০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২ মাঘ ১৪৩১, ৫ শাবান ১৪৪৬
`

ন্যূনতম সংস্কারের পর নির্বাচন করলে সমস্যা কেটে যাবে : ফখরুল

-

ন্যূনতম সংস্কারের পর নির্বাচন করলেই অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে মনে করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের ‘গ্রন্থ আড্ডা’ অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাকে অনেকে ভুল বুঝে যে, আপনি এতো নির্বাচন নির্বাচন করেন কেনো? বিশেষ করে ছাত্ররা তো এটা বলেই। এখানে নির্বাচন করার কথা বলার কারণটা হচ্ছে একটাই, আমরা বিশ্বাস করি, যেকোনো নির্বাচিত সরকার কিন্তু অনির্বাচিত সরকারের চেয়ে ভালো। আমার এক্সেস থাকে, আমি যেতে পারি, কথা বলতে পারি। এখন আমার সেই জায়গাটা নেই।’ তিনি বলেন, এখনই নির্বাচন করে ফেলতে হবে আমরা তা বলছি না। ন্যূনতম যে সংস্কারটা সেটা করে নিয়ে নির্বাচনটা করলে সমস্যাগুলো অনেকটা সমাধান হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কারের প্রস্তাব আসতে শুরু করেছে। আমার বিশ্বাস যে, প্রধান উপদেষ্টা খুব শিগগিরই এই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদেরকে ডাকবেন, একটা সমাধানের দিকে আসবেন, আলোচনা হবে ঐক্যমত্যের ভিত্তি আমরা একটা জায়গায় পৌঁছাব। তিনি বলেন, নির্বাচনের কথা এজন্য তাড়াতাড়ি বলি যে, নির্বাচনটা হলে দেশের সমস্যাগুলো চলে যা্েব। এখানে আপনার একটা নির্বাচিত সরকার পিপলস ম্যান্ডেট নিয়ে বসবে। এরা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) তো এখনো বসতে পারেনি। জনগণের ভাষাটা তো বুঝতে হবে। সেটা একটা নির্বাচিত সরকার সবচেয়ে ভালো বুঝে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে শহীদ জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী এবং পাঠাগারের ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
ধৈর্য ধরুন : মির্জা ফখরুল বলেন, অনেক ত্রুটি আছে আমি বিশ্বাস করি। অনেক ত্রুটিকে তারা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) তুলে নিয়ে এসেছে, একটা ধ্বংসপ্রাপ্ত জঞ্জাল। আমার ধারণা ছিল না যে, এতো খারাপ হয়ে গেছে। এই পরিবর্তনের পরে আমরা যখন দুই একটা জায়গায় খোঁজ-খবর নেই, অফিস-আদালতে খোঁজ-খবর নেই, সর্বত্র ভয়াবহ কাণ্ড। দুর্নীতি-চুরি, ব্যক্তিগত স্বার্থ ছাড়া আর কোনো চিন্তা নাই সরকারি আমলাদের মতো। বলতে আমি বাধ্য হলাম দুঃখিত।
তিনি বলেন, এই অবস্থার পরিবর্তন একদিনে হবে না, দ্রুত হবে না। ধৈর্য ধরতে হবে, গণতান্ত্রিক একটা স্ট্রাকচার খাড়া হোক, সেই স্ট্রাকচার খাড়া হলে নিশ্চয়ই আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারব। তিনি বলেন, কখনো, ধৈর্য হারাবেন না, কখনো আশা হারাবেন না। কেন জানি না, আমাদের প্রত্যাশা অনেক, কিন্তু ধৈর্য একেবারেই কম। এই তো কয়েক মাস হয়েছে, এর মধ্যে সব পাগল হয়ে গেছে। দেখেন আমাদের এই সরকার অনেক ভুল-ত্রুটি করছে, ভুল তো করবেই কারণ তারা সরকারের ছিল, রাজনীতি করেনি। তারা তো রাজনীতি জানে না, বুঝে না। তাই তাদের তো সেই সময় দিতে হবে।
ফখরুল বলেন, প্রতিদিন এখন মিছিল বের হচ্ছে দাবি দাওয়া দিয়ে, এতদিন কোথায় ছিলে বাবা? তখন তো একটা কথা বলার কেউ সাহস সুযোগ তো পাওনি, সুযোগও পাও নাই। আর এখন যেহেতু একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে সবাই নেমে গেছো।
শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার দরকার : মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে এই সরকার অনেকগুলো সংস্কার কমিশন গঠন করেছেন কিন্তু শিক্ষাবিষয়ক কোনো সংস্কার কমিশন হয় নাই। এটা আগে দরকার ছিল বলে আমি মনে করি। গোটা সমস্যার মূলে ওই জায়গাটা। আমাদের যদি শিক্ষাটা ঠিক না হয়, পরিকল্পনা যদি আমার না থাকে তা হলে আমি কী দিতে পারব বা সমাজে কী পরিবর্তন আমি আনতে পারব?
জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের সভাপতি আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সাবেক ছাত্রনেতা আবদুস সাত্তার পাটোয়ারির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, গবেষক ড. মাহাদী আমিন, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, শিক্ষানুরাগী আফরোজা খানম রীতা, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী, শিক্ষক নেতা জাকির হোসেন, সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট সাইয়িদ আবদুল্লাহ, জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের জহির দিপ্তী, মঞ্জুর এলাহী, কাজী জহিরুল ইসলাম বুলবুল, হাসান আল আরিফ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।


আরো সংবাদ



premium cement