আজ অমর একুশে বইমেলা উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:০৮
বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ মাসব্যাপী দেশের বৃহত্তম অমর একুশে বইমেলা-২০২৫ এর উদ্বোধন করবেন।
অমর একুশে বইমেলা কমিটির সদস্য সচিব ড. সরকার আমিন বৃহস্পতিবার একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১ ফেব্রুয়ারি বেলা ৩টায় বইমেলার উদ্বোধন করবেন।’ এ বছরের বইমেলার প্রতিপাদ্য বিষয় ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান : নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ’।
বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হকের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন- সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং স্বাগত বক্তব্য রাখবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ও কমিটির সভাপতি ড. মোহাম্মদ আজম ও বাংলা একাডেমির সচিব ড. মো: সেলিম রেজাও সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। বইমেলার বিন্যাস গত বছরের মতোই থাকবে জানিয়ে সরকার আমিন বলেন, ‘মেট্রোরেল স্টেশনের কাছাকাছি হওয়ায় বহির্গমন গেটটি মন্দিরের গেটের কাছাকাছি সরানো হয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, দোয়েল চত্বর, এমআরটি বেসিং প্ল্যান্ট ও ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের কাছে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য চারটি পয়েন্ট থাকবে।
সরকার আমিন জানান, মেলার সীমানা বরাবর খাবারের স্টলের আয়োজন করা হবে ও মেলা প্রাঙ্গণে ৩০টি শৌচাগার স্থাপন করা হয়েছে, যা মেলার ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
প্রধান উপদেষ্টা হতে রাজি হওয়ার আগে ও পরে কী ঘটেছিল, জানালেন অধ্যাপক ইউনূস
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে হাসপাতালে থাকার সময় প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার প্রস্তাব পাওয়া, ঢাকায় আন্দোলনকারী ছাত্রনেতাদের সাথে মুঠোফোনে আলাপ এবং সেই সময়ে তার চিন্তাভাবনা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের দাভোস সফর করেন প্রধান উপদেষ্টা। সে সময় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের বৈদেশিকবিষয়ক প্রধান ভাষ্যকার গিডেয়েন রাখমানের উপস্থাপনায় একটি পডকাস্টে কথা বলেন তিনি।
‘রাখমান রিভিউ’ নামের ওই পডকাস্ট অনুষ্ঠানে কথোপকথন লিখিত আকারে বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) প্রকাশ করা হয়েছে।
কথোপকথনে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমি যখন প্রথম ফোনকল পাই, তখন আমি প্যারিসের হাসপাতালে ছিলাম। আমার ছোট্ট একটি অস্ত্রোপচার হয়েছিল। তখন তারা (ছাত্রনেতারা) ফোন দিল। যদিও আমি বাংলাদেশে কী ঘটছে, সেসব খবর প্রতিদিন মুঠোফোনে দেখতাম। তখন তারা বলল, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) চলে গেছেন। এখন আমাদের সরকার গঠন করতে হবে। দয়া করে, আমাদের জন্য সরকার গঠন করুন। আমি বলেছিলাম, না, আমি সেই ব্যক্তি নই। আমি এর কিছুই জানি না। আমি এর সাথে যুক্ত হতেও চাই না।
কারা আপনার সাথে যোগাযোগ করেছিল- এমন প্রশ্নে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, শিক্ষার্থীরা। আমি তাদের কাউকেই চিনতাম না। কখনো তাদের সম্পর্কে শুনিনি। কাজেই আমি তাদের বিকল্প কাউকে খোঁজার বিষয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম। তাদের বলেছিলাম, বাংলাদেশে অনেক ভালো নেতা আছেন। তোমরা তাদের খুঁজে নাও। তারা বলছিল, না, না, না, আপনাকেই থাকতে হবে। আমরা কাউকে পাইনি। আমি বলেছিলাম, জোরালো চেষ্টা করো। তারা বলল, আমাদের হাতে পর্যাপ্ত সময় নেই। তখন বলেছিলাম, অন্তত একটা দিন চেষ্টা করো। না পেলে ২৪ ঘণ্টা পর আমাকে আবার ফোন করো।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তারা (ছাত্রনেতারা) আমাকে আবারো ফোন করল। বলল, আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু সম্ভব হয়নি। আপনাকে অবশ্যই দেশে ফিরতে হবে। শেষ পর্যন্ত আমি বললাম, দেখো, তোমরা রাজপথে জীবন দিয়েছো, প্রচুর রক্তক্ষয় হয়েছে। তোমরা সম্মুখসারিতে আছো। যেহেতু তোমরা এসব করতে পেরেছ, এখন ইচ্ছা না থাকলেও তোমাদের জন্য আমারও কিছু করা উচিত। আর এটাই সেই সময়। সরকারের সংস্কার করতে হবে। আমি রাজি। তোমরা কি একমত? তারা আর কোনো কথা বলেনি।
সেই দিনের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ঘণ্টা দুয়েক পর হাসপাতালের একজন নার্স এলেন। তিনি আমাকে একটি ফুলের তোড়া উপহার দিলেন। আমি বললাম, এটা কেন? তখন ওই নার্স বললেন, আপনি বাংলাদেশের ‘প্রধানমন্ত্রী’, আমরা এটা জানতাম না। আমি বললাম, এটা আপনি কোথা থেকে জানলেন? তখন তিনি বললেন, সব গণমাধ্যমে, সব টেলিভিশনে সংবাদ প্রচার হচ্ছে, আপনি বাংলাদেশের ‘প্রধানমন্ত্রী’। আমি বললাম, আমি আপনার কাছ থেকেই এটা জানলাম।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এরও ঘণ্টা দুয়েক পর ওই বোর্ড সদস্যরাসহ হাসপাতালের প্রধান আসেন। তারা ফুলের তোড়া দিয়ে নতুন ‘প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে আমাকে শুভেচ্ছা জানান। সাথে এটাও বলেন যে বিকেলের আগে আমাকে হাসপাতাল ছাড়ার বিষয়ে অনুমতি দেয়া হবে না।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমি পরিচালককে বলি, ওরা আমাকে চাইছে। দেশে যেতে বলছে। ভ্রমণের জন্য আপনি কি আমাকে প্রস্তুত করে দিতে পারেন? তিনি বললেন, অবশ্যই, আপনার কথা আমাদের মানতে হবে। আপনি একজন প্রধানমন্ত্রী। আপনার নিরাপদ যাত্রার জন্য আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে দেব। প্রয়োজনীয় ওষুধসহ সবকিছু দেব। সার্বক্ষণিক যোগাযোগে থাকবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা