১৯ আজিমপুর বাড়িটি ভাষা আন্দোলনের সূতিকাগার
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৩২
রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের ছায়াচ্ছন্ন দিনগুলোতে তমদ্দুন মজলিসের নেতৃবৃন্দ কাণ্ডারির ভূমিকা পালন করেন। তমদ্দুন মজলিসের সে সময়ের ভূমিকাকে পরবর্তীকালে খাটো করার প্রয়াস চললেও ভাষা আন্দোলনের নিরপেক্ষ গবেষকরা মনে করেন, ছাত্র-তরুণদের এ উদ্যোগই আমাদের ভাষা আন্দোলনের মূল ভিত্তি। তাদের সংগঠিত উদ্যোগই ভাষা আন্দোলনকে পরিণতি এনে দেয়। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সমাজ মানসে ব্যাপক পরিবর্তন আনে।
ব্রিটিশদের কাছ থেকে সদ্য স্বাধীনতা লাভকারী পাকিস্তানে নতুন এই জাগরণ তৈরি করা মোটেও সহজ ছিল না; কিন্তু ছাত্র-যুবকদের যুক্তিগ্রাহ্য বক্তব্য সাধারণ মানুষকে এর সাথে সম্পৃক্ত করে। ভাষা আন্দোলনের সূচনালগ্নে ১৯ নম্বর আজিমপুর বাড়িটি তখন তমদ্দুন মজলিস ও সচেতন ছাত্র নেতৃবৃন্দের ঠিকানা ও মিলনস্থলে পরিণত হয়। কারণ ওই বাড়িতেই তমদ্দুন মজলিসের অফিস স্থাপন করা হয়েছিল ১৯৪৭ সালের ৭ সেপ্টেম্বর। এ অফিসকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে ভাষা আন্দোলন। ভাষা আন্দোলনের চেতনায় উদ্বুদ্ধ ছাত্র-জনতা এ বাড়ি থেকেই প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা নিয়ে তা ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অলিগলি ও দেশের অন্যত্র ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। এ জন্য ১৯ নম্বর আজিমপুর বাড়িটিকে ভাষা আন্দোলনের সূতিকাগার বলা হয়।
প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম প্রতিষ্ঠিত তমদ্দুন মজলিসে প্রথম দিকে যারা যুক্ত ছিলেন তারা হলেন- অধ্যাপক ড. নূরুল হক ভূঁইয়া, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, শামসুল আলম, এ কে এম আহসান, কবি মোফাখখারুল ইসলাম, আব্দুল খালেক (আইজিপি), ইঞ্জিনিয়ার নূরুল হুদা প্রমুখ। যেসব বুদ্ধিজীবী তমদ্দুন মজলিসের ভাষা আন্দোলনকে শুরুতেই সমর্থন করেছিলেন তাদের মধ্যে রয়েছেন- ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁ, আবুল মনসুর আহমদ, ড. কাজী মোতাহার হোসেন ও কবি ফররুখ আহমদ।
১৯ নম্বর আজিমপুরের ওই বাড়িটি থেকেই প্রিন্সিপাল আবুল কাসেমের নির্দেশনায় আন্দোলনের যাবতীয় কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এভাবে তিনি ভাষা আন্দোলনের জনকে পরিণত হন। ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে এখানে এসে আবুল কাসেমের সান্নিধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নেতার জীবনের বিকাশ ঘটে। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম তাদেরই একজন। তাই ১৯ আজিমপুর, জাতীয় ইতিহাসের এক জ্বলন্ত সাক্ষী। (সূত্র : এম এ বার্ণিক, ভাষা আন্দোলন স্মারকগ্রন্থ)
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা