র্যাবের সাবেক ডিজি হারুনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:৫০
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর দায়ে র্যাবের সাবেক ডিজি হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গতকাল রোববার চেয়ারম্যান বিচারপতি মো: গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
ট্রাইব্যুনালে শুনানিতে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি আদালতে বলেন, র্যাবকে ব্যবহার করে সাবেক ডিজি হারুন অর রশীদ ছাত্র-জনতার ওপর নির্যাতন ও হেলিকপ্টার থেকে গুলি করার নির্দেশ দেন বা তার পরিকল্পনা ছিল। তিনি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় অধীনস্থ কর্মকর্তাদের দিয়ে তা বাস্তবায়ন করেন। যার প্রমাণ আমাদের তদন্ত সংস্থা পাচ্ছে। সেই প্রমাণের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য আবেদন করছি। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে তাকে গ্রেফতার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেন। আগামী ২৩ মার্চ আদালত এই মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন এবং অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আদেশের বিষয়ে তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের সময় হেলিকপ্টার থেকে যে গুলি করা হয়েছে, তার প্রমাণ আমাদের তদন্ত সংস্থা পেয়েছে। র্যাবের যে ডিজি ছিলেন হারুন অর রশীদ, তিনি পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি ছিলেন।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, তার বিরুদ্ধে কমান্ড রেসপন্সিবিলিটির অভিযোগ আছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হেলিকপ্টার ব্যবহার করার যে নির্দেশনা ছিল, সেটি তার দেয়া। এ ছাড়া র্যাবের মাধ্যমে যেসব অপরাধ হয়েছিল, তা সবই তার নির্দেশনায় করা। তার অধীনস্থ যে কর্মকর্তারা ছিলেন, তাদের মাধ্যমে তিনি এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন। এ ধরনের সুশৃঙ্খল বাহিনীর কমান্ড রেসপন্সিবিলিটি খুবই কঠিনভাবে মেনে চলা হয়। সুতরাং তিনি কমান্ড রেসপন্সিবিলিটির দায়ে অভিযুক্ত। তিনি বলেন, এ ধরনের অপরাধ যখন র্যাব কর্মকর্তারা করেছিলেন, তখন তিনি তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি বা তাদের কোনো শাস্তি দেননি। এই যে পাওয়ার টু প্রিভেন্ট বা পাওয়ার টু পানিশ, সেটিও তিনি ব্যবহার করেননি। উল্টোদিকে তিনি পরিকল্পনা করেন এবং তা বাস্তবায়ন করেন। এসব অভিযোগই তার বিরুদ্ধে আছে, তদন্ত চলমান আছে। তার অধীনস্ত যে কর্মকর্তারা ছিলেন, তাদেরও আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।
এ দিকে এখন পর্যন্ত ট্রাইব্যুনাল থেকে ৯৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এর অধিকাংশই পুলিশ বাহিনীর সদস্য এবং কিছু আছে সিভিলিয়ান (বেসামরিক)। এর মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার এমপি-মন্ত্রী থেকে শুরু করে ছাত্রলীগের নেতারা আছেন। আর একমাত্র সেনাবাহিনীর অফিসার হিসেবে জিয়াউল আহসান আছেন।
দুই পুলিশ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি : এ দিকে সাভারের আশুলিয়াতে ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যা এবং লাশ পোড়ানোর সাথে সরাসরি জড়িত দুই পলিশ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। তারা হলেন এসআই আবদুল মালেক ও মুকুল। এ বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, আশুলিয়াতে যে লাশ পোড়ানোর ঘটনা ছিল, সেখানকার দুই আসামি কনস্টেবল মুকুল ও এসআই মালেক, তারা দুজনই ঘটনার সাথে যুক্ত। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা আদালতের কাছে অনুমতি চেয়েছিলাম। আদালত তাদের একদিন করে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন। ২৮ জানুয়ারি মুকুলকে ও ৩০ জানুয়ারি মালেককে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা