রাজনৈতিক সহিংসতা বেড়েছে জানুয়ারিতে
এমএসএফের প্রতিবেদন- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:০২
গত ডিসেম্বর মাসের চেয়ে নতুন বছরের জানুয়ারিতে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে। বিএনপির কর্মীদের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব বেড়ে যাওয়ায় হতাহতের ঘটনা ঘটেই চলেছে। জানুয়ারিতে দেশে রাজনৈতিক সহিংতায় ১০ জন নিহত ও আহত হয়েছেন ৫৯৪ জন। গত ডিসেম্বরে এ ধরনের সহিংসতায় নিহত হয়েছিলেন ৯ জন এবং আহত হয়েছিলেন ৩১২ জন। এ ছাড়া জানুয়ারিতে ১৩টি ঘটনায় ২১ জন সাংবাদিক বিভিন্ন জেলায় পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় নানাভাবে হামলা, হুমকি ও নির্যাতনের শিকার হন। এ ছাড়া দু’জন সাংবাদিক দায়িত্ব পালনকালে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে আহত হন।
মানবাধিকার সংগঠন-মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) জানুয়ারি (২০২৫) মাসের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে এমএসএফ। প্রতিষ্ঠানটি সংবাদপত্রের খবর এবং নিজেদের তথ্যানুসন্ধানের ওপর ভিত্তি করে এ প্রতিবেদন তৈরি করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জানুয়ারিতে মোট সহিংসতার ৫৮টি ঘটনার মধ্যে বিএনপির অন্তর্দ্বন্দ্বের ৪১টি, আওয়ামী লীগের অন্তর্দ্বন্দ্ব দু’টি, বিএনপি-আওয়ামী লীগ ১২টি, বিএনপি-জামায়াত দু’টি ও একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের মধ্যে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় মামলার সংখ্যা কমলেও দুষ্কৃতকারীদের হাতে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনাসহ নিজেদের অন্তর্দ্বন্দ্ব অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিএনপি কর্মীদের অন্তর্দ্বন্দ্ব লক্ষণীয়ভাবে বেড়ে যাওয়ায় হতাহতের ঘটনা ঘটেই চলেছে।
এমএসএফের তথ্য অনুযায়ী, রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহতদের মধ্যে পাঁচজন বিএনপির, তিনজন আওয়ামী লীগের, একজন জামায়াতের ও একজনের পরিচয় জানা যায়নি। জানুয়ারি মাসে কারা হেফাজতে মোট আটজনের মৃত্যু হয়েছে। আগের মাসে এ সংখ্যা ছিল ছয়। জানুয়ারিতে তিনজন কয়েদি ও পাঁচজন হাজতির মৃত্যু হয়। কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে একজন, নীলফামারী কারাগারে দু’জন, গাজীপুর জেলা কারাগারে একজন, মানিকগঞ্জ কারাগারে একজন, ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারে একজন, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার ও খুলনা জেলা কারাগারে একজন বন্দী মারা যান।
এমএসএফ বলেছে, সাংবাদিকদের যেভাবে শারীরিক, মানসিক এবং আইনি হয়রানি, আক্রমণ, হুমকি ও লাঞ্ছিত করা হচ্ছে, তা শুধু অনাকাক্সিক্ষতই নয় বরং সৎ সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধ করে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে বাধা। যদিও বর্তমান অন্তর্বর্র্তী সরকার তাদের বক্তব্যে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়ার কথা ব্যক্ত করেছে। জানুয়ারিতেও সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে চিত্র উদ্বেগজনক। জানুয়ারিতে নানাভাবে আক্রান্ত সাংবাদিকদের মধ্যে ১৮ জন সাংবাদিক তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় আহত ও হামলার শিকার হয়েছেন। লাঞ্ছিত ও হুমকির শিকার হয়েছেন তিনজন সাংবাদিক। ১৩টি সাংবাদিক নির্যাতনসংক্রান্ত ঘটনার দু’টিতে বিএনপি, একটিতে পুলিশ, একটিতে চেয়ারম্যান, একটিতে আনসার প্রহরী, একটিতে বালু উত্তোলনকারী, একটিতে চোরাকারবারি, একটিতে প্রভাবশালী, চারটিতে সন্ত্রাসী বাহিনী ও একটিতে সরকারি কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা ছিল।
এ ছাড়া সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি মাসে বিভিন্নপর্যায়ে সনাতন ধর্মাবলম্বী নির্যাতনের চারটি এবং জাতিগত সংখ্যালঘু নির্যাতনের পাঁচটিসহ মোট ৯টি ঘটনা ঘটেছে। সনাতন ধর্মাবলম্বী নির্যাতনের চারটি ঘটনায় লালমনিরহাট, দিনাজপুর, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জে মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর এবং স্বর্ণালঙ্কার চুরির ঘটনা ঘটে। অন্য দিকে ৩ জানুয়ারি জাতিগত সংখ্যালঘু নির্যাতনের ক্ষেত্রে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল নারীকে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের লোকজন জমি দখলকে কেন্দ্র করে মারধর, বাড়িতে আগুন ও যৌন হয়রানি করে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা