২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১, ২৩ রজব ১৪৪৬
`

নির্বাচন প্রক্রিয়া কেমন হবে সিদ্ধান্ত জনগণের : অধ্যাপক ইউনূস

সুইজারল্যান্ডের দাভোসে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর ক্লস স্কুয়াবের সংলাপে অংশ নেন : পিআইডি -


অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সরকার নির্বাচন আয়োজনের অপেক্ষায় রয়েছে, তবে এখন দেশের জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে প্রক্রিয়াটি কেমন হবে। তারা কি ছোট পরিসরের সংস্কার কর্মসূচিতে যাবে নাকি দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার চাইবে। বাংলাদেশের নাগরিকরা যেন কোনো বাধা বা হুমকি ছাড়াই অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন সেই প্রক্রিয়া তৈরি করার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) প্রতিষ্ঠাতা ক্লাউস শোয়াবের সাথে বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে বৈ কে এ কথা বলেন ড. ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যদি মানুষ দ্রুত সংস্কার চায়, তাহলে আমরা এ বছরের শেষ নাগাদ নির্বাচন করার লক্ষ্য নিয়েছি। আর যদি বলে, না, আমাদের দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার দরকার, তাহলে আমাদের আরো ছয় মাস সময় লাগবে।’
ড. ইউনূস বলেন, গত ১৬ বছরে বাংলাদেশে যারা নতুন ভোটার হয়েছেন, তাদের ভোট দেয়ার সুযোগই হয়নি, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার এজেন্ডা তুলে ধরে ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ৮৪ বছর বয়সী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, দেশের মানুষ কোন ধরনের নির্বাচন চায়, সেটি না জেনে সরকার নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে না।

বর্তমান প্রজন্মকে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রজন্ম আখ্যায়িত করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এই প্রজন্মের অমিত সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তি বর্তমান প্রজন্মকে বদলে দেয়ার কারণে তারা এখন শুধু বাংলাদেশী আর তরুণ নয় বরং সারাবিশ্বের তরুণ প্রজন্মের অংশ হয়ে গেছে।’ তিনি উল্লেখ করেন, এই প্রজন্ম পুরনো বাংলাদেশে ফিরে যেতে চায় না, তাই একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে। তরুণদের কাজের প্রতিটি অংশে ঐকমত্য গড়ে তোলার জন্য একটি ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হচ্ছে। সব রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের ঐকমত্যের ভিত্তিতে ‘জুলাই সনদ’ প্রস্তুত করা হবে। তিনি আরো জানান, তার সরকার বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে। ইতোমধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থায় গতি ফিরে এসেছে।
ড. ইউনূসের বক্তব্যে মুগ্ধ হন ক্লাউস শোয়াব এবং আধা ঘণ্টার আলাপচারিতায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন তিনি। গতকাল শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক এনগেজি ওকানজোর সাথেও বৈঠক করেছেন।

‘থ্রি জিরো’ আন্দোলনের প্রশংসায় আল গোর
সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোর কার্বন নিঃসরণ, সম্পদের কেন্দ্রীকরণ, দারিদ্র্য ও বেকারত্ব দূরীকরণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্যোগে চালু হওয়া বিশ্বব্যাপী ‘থ্রি জিরো’ আন্দোলনের প্রশংসা করেছেন। বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের পাহাড়ি শহর দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে আল গোর অধ্যাপক ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি ‘থ্রি জিরো’ আন্দোলনের প্রশংসা করেন।
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় জলবায়ু কর্মী হিসেবে পরিচিত আল গোর। তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গৃহীত সংস্কার কর্মসূচিকে সমর্থন করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, সাক্ষাৎকালে উভয় নেতা জুলাই বিপ্লব, জলবায়ু পরিবর্তন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ক্ষতিকর প্রভাব হ্রাস, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গৃহীত সংস্কার কর্মসূচি এবং নির্বাচন ও ভূরাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচি এবং একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে সমর্থন করার কথা জানান।
অধ্যাপক ইউনূস তাকে জুলাই অভ্যুত্থানের সময় আঁকা গ্রাফিতি ও দেয়াল চিত্রের ওপর ভিত্তি করে রচিত শিল্পকর্ম সঙ্কলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ বইটি উপহার দেন। আল গোর শিল্পকর্ম সঙ্কলনের বই এবং বাংলাদেশের তরুণদের বিপ্লবী চেতনাকে ‘অসাধারণ’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘আমি বইটির প্রতিটি পৃষ্ঠা মনোযোগ দিয়ে দেখেছি।’

ড. ইউনূসের পরিবার সম্পর্কে ইন্ডিয়া ডট কমের প্রতিবেদন মিথ্যা : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
বাসস জানান, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পরিবার নিয়ে ইন্ডিয়া ডট কমের প্রকাশিত প্রতিবেদনটি মিথ্যা বলে জানিয়েছে তার প্রেস উইং।
প্রেস উইং তাদের যাচাইকৃত ফেসবুক পেজ-সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টসে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রতিবেদনটি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, তার পরিবারের সদস্যদের এবং বাংলাদেশের অন্তর্র্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ভারতের পরিকল্পিত প্রচারণার অংশ।
বিবৃতিতে বলা হয়, ড. ইউনূস হিলারি ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে কোনো অর্থ অনুদান করেননি, যেমনটি ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।
প্রতিবেদনটির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিবৃতিতে বলা হয়, ক্লিনটন পরিবারের সাথে তার বন্ধুত্ব তার মেয়ে মনিকা ইউনূসকে কোনো সুবিধা দেয়নি এবং তিনি কখনোই জো বাইডেনের প্রশাসনে কোনো পদে ছিলেন না।
বিবৃতিতে বলা হয়, হিলারি ক্লিনটন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন ড. ইউনূস লাখ লাখ ডলার ঋণ পেয়েছিলেন বলে প্রতিবেদন প্রকাশিত বক্তব্যও মিথ্যা।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য বিশ্বব্যাংকের কোনো ঋণ চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তে ড. ইউনূসের কোনো ভূমিকা ছিল না।

 


আরো সংবাদ



premium cement
মহিলাবিষয়ক অধিদফতরে শত শত কোটি টাকার দুর্নীতি নির্বাচন প্রক্রিয়া কেমন হবে সিদ্ধান্ত জনগণের : অধ্যাপক ইউনূস ট্রাম্প নিয়ে ভারতের উচ্ছ্বাসে কি ভাটা? সীমান্তে বিএসএফের বিশেষ সতর্কতা জারি পরিস্থিতি থমথমে সবজির বাজার নিয়ন্ত্রণে, ঊর্ধ্বমুখী চাল-মুরগির দাম মাওনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে দেড় ঘণ্টা মাটিতে পড়েছিলেন আমিনুল পশ্চিমতীরে হামলা বাড়ানোর হুমকি ইসরাইলের লন্ডন ক্লিনিকের ছাড়পত্র পেয়েছেন খালেদা জিয়া দুর্নীতি ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে : ডা: শফিকুর রহমান বহিরাগত শ্রমিকদের তাণ্ডবে দেশ ছাড়ছেন ল্যাভেন্ডার গার্মেন্টের চীনা নাগরিকরা গুজব ছড়ানো হচ্ছে আমরা ভালো আছি : আসিফ নজরুল

সকল