০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১, ৮ শাবান ১৪৪৬
`
বাজার দর

বেড়েছে সয়াবিন তেলের সঙ্কট সামান্য কমলো চালের দাম

-

বাজারে সয়াবিন তেলের সঙ্কট কোনোভাবেই দূর হচ্ছে না। সরকারকে একধরনের চাপ দিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হলেও সঙ্কট কাটেনি নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটির। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অন্যান্য অন্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকলেও চাল ও তেল নিয়ে অস্থিরতা কাটছে না কোনোভাবেই।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, এখন সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে সয়াবিন তেলের দাম ও সরবরাহ সঙ্কট। দেড় মাস আগেও এ ধরনের সরবরাহ সঙ্কট তৈরি করেছিল কোম্পানিগুলো। এতে সরকার কেজিপ্রতি সয়াবিন তেলের দাম ৮ টাকা করে বাড়িয়ে দেয়। এরপর দু-এক সপ্তাহ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও দুই সপ্তাহ ধরে আবারো সঙ্কট তৈরি হয়েছে।
রাজধানীর মিরপুর-৬ বাজারে গতকাল ১০টি দোকান ঘুরে তিনটি দোকানে সয়াবিন তেল পাওয়া গেছে। সেখানে ইকবাল হোসেন নামে এক বিক্রেতা বলেন, কোম্পানি সরাসরি তেলের অর্ডার নিচ্ছে না। তাদের কিছু ডিলার এখন তেল বিক্রি করছে ব্ল্যাক মার্কেটের মতো নিজের দোকান থেকে। সেটিও আমাদের কাছে গায়ের রেটে বিক্রি করছে। এসব তেল নিজে পরিবহন খরচ দিয়ে দোকানে এনে বিক্রি করলে প্রতি লিটার তেলে দুই থেকে তিন টাকা দাম বেশি পড়বে। কিন্তু তিনি ক্রেতার কাছে বেশি দাম নিতে পারবেন না বলে সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধ রেখেছেন।
এ দিকে কিছু কোম্পানি তেলের সাথে অন্যান্য পণ্য কেনার শর্ত বেঁধে দিচ্ছে বলে খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন; অর্থাৎ কোম্পানির কাছ থেকে তেল নিতে গেলে বাধ্যতামূলকভাবে চাপাতা, আটা বা অন্য কোনো পণ্য অর্ডার দিতে হচ্ছে। এসএম ট্রেডার্সের মালিক আতিকুর রহমান বলেন বলেন, ডিলাররা পাইকারি পর্যায়ে তেলের দাম লিটারে প্রায় ৪ টাকা বেশি নিচ্ছেন। কিন্তু খুচরা ব্যবসায়ীরা ভোক্তার কাছ থেকে বোতলের গায়ে লেখা দামের চেয়ে বেশি নিতে পারছেন না। ফলে খুচরা ব্যবসায়ীরা মুনাফা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি বলেন, রমজান সামনে রেখে কোম্পানি এবং বড় বড় ডিলার-মজুদদাররা বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।

বাজারে চাহিদা অনুযায়ী তেল না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকে। আবদুর রশিদ নামের একজন ক্রেতা বলেন, দেশে অনেক কিছুর পরিবর্তন হলো, কিন্তু এই বাজার সিন্ডিকেটের কবল থেকে আমরা রক্ষা পেলাম না। পত্রপত্রিকায় দেখছি, সরকারও বলছে বাজারে পণ্যের কোনো সরবরাহ সঙ্কট নেই। কিন্তু বাজারে এলে চিত্রটা ভিন্ন। কেন এসব কোম্পানি বা মজুদদারদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর হতে পারিনি। এটি বাজারব্যবস্থা দুর্বলতা বলে তিনি মনে করেন।
এ দিকে দেশের চালের মোকামগুলোতে চালের দাম সামান্য কমেছে। যার প্রভাবে রাজধানীর কিছু পাইকারি চালের দোকানে চালের দাম কমতে দেখা গেছে। তবে খুচরায় সেভাবে দাম কমা শুরু হয়নি এখনো। বিক্রেতারা বলছেন, কয়েক দিনের মধ্যেই খুচরা পর্যায়েও চালের দাম কমবে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি বাড়ার কারণে মোকামগুলোতে চালের দাম কমতে শুরু করেছে। তবে গত চার-পাঁচ মাসে প্রতি কেজি চালের দাম ৪ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছিল; যা এখন এক-দুই টাকা করে কমছে।
রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। মাঝারি চাল ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা ও সরু চাল ৭২ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এ দিকে তেলের বাজারে যখন অস্থিরতা ঠিক সেই সময় সবজির বাজার এখনো নাগালের মধ্যে রয়েছে। বাজারে এখনো শীতকালীন সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় দামও অনেকটাই কম। ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে মিলছে নতুন আলু। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে। এ ছাড়া বেশির ভাগ সবজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা কেজির মধ্যে। এ ছাড়া ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতিটি ২০ থেকে ৩০ টাকা এবং লম্বা লাউ (শীতকালীন লাউ) প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকায় কেনা যাচ্ছে।
এ দিকে বাজারে মুরগির দাম এখনো চড়া। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা এবং সোনালি মুরগির কেজি মানভেদে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ডিমের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। খুচরায় ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি ডজন ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ দিকে রমজান সামনে রেখে ডাল ও ছোলার দামে তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। প্রতি কেজি ভালো মানের মসুর ডাল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা এবং ছোলা ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল