নির্বাচন ইস্যুতে কর্মসূচি ও ঘোষণাপত্র সংশোধনে দেয়া হবে প্রস্তাব
- মঈন উদ্দিন খান
- ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৩৪
নতুন কর্মসূচিতে যাচ্ছে বিএনপি। রমজানের আগে ফেব্রুয়ারিতে দ্রব্যমূল্য কমানো ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পৃথকভাবে এই কর্মসূচি দেয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকাসহ সারা দেশে সমাবেশ। শিগগিরই কর্মসূচির তারিখ ঘোষণা করা হবে।
গত সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
দ্রুত নির্বাচনের জন্য বিএনপি গত কয়েক মাস ধরে যে দাবি জানিয়ে আসছিল, সে লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে চাপে রাখতে মূলত সমাবেশের কর্মসূচি দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি রমজানের আগে দ্রব্যমূল্য নিয়ে দুর্ভোগে থাকা জনগণের পাশে থাকতে এ কর্মসূচি দেয়া হবে। মার্চ মাসের শুরুতে বাংলাদেশে রোজা শুরু হচ্ছে।
বিএনপি গত কয়েক মাস ধরে একটি যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনমুখী প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। আগামী জুলাই-আগস্টের মধ্যেও নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব বলে মনে করছে দলটি এবং এ ব্যাপারে তাদের অবস্থানও ইতোমধ্যে স্পষ্ট করেছে। অবশ্য সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে যেকোনো সময় নির্বাচন হতে পারে। তবে বিএনপি আগামী বছরের জুন পর্যন্ত সময়কে নির্বাচনের জন্য ‘খুবই অতিরিক্ত সময়’ বলে মনে করছে। দলটির অভিমত, নির্বাচনের জন্য এত সময়ের দরকার নেই। বিএনপি মনে করছে, ন্যূনতম সংস্কার করে একটি অবাধ-সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব এবং সেটি জুলাই-আগস্টেই সম্ভব। জানা গেছে, জুলাই-আগস্টে নির্বাচনের দাবিটা মূলত সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য করছে বিএনপি। দলটি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন প্রত্যাশা করছে। জানা গেছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ছাত্রদের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ছাত্ররা বিএনপির কাছে ওই ঘোষণাপত্রের যে খসড়া পাঠিয়েছে, সেটা নিয়ে বিএনপি নেতারা আলোচনা করেছেন। এই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন নিয়ে বিএনপির প্রশ্ন থাকলেও ছাত্রদের এই উদ্যোগকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করতে চায় না দলটি। সে কারণে ছাত্রদের প্রস্তাবিত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রণয়নের উদ্যোগকে সম্মান জানিয়ে বাস্তবতার নিরিখে খসড়ায় প্রয়োজনীয় সংস্কার ও পরিবর্তন আনছে বিএনপি।
বিএনপি নেতারা মনে করেন, বাহাত্তরের সংবিধান যে মূলনীতির ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে, সেই মূলনীতি স্বাধীনতাযুদ্ধের মাধ্যমে পাওয়া। সে ক্ষেত্রে বাহাত্তরের সংবিধান বাতিলের কোনো সুযোগ নেই। সেখানে যদি কোনো পরিবর্তন, পরিবর্ধন বা সংশোধন প্রয়োজন হয়; সেটা করা যেতে পারে। তাই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির ছাত্রনেতারা ঘোষণাপত্রে বাহাত্তরের সংবিধানকে বাতিল করার যে ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন, সেটি যুক্তিসঙ্গত নয় বলে মনে করে বিএনপি। দলটির অভিমত, মহান মুক্তিযুদ্ধই হবে বাংলাদেশের ভিত্তি। এরপরে বাংলাদেশের আরো অনেক অর্জন রয়েছে। ঘোষণাপত্রে সেগুলোরও প্রসঙ্গ থাকবে। এ ছাড়া গণতন্ত্রের জন্য গত ১৭ বছরে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের যে সংগ্রাম, ত্যাগ-ঘোষণাপত্রে সেগুলোও সংযুক্ত করবে দলটি।
জানা গেছে, ছাত্রদের প্রস্তাবিত খসড়া ঘোষণাপত্রকে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় মোডিফাই (সংশোধন) করেছে বিএনপি। আজ বুধবার জরুরি ভিত্তিতে আবারো স্থায়ী কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে এগুলো চূড়ান্ত হবে। এরপর সংশোধনকৃত খসড়া নিয়ে যুগপতের শরিকদেরও মতামত নেয়া হবে। পরবর্তীতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রণয়ন নিয়ে সরকার আলোচনায় ডাকলে ‘শরিকদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে তৈরীকৃত খসড়া তাদেরকে দিবে বিএনপি।
ছাত্রদের খসড়া ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, এটি ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে কার্যকর বলে ধরে নেয়া হবে। তবে এটা এভাবে দেয়ার কোনো সুযোগ আছে বলে মনে করে না বিএনপি। দলটির অভিমত, গণ-অভ্যুত্থানের প্রায় ছয় মাস হতে চলেছে। এখন ব্যাকডেট ধরে এটা ঘোষণা করা হাস্যকর হবে। তাই এটা প্রোক্লেমেশন নয়, গণ-অভ্যুত্থানের ডিক্লারেশন হতে পারে। আর রাজনৈতিক মতৈক্যের ভিত্তিতে এটা ঘোষণা করা হবে; সে ক্ষেত্রে কোনো ব্যাকডেটের প্রয়োজন নেই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা