স্বৈরাচারের মাথা পালালেও কিছু অবশিষ্ট রয়ে গেছে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সম্মেলনে তারেক- ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
- ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৩৫
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, স্বৈরাচারের মাথাটা পালিয়ে গেছে। কিন্তু স্বৈরাচারের কিছু কিছু অবশিষ্ট রয়ে গেছে বাংলাদেশে। যেকোনো সময় তারা ভিন্ন আঙ্গিকে মাথাচারা দেয়ার অপচেষ্টা করছে। যদি দেশকে রক্ষা করতে হয়, দেশের মানুষেকে রক্ষা করতে হয় তাহলে ঐক্যের বিকল্প নেই। বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যত মানুষ প্রতিবাদ করেছে তাদের প্রত্যেকটি মানুষ হয়েছে অত্যাচারিত।
তিনি গতকাল বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ আব্বাস উদ্দিন খান সোহাগপুর মডেল কলেজ মাঠে জেলা বিএনপির সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরো বলেন, আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতে পারে, যারা আমরা দেশের জন্য কাজ করতে চাই দিন শেষে আমরা এক। আমাদের সামনে অনেক কাজ, দেশকে পুনর্গঠনের কাজ। আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষার অধিকার, স্বাস্থ্যের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বেকারত্ব দূরীকরণ, কৃষি ও শিল্পখাতে উন্নয়ন ৩১ দফায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আমরা কৃষককে ন্যায্যমূল্য দিতে চাই। তবে লাগামহীন দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি যেন জনগণের মধ্যে নাভিশ^াষের কারণ না হয়। তিনি আরো বলেন, অচল কল কারখানাগুলোকে সচল করতে হবে। আমাদের অসংখ্য নদ নদী ও খাল ভরাট হয়ে গেছে। এগুলো খনন করতে হবে।
আগামী দিনে সংসদের মেয়াদ কত হবে, সংখ্যা কত হবে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এই বিতর্ক থাকতেই পারে। দিন শেষে আমরা এগুলো জনগণের ওপর ছেড়ে দিব। এই নিয়ে মাত্রতিরিক্ত বিতর্ক রাষ্ট্র মেরামতের কাজকে বিঘিœত করবে। তবে এর একমাত্র উপায় হলো জাতীয় নির্বাচন। জনগণের ভোটের মাধ্যমে এর ফয়সালা হবে। তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছর জনগণের ভোট দেয়ার অথিকার ছিল না। জবাবদিহিতা ছিল না। অস্ত্রের মুখে সব অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছিল। আমরা ডামি নির্বাচন, ভোটারবিহীন নির্বাচন ও ভোট ডাকাতির নির্বাচন দেখিছি। উন্নয়নের নামে সামান্য জিনিস দৃশ্যমান করা হলেও এর মাধ্যমে লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। রাষ্ট্র্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছে। দেশকে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে গেছে তারা।
বিএনপি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। এই দলের কর্মী হিসেবে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে জাতিকে পথ দেখাতে হবে। শুধু আমাদের দলই নয়, দেশের যে সব রাজনৈতিক দল যাদের এজেন্ডা দেশ ও দেশের মানুষ, তাদের সাথে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এটাই হোক এই সম্মেলনের প্রতিজ্ঞা ও শপথ।
উদ্বোধকের বক্তব্যে বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কাউকে হত্যা করে এ দেশের ক্ষমতায় আসেননি। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দেশের সিপাহি জনতা শহীদ রাষ্ট্রপ্রতি জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসান। এরপর তিনি এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বলেন, আজ দেশের দেড় কোটি মানুষ মধ্যপ্রচ্যের বিভিন্ন দেশে চাকরি করেন। সেই বৈদেশিক শ্রমবাজার জিয়াউর রহমান চালু করেন। ঋণ প্রদানের মাধ্যমে দেশের পোশাক শিল্পও জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠা করেছেন। যে পোশাক শিল্প আর বৈদেশিক রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিকে আজ চাঙ্গা করেছে। এসব অবদান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের। সেই ইতিহাস আওয়ামী লীগ বদলে দিতে চায়।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে বক্তৃতা করেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মো: সেলিম ভুইয়া, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মো: মোস্তাক আহম্মেদ, কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিকবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন শ্যামল, কুমিল্লা বিভাগীয় সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো: সায়েদুল হক সাইদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মো: শামীম, সালাউদ্দিন শিশির, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো: জহিরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো: সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, মো: কবির আহম্মেদ ভুইয়া প্রমুখ।
এ দিকে প্রায় এক যুগ পর জেলা বিএনপির এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে জেলার সর্বত্রই ছিল উৎসবের আমেজ। গতকাল সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিভিন্ন রং-বেরঙের ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে আসতে থাকে। দুপুর ১২টার আগেই দলীয় নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে সমাবেশস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা