সৌদি আরবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা চান নেতানিয়াহু
- দ্য জেরুসালেম পোস্ট ও আলজাজিরা
- ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:২৪
ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে দেয়ার মতো যথেষ্ট জায়গা সৌদি আরবে আছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, সৌদি কর্তৃপক্ষ সৌদি আরবে একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারে। সেখানে তাদের অনেক ভূমি আছে।
ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে দৃঢ় সমর্থনের কথা জানিয়েছে সৌদি আরব। পাশাপাশি নিজেদের ভূমি থেকে তাদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টাকেও প্রত্যাখ্যান করছে দেশটি। সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠবে না।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এক প্রেস কনফারেন্সের পর সৌদির পক্ষ থেকে এমন খবর জানানো হয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের প্রতিবেশী দেশগুলোতে সরিয়ে নেয়ার পর তিনি চান গাজার নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে থাকবে ও এটিকে পনর্গঠন করা হবে।
ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পূর্বশর্ত হিসেবে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের কথা জানিয়েছে সৌদি আরব। এই শর্ত নিয়ে কোনো দরকষাকষি সম্ভব নয়, এটাও নিশ্চিত করেছে রিয়াদ। এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে নেতানিয়াহু বলেন, আমি এমন কোনো চুক্তিতে যাব না, যা রাষ্ট্র হিসেবে ইসরাইলকে বিপদে ফেলবে। বিশেষত ৭ অক্টোবর পরবর্তী পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনায় সায় দেয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না।
তিনি বলেন, আপনারা কি জানেন, সেটা কি? একটা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র ছিল। সেটার নাম গাজা। গাজার নেতৃত্বে ছিল হামাস, তারাই এই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র পরিচালনা করত। আর দেখুন আমরা সেখান থেকে কী পেয়েছি- হলোকাস্টের পর সবচেয়ে বড় গণহত্যা।
এ সপ্তাহের শুরুর দিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসরাইলি কর্মকর্তারা জেরুসালেম পোস্টকে জানান, নেতানিয়াহু সৌদি আরবের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিনিময়ে গাজার যুদ্ধের অবসান ও পশ্চিম তীর অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। কর্মকর্তারা আরো জানান, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনে রাজি না হলেও পশ্চিম তীরের অধিগ্রহণ বন্ধ রেখে রিয়াদকে তুষ্ট করার চেষ্টা চালাতে পারেন নেতানিয়াহু।
গাজা আমাদের নয়, ফিলিস্তিনিদের : ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী
ইসরাইলের সাবেক এক প্রধানমন্ত্রী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গাজা দখল করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, এই পরিকল্পনা বা প্রস্তাব অবাস্তব, কারণ গাজা ইসরাইলের হাতে দেয়ার মতো কিছু নয়। এহুদ ওলমার্ট বিবিসির ওয়ার্ল্ড নিউজ আমেরিকা অনুষ্ঠানে বলেন, গাজা পুনর্গঠনে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তাকে স্বাগত জানাবেন, তবে শর্ত একটাই গাজা অবশ্যই ফিলিস্তিনিদের মাধ্যমে এবং ফিলিস্তিনিদের জন্যই পুনর্নির্মাণ করতে হবে। তিনি বলেন, আমি শুনেছি, আমেরিকা আশা করছে যে ইসরাইল গাজা তাদের হাতে তুলে দেবে। কিন্তু আমরা তা করতে পারি না, কারণ গাজা আমাদের নয়। গাজা ফিলিস্তিনিদের। ওলমার্ট বর্তমান ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টির সদস্য ছিলেন ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে। তবে ২০০৬ সালে তিনি ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অ্যারিয়েল শ্যারন দল থেকে বেরিয়ে আসেন।
গাজার বালুর ঢিবি থেকে ৬৬ ফিলিস্তিনির লাশ উদ্ধার
গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের একটি বালুর ঢিবি থেকে ৬৬ জন ফিলিস্তিনির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এই বালুর ঢিবিটি ইসরাইলের সামরিক বাহিনী তৈরি করেছিল। গতকাল শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু। খবর অনুযায়ী, বেসামরিক প্রতিরক্ষা দলগুলো উত্তর গাজায় ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর তৈরি একটি বালুর ঢিবি থেকে ৬৬ জন ফিলিস্তিনির লাশ উদ্ধার করেছে। গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, ইসরাইলের বুলডোজিং অভিযানের কারণে গাজা সিটি ও উত্তরের বেশ কয়েকটি এলাকায় আত্মরক্ষার্থে সেনাবাহিনীর ব্যবহার করা বালুর ঢিবির নিচে ফিলিস্তিনিদের কবর দিয়েছিল তারা। উত্তরাঞ্চলীয় শহর জাবালিয়ায় ৩৭টি এবং গাজা শহরের শাতি শরণার্থী শিবিরে ২৯ জনের লাশ পাওয়া গেছে।
তিনি আরো বলেন, অনেক কবর এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। কারণ ইসরাইলি হামলার কারণে ফিলিস্তিনিরা সে সময় মৃতদের রাস্তায়, স্কোয়ার ও পাবলিক পার্কে কবর দিতে বাধ্য হয়েছিল। সিভিল ডিফেন্স টিম এবং মেডিক্যাল সদস্য সীমিত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও ধ্বংসস্তূপ এবং বালুর ঢিবির নিচ থেকে লাশ উদ্ধারের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা