৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১, ১৮ রজব ১৪৪৫
`

পূর্বাচলে নির্বাহী আদেশে আ’লীগ ঘনিষ্ঠদের ১১০০ প্লট বরাদ্দ

-

রাজউকের পূর্বাচল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে লটারির পর আওয়ামী সরকারের নির্বাহী আদেশে এক হাজার ১০০’র বেশি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ওই প্রকল্পের সব প্লট লটারির মাধ্যমে বরাদ্দ দেয়ার বিধান থাকলেও আইনের তোয়াক্কা না করে এত বিশাল সংখ্যক প্লট বরাদ্দ দেয়া হয় আওয়ামী লীগের কাছের লোকদের। এ কাজে রাজউককে বাধ্য করা হয় বরাদ্দকৃত এই প্লটগুলোকে বৈধতা দেয়ার জন্য। ফলে রাজউকের তৎকালীন বোর্ড ভবিষ্যতে কি হবে সেই চিন্তা না করে সরকারের আদেশে লটারির বাইরে দেয়া প্লটগুলোকে প্রয়োজনীয় বৈধতা দিয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) বোর্ড রুমে আয়োজিত ‘নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম, বাংলাদেশের (ইউডিজেএফবি)’ সদস্যদের সাথে মতবিনিময় সভায় এমন তথ্য প্রদান করেন রাজউকের চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সভার শুরুতেই চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) ছিদ্দিকুর রহমান সরকার সাংবাদিকদের সাথে পরিচিত হন এবং রাজউকের কর্মকর্তাদের পরিচয় করিয়ে দেন।
সভায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বলা হয়, কিছু বিধিমালা সংশোধন করা হচ্ছে। সংশোধিত বিধিমালায় জলাশয়ে কোনো ভবন করা যাবে না। কোনো বহুতল ভবনের অনুমতি নিতে হলে ভবনের সামনে কমপক্ষে ২০ ফুট প্রশস্ত রাস্তা থাকতে হবে। ভবনের চারপাশে জায়গা থাকলে এবং প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করতে পারলে রাজউক ১০০তলা ভবনেরও অনুমতি দেবে। রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, ঢাকার অনুমোদিত প্রায় ৯০ শতাংশ ভবনে নকশা ব্যত্যয় (ডেভিয়েশন) আছে। যারা নকশা ব্যত্যয় করে ভবন নির্মাণ করেছে তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলা করা হবে। প্রশ্নের উত্তরে প্রধান প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম বলেন, আগামী জুন মাসে পূর্বাচলের অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ হবে। সেখানে বিদ্যুৎ লাইন মাটির নিচে দিয়ে নেয়া সম্ভব হয়নি প্রয়োজনীয় অর্থায়নের অভাবে, প্রাথমিকভাবে আমরা ওভারহেড (মাথার ওপরে) বিদ্যুৎ লাইন টেনে কাজ করব। তবে জায়গা রাখা হয়েছে, অর্থ পেলে ভবিষ্যতে মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুৎ লাইন নেয়া হবে।
লটারির বাইরে কত প্লট দেয়া হয়েছে এ প্রশ্নের জবাবে বলা হয়, রাজউক এ পর্যন্ত নির্বাহী আদেশে বরাদ্দ করা ৮৩১টি প্লটের ডকুমেন্ট পেয়েছে, আরো খোঁজা হচ্ছে, সেগুলোও পাওয়া যাবে। সবমিলিয়ে এক হাজার ১০০’র বেশি প্লট দেয়া হয়েছে নির্বাহী আদেশে। পূর্বাচলে একটি আইকোনিক ভবন নির্মাণের কথা ছিল, সেই ভবনের সর্বশেষ পরিস্থিতি কী জানতে চাইলে বলা হয়, ওই ভবনটির কাজ বাংলাদেশের শিকদার গ্রুপ ও জাপানের কাজিমা নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু অনেক দিন হয়ে গেছে, তাদের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। রাজউক ওই দুই প্রতিষ্ঠানের সাথে কৃত চুক্তি বাতিল করবে। দুর্নীতির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জানানো হয়, রাজউক দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করবে। রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, ড্যাপে উল্লেখিত এফএআর বা ফার সংশোধন করা হয়েছে। সংশোধনের পর ড্যাপ আরো বেশি যৌক্তিক হয়েছে। ড্যাপ পর্যালোচনা রিপোর্ট মন্ত্রণালয়ে আছে, খুব শিগগিরই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। ব্লকভিত্তিক উন্নয়ন করা হলে সর্বোচ্চ ৬-এর বেশি ফার দেয়া হবে বলে জানানো হয়।
সাংবাদিকদের পক্ষে সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন ইউডিজেএফবির সভাপতি মতিন আব্দুল্লাহ। রাজউকের বোর্ড সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সদস্য (প্রশাসন) ড. মো: আলম মোস্তফা, সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, সদস্য (উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ) মোহা: হারুন-অর-রশীদ, সদস্য (্এস্টেট ও ভূমি) ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম। অন্যান্যের মধ্যে কথা বলেন, প্রধান প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম, প্রধান স্থপতি মোস্তাক আহমেদ। সাংবাদিকদের থেকে কথা বলেন ইউডিজেএফবির সহসভাপতি রাশেদ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল খান প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement