বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ বৈষম্যমূলক

‘সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ-২০২৫’ বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন। তিনি বলেন, এই অধ্যাদেশ আইনজীবী সমাজকে হতাশ করেছে। এখানে কোনো আইনজীবী প্রতিনিধি রাখা হয়নি। অথচ অধস্তন আদালতের বিচারকদের প্রতিনিধি রাখা হয়েছে। এটা বৈষম্যমূলক। আমি এই অধ্যাদেশ সংশোধনের দাবি জানাচ্ছি। গতকাল সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন বলেন, নিম্ন আদালতের প্রতিনিধি কিন্তু এখানে আছে। তবে বেশির ভাগ বিচারক যেখানে আইনজীবী থেকে নিয়োগ হয়। তাদের কোনো প্রতিনিধি নেই। এটা শুধু আমাকে নয়, আইনজীবী সমাজকে হতাশ করেছে। তিনি আরো বলেন, সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগ করবেন আইনজীবীদের থেকে আর সেখানে বার কাউন্সিল, সুপ্রিম কোর্ট বারসহ আইনজীবীদের কোনো প্রতিনিধি নেই। অথচ নিম্ন আদালতের বিচারকদের প্রতিনিধি থাকবে, এটা বিশ্বাস করা যায়।
আইনজীবীদের প্রতিনিধি থাকলে বুঝতে পারতেন সেই লোকটা প্র্যাকটিস করে। ভালো আইনজীবী, তাহলে এটার মধ্যে আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে পারতেন। কিন্তু আমরা আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে পারছি না।

উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগে ২১ জানুয়ারি অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার। সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫’ শীর্ষক এ অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি বাছাই ও প্রধান বিচারপতি কর্তৃক রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ প্রদানের উদ্দেশ্যে অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি হবেন সাত সদস্যের উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের এই কাউন্সিলের চেয়ারপারসন। কাউন্সিলের সদস্যরা হলেন, আপিল বিভাগে কর্মে প্রবীণতম বিচারক, হাইকোর্ট বিভাগে কর্মে প্রবীণতম বিচারক, বিচার-কর্ম বিভাগ (নিম্ন আদালত) থেকে নিযুক্ত হাইকোর্ট বিভাগের কর্মে প্রবীণতম বিচারক, চেয়ারপারসনের মনোনীত আপিল বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, অ্যাটর্নি জেনারেল এবং চেয়ারপারসনের মনোনীত একজন আইনের অধ্যাপক বা আইন বিশেষজ্ঞ। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সাত সদস্যের এই কাউন্সিল যাচাই-বাছাই করে বিচারক নিয়োগের সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন। তবে রাষ্ট্রপতি চাইলে কারণ উল্লেখ করে কাউন্সিলের সেই সুপারিশ থেকে কারো নাম ফেরত পাঠাতে পারবেন।