যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ ভারতীয়দের প্রত্যাবাসন শুরু
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
এক কোটি ১০ লাখ অবৈধ অভিবাসীর বিরুদ্ধে যে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার অংশ হিসেবে অবৈধ ভারতীয়দের ফেরাতে একটি সামরিক উড়োজাহাজ যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, সি-১৭ উড়োজাহাজ রওনা হয়েছে এবং অন্তত ২৪ ঘণ্টার আগে তা গন্তব্যে পৌঁছবে না। রয়টার্স ও এনডিটিভি।
এনডিটিভি লিখেছে, অভিবাসী প্রত্যাবাসনে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ফ্লাইটের সবচেয়ে দূরতম গন্তব্য হচ্ছে ভারত। টেক্সাসের এল পাসো এবং ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান ডিয়োগো থেকে পাঁচ সহস্রাধিক অবৈধ অভিবাসীকে প্রত্যাবাসনে ফ্লাইট ঘোষণা করেছে ভারত। এ পর্যন্ত গুয়েতামালা, পেরু ও হন্ডুরাসে গেছে অভিবাসীবাহী সামরিক ফ্লাইট। অভিবাসন প্রশ্নে জরুরি ঘোষণার অংশ হিসেবে গত সপ্তাহে সামরিক ফ্লাইট চালু করেন ট্রাম্প। এ পর্যন্ত অভিবাসীবাহী ছয়টি ফ্লাইট গেছে লাতিন আমেরিকায়। দু’টি মার্কিন সি-১৭ কার্গো বিমান অবতরণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে অভিবাসীদের ফেরাতে কলম্বিয়া নিজস্ব উড়োজাহাজ পাঠানোর আগ্রহ প্রকাশ করে। এ নিয়ে ট্রাম্পের সাথে বিরোধের পর চারটি ফ্লাইট গুয়াতেমালায় অবতরণ করে। ট্রাম্প গত মাসে সাংবাদিকদের বলেন, “ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আমরা অবৈধ অভিবাসীদের ধরে সামরিক উড়োজাহাজে তুলছি এবং তারা যেখান থেকে এসেছিল, সেখানেই পাঠানো হচ্ছে।”
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে ফোনালাপের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে মোদী শেষ পর্যন্ত ‘যা সঠিক তাই করবেন’। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র ১৮ হাজার ভারতীয় অভিবাসীকে শনাক্ত করেছে, যারা অবৈভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষ কর্মীর এইচওয়ানবি ভিসাধারীদের বেশিরভাগই ভারতীয়।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার প্রথম কর্মদিবসে ‘মিলিয়ন মিলিয়ন’ অভিবাসীকে ফেরত পাঠানো এবং দক্ষিণ সীমান্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণা দেয়ার পর অবৈধ অভিবাসী প্রত্যাবাসন ও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ শুরু হয়েছে। অনুপ্রবেশকারী এবং নির্দিষ্ট অপরাধে অভিযুক্ত অবৈধ অভিবাসীদের আটক ও প্রত্যাবাসনে ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের দিনই মার্কিন কংগ্রেস একটি বিল অনুমোদন করে। নির্বাচনী প্রচারের সময়ও তিনি বলেছিলেন, “আমি যখন পুনর্নির্বাচিত হবো, তখন আমরা আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রত্যাবাসন অভিযান শুরু করব।”
ট্রাম্প তার অভিবাসন নীতি বাস্তবায়নে প্রায়ই সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে সেনা পাঠিয়েছেন, অবৈধ অভিবাসীদের রাখতে সামরিক ঘাঁটি ব্যবহার করছেন এবং অভিবাসীদের ফেরাতে ব্যবহার করছেন সামরিক উড়োজাহাজ। তবে প্রত্যাবাসনে সামরিক উড়োজাহাজ ব্যবহার করায় যে আকাশচুম্বী ব্যয় হচ্ছে তা তুলে ধরা হয়েছে রয়টার্সের খবরে। গত সপ্তাহে গুয়েতেমালায় যাওয়া প্রত্যাবাসন ফ্লাইটে প্রত্যেকের পেছনে অন্তত ৪,৬৭৫ ডলার খরচ হয়। অথচ টেক্সাসের এল পাসো থেকে আমেরিকান এয়ারলাইন্সের প্রথম শ্রেণির টিকিটে গেলে খরচ হত ৮৫৩ ডলার। মার্কিন ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের বাণিজ্যিক চার্টার ফ্লাইটের চেয়েও সামরিক ফ্লাইটের খরচ অনেক বেশি। অভিবাসনের পাশাপাশি ট্রাম্প কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর শুল্ক খড়্গরে ঘোষণা দিয়েছেন। একই ধরনের ব্যবস্থা ইউরোপের জন্যও ভাবছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
উত্তর সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক ও অনুপ্রবেশ যাতে না ঘটে, সেজন্য কানাডা ১৩০ কোটি ডলার ব্যয়ের প্রতিশ্রুতির দেয়ার পর দেশটির ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা এক মাস পেছানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এর আগে সীমান্তে ১০ হাজার সেনা পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে আপাতত রেহাই পেয়েছে মেক্সিকো। সীমান্ত দিয়ে মাদক ও অবৈধ অভিবাসী প্রবেশের ঘটনায় মেক্সিকো ও কানাডা থেকে পণ্য আমদানির ওপর বাড়তি ২৫ শতাংশ শুল্ক মঙ্গলবার কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। তবে চীনের ওপর যে ১০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপের কথা বলা হচ্ছে, সেটি থামাতে কোনো আলোচনা হয়নি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা