাভাবিক। তাই অবিচারের শিকার হয়ে আমাদের ১১ জন কলিজার টুকরা শীর্ষ নেতা দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। তাদেরকে ঠাণ্ডা মাথায় বিচারের নামে হত্যা করা হয়েছে। আমরা প্রতিশোধে বিশ্বাস করি না, তবে আমরা অবশ্যই অপকর্মের বিচার চাই। আমাদের কথা স্পষ্ট। সবগুলো খুনের বিচার হতে হবে। বিশেষ করে ২৪-এর গণহত্যার বিচার অবশ্যই হতে হবে। আগে বিচার তারপর অন্য কাজ। এ বিচার না হলে শহীদের আত্মা কষ্ট পাবে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদের বক্তব্য প্রসঙ্গে পুলিশ বাহিনীকে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘পুলিশ ভাইদের বলছি বেনজিরের ফঁাঁদে পা দিবেন না।’
তিনি আরো বলেন, গত আওয়ামী আমলে সারা দেশে জামায়াতের সব অফিস বন্ধ, নিবন্ধন বাতিল, প্রতীক বাতিল করে সর্বশেষ দলকে নিষিদ্ধ করেছিল আওয়ামী লীগ। আল্লাহর অসীম রহমতে ৫ আগস্ট তারাই নিষিদ্ধ হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। এটাই আল্লাহর বিচার।
কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ নুর মোহাম্মদ আনোয়ারীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় অ্যাস্টিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি হামিদুর রহমান আযাদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ শাহজাহান, চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমির ও সাবেক এমপি আলহাজ শাহজাহান চৌধুরী, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আহসান উল্লাহ ও ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এনামুল হক মন্জু।
দীর্ঘ ১৭ বছর পর কক্সবাজারে বিশাল কর্মী সম্মেলনে একত্রিত হয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে জামায়াত-শিবিরের নেতা কর্মীরা। কর্মী সম্মেলন ঘিরে রঙিন ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণে সেজেছিল পুরো শহর। এ কর্মী সম্মেলনে জেলার ৪ সংসদীয় আসনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থীদের জয়ী করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হয়। জামায়াত নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে জনসমুদ্রে পরিণত হয় কক্সবাজার সরকারি কলেজ মাঠ প্রাঙ্গণ।
নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার করতে হবে : গোলাম পরওয়ার
নেত্রকোনা প্রতিনিধি জানান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন ‘সংস্কার ও নির্বাচনের প্রস্তুতি একসাথে চালাতে হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে স্বৈরাচার খুনি শেখ হাসিনা, তার দোসর ও অপরাধীদের বিচার করে তার পর নির্বাচন দিতে হবে।’ তিনি বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছরের মধ্যে কোনো নির্বাচন হয়নি, নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে, যা বিচারের নামে জুডিশিয়াল কিলিং ছাড়া আর কিছুই না। শেখ হাসিনা দেশকে ধ্বংস করে হাজার টাকা লুট করে শেষে গণবিক্ষোভের মুখে ভারতে পালিয়ে গেছেন। ভারতের আশ্রয়ে থেকে যা খুশি তা বলে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছেন। জামায়াতের মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদসহ ১৬৯১ জনকে হত্যা, ৬ শ’ জনকে অন্ধ এবং ২০ হাজারের অধিক ছাত্র-জনতাকে পঙ্গু করে দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এক সময় বিশে^র কোথাও আমাদের মর্যাদা ও সম্মান ছিল না। কিন্তু ইসলাম আমাদের সম্মানিত করেছে, বীরের জাতিতে পরিণত করেছে, ইসলাম আমাদের শাসক জাতিতে পরিণত করেছে। ইসলাম আমাদের গৌরান্বিত এবং মহিমান্বিত করেছে। তাই ইসলামের যে সৌন্দর্য এটাই বাংলাদেশের স্বপ্ন। গতকাল সকাল ১০টায় নেত্রকোনার ঐতিহাসিক মোক্তারপাড়া মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত এক কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথি বলেন।
স্মরণকালের বিশাল এ কর্মী সম্মেলনে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা ছাদেক আহমাদ হারিছের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার সেক্রেটারি ও নির্বাহী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও ময়মনসিংহ অঞ্চল পরিচালক ড. ছামিউল হক ফারুকী, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, নেত্রকোনা জেলা জামায়াতের সাবেক আমির মাওলানা এনামুল হক প্রমুখ।
আ’লীগের জঞ্জাল মুক্ত না করে জাতি নির্বাচন চায় না: অধ্যাপক মুজিব
নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জাতি শুধু একটা পতাকা পেয়েছে, নাগরিক স্বাধীনতা পায়নি। এ দেশের নাগরিকরা মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে ভাতের অধিকার, ভোটের অধিকার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে। কিন্তু স্বাধীনতা অর্জনের দাবিদারদের হাতে আমাদের অর্জিত স্বাধীনতা লুণ্ঠিত হয়েছে। যার কারণেই বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করে। এই স্বাধীনতা আর কাউকে নষ্ট করতে দেয়া হবে না। কারো বাপের সম্পত্তি হবে না বাংলাদেশের নতুন স্বাধীনতা। স্বাধীনতা অর্জনকারী এ দেশের ছাত্র-জনতাসহ সব ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিকে নিয়ে জামায়াতে ইসলামী নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়। গতকাল রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের ওয়ার্ড সভাপতি-সেক্রেটারি শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান আরো বলেন, আওয়ামী লীগের বিগত ১৭ বছরের জঞ্জাল মুক্ত না করে জাতি কোনো নির্বাচন চায় না। জঞ্জাল মুক্ত করে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার করার আগেই নির্বাচন দিলে, সেটি হবে একটি বিতর্কিত নির্বাচন। এ জন্য আগে জঞ্জাল মুক্ত করে প্রত্যাশিত সংস্কার করতে হবে। তবেই নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হবে।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো: নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত শিক্ষাশিবিরে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ আব্দুর রব। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আব্দুল মান্নান ও শামসুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার শেখ আল আমিন, অ্যাডভোকেট এস এম কামাল উদ্দিন, আব্দুস সালাম, অধ্যক্ষ নুর নবী মানিক, সৈয়দ সিরাজুল হক, কামরুল আহসান হাসান, শেখ শরিফ উদ্দিন, মাওলানা শরিফুল ইসলাম, মহানগরী প্রচার ও মিডিয়া সহকারী সম্পাদক আবদুস সাত্তার সুমন প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জামায়াতে ইসলামী ইতিবাচক ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে চায়। বিরোধিতা, প্রতিহিংসা, ক্ষোভের রাজনীতির কবর রচনা করতে চায়। জামায়াতে ইসলামী একটা নতুন ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এ ছাড়া কারাবন্দী জামায়াতের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানান।
গুলশানে সমাবেশ : জনগণ ভোট দিয়ে জামায়াতে ইসলামীকে ক্ষমতায় পাঠালে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নির্বিশেষে সব মানুষের অধিকার ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
রাজধানীর সরকারি কালাচাঁদপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে শুক্রবার সন্ধ্যায় গুলশান পূর্ব থানা জামায়াত আয়োজিত এক সহযোগী সদস্য সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। থানা আমির জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আবদুল মোতালেব মঈনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগরীর উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ফখরুদ্দীন মানিক, ইয়াছিন আরাফাত ও গুলশান জোনের সহকারী পরিচালক হেদায়েত উল্লাহ। উপস্থিত ছিলেন ভাটারা থানা আমির অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম, বনানী আমির মিজানুর রহমান, বসুন্ধরা আমির আবুল বাশার, গুলশান পশ্চিম আমির মাহমুদুর রহমান আজাদ ও ক্যান্টনমেন্ট আমির আব্দুস সাকী প্রমুখ। মহানগরীর কালচারাল একাডেমির উপস্থাপনায় এক ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের মাধ্যমে সমাবেশের কার্যক্রম শেষ হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা