৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১, ১৮ রজব ১৪৪৫
`

অন্তর্বর্তী সরকারের মধুচন্দ্রিমা ফুরিয়ে গেছে : ক্রাইসিস গ্রুপ

-

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মধুচন্দ্রিমা ফুরিয়ে গেছে মন্তব্য করে ব্রাসেলসভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি) বলেছে, রাজনৈতিক দল এবং অন্যান্য অংশীদাররা সংস্কার নিয়ে দরকষাকষি এবং নির্বাচনে সুবিধা পাওয়ার জন্য ঘোড়দৌড়ের কারণে চলতি বছর বাংলাদেশে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গতকাল প্রকাশিত আইসিজির ওয়াচ লিস্টে বাংলাদেশ সম্পর্কে এ মন্তব্য করা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও সদস্য রাষ্ট্রগুলোর শান্তির সম্ভাবনাকে এগিয়ে নিতে প্রতি বছর আইসিজি এই ওয়াচ লিস্ট প্রকাশ করে। চলতি বছর বাংলাদেশ ছাড়াও মালদেভা, কলম্বিয়া, উত্তর কোরিয়া, সুদান, ইউক্রেন, সিরিয়া, ইসরাইল-ফিলিস্তিন এবং দ্য গ্রেড লেকসকে সংস্থাটি ওয়াচ লিস্টে রেখেছে।
আইসিজির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার যে অভূতপূর্ব সমর্থন পেয়ে আসছিল, তা ক্ষয় হতে চলেছে। ড. ইউনূস এখন প্রকৃত ফলাফল দেখানোর চাপে রয়েছেন। তার সরকার এখন কেবল অন্যান্য রাজনৈতিক শক্তির সাথে সম্পর্কে ফাটল সারানোর জন্য সংগ্রাম করছে না, বরং নিত্যদিনের ব্যবস্থাপনা নিয়ে জনগণের সমালোচনার সম্মুখীন হচ্ছে। নির্বাচনী সুবিধা নেয়ার জন্য রাজনৈতিক দল, ছাত্র নেতৃবৃন্দ, ইসলামি গ্রুপ এবং অন্যান্য প্রধান খেলোয়াড়রা দৌড়ঝাঁপ শুরু করায় সামনের দিনগুলোতে চ্যালেঞ্জ আরো বাড়তে পারে। প্রতিবেশী ভারতের সাথে সম্পর্কে টানাপোড়েন বাংলাদেশের স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে আরো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। ভারত শেষ দিন পর্যন্ত হাসিনা সরকারকে সমর্থন দিয়ে গিয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকারকে ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি যুদ্ধবিধ্বস্ত মিয়ানমার সীমান্তে অস্থিতিশীলতা মোকাবেলা করতে হচ্ছে।
মিয়ানমার ও বাংলাদেশ বিষয়ক ক্রাইসিস গ্রুপের সিনিয়র কনসালটেন্ট থমাস কেইন বলেছেন, বিগত হাসিনা সরকারের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার কারণে অন্তর্বর্তী সরকার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে চাপের মধ্যে রয়েছে। অর্থনীতিকে সঠিক পথে আনতে চলমান প্রচেষ্টার সুফল পেতে বাংলাদেশের মানুষকে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। ভারতের সাথে সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে। যুদ্ধ বিধ্বস্ত মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের অদূর ভবিষ্যতে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ জাতীয় রাজনীতি পদ্ধতি ঢেলে সাজানোর বিরল সুযোগ পাবে, যা এটিকে আরো অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জবাবদিহিমূলক করতে সহায়তা করবে। সংস্কারের জন্য গঠিত কমিশনগুলো শত শত প্রস্তাবসহ প্রতিবেদন দিতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিদেশী অংশীদারদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তারা কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা দেয়ার মাধ্যমে সংস্কার প্রক্রিয়াকে সহযোগিতা করতে পারে, যাতে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশকে একটি নির্বাচনের দিকে নিয়ে যেতে পারে। ভূরাজনৈতিক ক্ষেত্রে ইইউর জন্য বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও বাণিজ্যিক অংশীদারিত্ব উন্নত করার সুযোগ ইইউ নিতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement