২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯ মাঘ ১৪৩১, ২২ রজব ১৪৪৬
`

আইএমএফ ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড় পেছালো

-


আগামী মার্চের আগে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ পাচ্ছে না বাংলাদেশ। এই কিস্তির অর্থ ছাড় অনুমোদনের জন্য আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের সভায় উঠার কথা ছিল। তবে সংস্থাটির বোর্ড সভা পিছিয়ে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশের জন্য ঋণ ছাড়ের বিষয়টি পিছিয়ে গেছে। এখন নতুন করে আগামী ১২ মার্চ আইএমএফ’র বোর্ড সভায় তা অনুমোদনের জন্য উঠবে।
এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেছেন, আইএমএফ’র চতুর্থ কিস্তি পেতে বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। শর্তগুলোর মধ্যে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের শর্ত ও ডলার দর বাজারে ছাড়ার বিষয়টি। এখন এই শর্তের কোনোটি পুরোপুরি পরিপালন করা সম্ভব হয়নি। আশা করছি আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে ডলারের বিষয়ে অগ্রগতি হবে এবং রাজস্ব আদায়ও বাড়ানো সম্ভব হবে। মার্চে মাসে ঋণের কিস্তির অর্থ পেতে কোনো সমস্যা হবে না।
এর আগে বাংলাদেশ ঋণের তিনটি কিস্তি পেয়েছে। চতুর্থ কিস্তিতে ৬৪ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার পেতে পারে।

এ দিকে ৪৭০ কোটি ডলারের চলমান এই ঋণ কর্মসূচির আকার আরও ৭৫ কোটি বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছিল বাংলাদেশ। এই অর্থ দিতেও সম্মত হয়েছে আইএমএফ। তবে এ জন্য কর আদায় ও নীতি গ্রহণকারী সংস্থাকে আলাদা করাসহ রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর মতো কিছু কঠোর শর্ত দিয়েছে আইএমএফ।
গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশে আইএমএফের মিশনপ্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, চতুর্থ কিস্তিতে ৬৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার ছাড়ে তারা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। তবে রাজস্ব আয় বাড়ানো সংক্রান্ত একটি কমিশন গঠনসহ কিছু শর্ত পূরণ সাপেক্ষে আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদ সভায় চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে। বোর্ড অনুমোদন দিলে ঋণ ছাড় করা হবে। একই সঙ্গে চলমান কর্মসূচির আওতায় ঋণের পরিমাণ বাড়িয়ে ৫৩০ কোটি ডলার করতেও তারা সম্মত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, আইএমএফের সঙ্গে ঋণ কর্মসূচি শুরু হয় ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি। ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পাওয়া যায়। গত ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। আর গত জুনে পেয়েছে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার। তিন কিস্তিতে আইএমএফের কাছ থেকে প্রায় ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ।

এর আগে, আইএমএফের পক্ষ থেকে গত মাসে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করে, বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি এখনো উচ্চপর্যায়ে রয়েছে। দেশ থেকে যে অর্থ বেরিয়ে গেছে, বিশেষ করে ব্যাংকিং খাত থেকে যে অর্থ বিদেশে চলে গেছে, তা বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ তৈরি করেছে। পাশাপাশি একদিকে রাজস্ব আদায় কমেছে, অন্যদিকে খরচের চাপ বেড়েছে। বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ আরও জোরদার হয়েছে আর্থিক খাতের ধকলের কারণে।
চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে গেল জুলাই-আগস্ট মাসের আন্দোলন, বন্যা এবং সঙ্কোচনমূলক পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেছে আইএমএফ। তবে নীতি শিথিল হলে আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি বাড়ার প্রত্যাশা করছে সংস্থাটি। কঠোর মুদ্রানীতি অনুসরণ এবং সরবরাহ ব্যবস্থায় উন্নতির ফলে মূল্যস্ফীতি কমবে বলে মনে করে আইএমএফ। তবে অর্থনীতিতে গভীর অনিশ্চয়তা এখনও বিদ্যমান বলে মনে করে আইএমএফ।

 


আরো সংবাদ



premium cement