০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২ মাঘ ১৪৩১, ৫ শাবান ১৪৪৬
`

জোরদার হতে থাকে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন

-

বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি ক্রমেই জোরালো হতে থাকে। সভা-সমাবেশের মাধ্যমে ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে মানুষের দাবি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বেলতলা ছিল তখন ছাত্রদের জনপ্রিয় সমাবেশস্থল। এখানে ১৯৪৭ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে প্রথম ছাত্রসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রভাষার দাবিতে ছাত্রদের সাথে সেখানে শিক্ষক জনতাও অংশ নেন। ১৯৪৭ সালের ২৭ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত করাচিতে একটি শিক্ষা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ফজলুর রহমান উর্দুকে পাকিস্তানের লিঙ্গুয়া ফ্র্যাঙ্কা (সাধারণ ভাষা) করার প্রস্তাব দেন। এরই প্রতিবাদে বেলতলায় তমদ্দুন মজলিস সভা ডাকে। প্রিন্সিপাল আবুল কাসেমের সভাপতিত্বে সভায় বক্তৃতা করেন অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি ফরিদ আহমদ, অধ্যাপক এ কে এম আহসান এবং ছাত্রনেতা আবদুর রহমান চৌধুরী (পরে বিচারপতি), কল্যাণ দাস গুপ্ত ও এস আহমদ।
ফরিদ আহমদ ছাত্রসভায় যেসব প্রস্তাব করেন তার মধ্যে রয়েছে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা এবং পূর্ব পাকিস্তানের সরকারি ভাষা করা, রাষ্ট্রভাষা ও লিঙ্গুয়া ফ্র্যাঙ্কা নিয়ে যেসব বিভ্রান্তি রয়েছে, তার আসল সমস্যা ধামাচাপা না দিয়ে সমাধান করা, বাংলা ভাষা ও পূর্ব পাকিস্তানের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা না করে সঙ্কটের মীমাংসা করা। মন্ত্রী ফজলুর রহমান ও হবিবুল্লাহ বাহার উর্দু ভাষার দাবিকে সমর্থন করায় নিন্দা জ্ঞাপন করা হয় প্রস্তাবে। এ ছাড়া বাঙালিবিরোধী প্রচারের জন্য মর্নিং নিউজ পত্রিকার নিন্দা করা হয়।
ঢাবির প্রতিবাদ সমাবেশ সম্পর্কে তখন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে লেখা হয় : সমাবেশ শেষে মিছিলকারীরা প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীনের বাসভবনের দিকে বিক্ষোভ করতে করতে অগ্রসর হয়। তার বাসভবনের সামনে উর্দুবিরোধী ধ্বনি দিতে থাকে। অতঃপর শোভাযাত্রা মর্নিং নিউজের ঢাকা অফিসের সামনে উপস্থিত হয়ে ‘মর্নিং নিউজ ধ্বংস হোক’, উর্দুওয়ালা বরবাদ’ প্রভৃতি সেøাগান দেয় এবং অফিসে আক্রমণ করে। এ ছাড়াও সচিবালয়ের সামনে শোভাযাত্রায় উপস্থিত হয়ে ‘উর্দু জুলুম চলবে না, পাঞ্জাবি রাজ বরবাদ’ প্রভৃতি সেøাগান দেয়।


আরো সংবাদ



premium cement