রাজউকের নিম্নবিত্ত আবাসনের ১০১১ একর ভূমির বেশির ভাগই বেদখলে
- হামিম উল কবির
- ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৩৬
নিম্নবিত্তদের আবাসনের জন্য নির্দিষ্ট করে রাখা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এক হাজার ১১ একরের কিছু বেশি ভূমির বেশির ভাগই বেদখলে। রাজধানীর ৫৩টি স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এসব ভূমি উদ্ধারে রাজউকের দৃশ্যমান কোনো তৎপরতা নেই। তবে মাঝে মাঝে রাজউক তার মালিকানাধীন এসব ভূমি উদ্ধারে কিছু কাজ করলেও অদৃশ্য সুতোর টানে বেশি দূর এগুতে পারে না, একটা সময় উদ্ধার তৎপরতা বন্ধ হয়ে যায়।
ঢাকা শহরের বাসযোগ্যতা নিশ্চিতকল্পে একটি ন্যায়সঙ্গত ও অংশগ্রহণমূলক পরিকল্পনা প্রণয়নে গঠিত কমিটির সভার কার্যবিবরণী থেকে রাজউকের এ ভূমির কথা জানা যায়। ২০২২ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত প্রণীত ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান বা ড্যাপ বাস্তবায়নের জন্য ৫৩টি স্থানকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ এ ব্যাপারে জানান, ‘নি¤œবিত্ত শ্রেণীর মানুষের আবাসনের জন্য নির্দিষ্ট করে রাখা স্থানগুলো বেশির ভাগই বেদখল হয়ে আছে, সেগুলো উদ্ধারে আমরা কাজ করছি। আজ বৃহস্পতিবার বসিলা এলাকার শ্রীকান্দ মৌজায় ২.৯৮ একর ভূমি উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হবে। বেদখল হয়ে থাকা সব ভূমি ধারাবাহিকভাবে উদ্ধার করা হবে।’
নি¤œবিত্ত শ্রেণীর মানুষের জন্য আবাসন ব্যবস্থা কিভাবে বাস্তবায়ন করা হবে তা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক আছে। এর আগে রাজধানীর ভাসানটেকে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের জায়গায় নি¤œবিত্ত শ্রেণীর মানুষের জন্য আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছিল। ২০০৪ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পে মিরপুর ১৪ নম্বরের ভাসানটেকে ৪৭.৯০ একর জমিতে পরবর্তী পাঁচ বছরে ১১১ ভবনে মোট ১৩ হাজার ৬৬০টি ফ্ল্যাট তৈরির কথা ছিল। কিন্তু ৯ বছরে দুই হাজার ১৬টি ফ্ল্যাট তৈরি করে নর্থ সাউথ প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট (এনএসপিডিএল)। কিছু ভবন অসমাপ্ত রেখেই লাপাত্তা হয়ে যায় সেই কোম্পানি। ওই প্রকল্পে ২১৫ বর্গফুট এবং ৩৯৫ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাট নির্মাণের বাধ্যবাধকতা ছিল। জানা গেছে, ২১৫ বর্গফুটের ফ্ল্যাটের জন্য দুই লাখ টাকা ও ৩৯৫ বর্গফুটের ফ্ল্যাটের জন্য তিন লাখ ৫৫ হাজার টাকা ১০ বছরে শোধ করার কথা ছিল। সেই ফ্ল্যাটগুলো শেষ পর্যন্ত নি¤œবিত্ত শ্রেণীর মানুষের দখলে থাকেনি। বস্তিবাসী অথবা নি¤œবিত্ত কারো এত টাকা দেয়ার সামর্থ্য না থাকায় সেই ফ্ল্যাটগুলো শেষ পর্যন্ত ধনী পরিবারের হাতে চলে যায়।
এ অভিজ্ঞতা থেকে রাজউকের নতুন প্রকল্পে ফ্ল্যাট বিক্রি করা হবে না বলে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে নগর পরিকল্পনাবিদ মো: আশরাফুল ইসলাম বলেন, রাজউক নি¤œবিত্ত শ্রেণীর মানুষকে ফ্ল্যাট দেয়া হবে ভাড়ায় কিন্তু বিক্রি করা হবে না। ফ্ল্যাটগুলো রাজউকের টাকায় অথবা অন্য কোনোভাবে ভবন নির্মাণ করা হবে কিন্তু কারো কাছে বিক্রি করা হবে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা