০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২ মাঘ ১৪৩১, ৫ শাবান ১৪৪৬
`
ইসলামী দলগুলোর ঐক্য প্রচেষ্টা

চরমোনাই পীরের সাথে জামায়াত আমিরের সাক্ষাৎ

-

চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান।
গতকাল দুপুর ১২টার দিকে জামায়াতের আমির ডা: শফিকুর রহমান বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই জামিয়া রশীদিয়া আহছানাবাদ মাদরাসা প্রাঙ্গণে যান।
এ সময় তিনি গোটা মাদরাসা ঘুরে দেখেন এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাদের সাথে কথা বলেন।
সাক্ষাৎকালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম সাংবাদিকদের বলেন, জামায়াতের আমিরসহ অন্য নেতারা চরমোনাইতে এসেছেন। আল্লাহ যেন আমাদের ইসলামের পক্ষে, দেশের পক্ষে, মানবতার পক্ষে ভালো কাজ করার তৌফিক দান করেন। আজ স্বাধীনতার ৫৪ বছর চলছে, কিন্তু এতদিন যারা দেশ পরিচালনা করেছিল তাদের দ্বারা আমাদের জাতির প্রত্যাশা বাস্তবায়িত হয়নি। আমরা যেন সবাই পরামর্শভিত্তিক এ দেশটাকে সুন্দরভাবে এবং ইসলামের পক্ষে মানবতার পক্ষে কাজ করতে পারি সে তৌফিক আল্লাহ আমাদের দান করুন।
এ সময় জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, সবাইকে সামনে রেখে বলতে চাই আমরা শুধু আল্লাহর জন্য পরস্পরকে ভালোবাসি, আল্লাহ যেন আমাদের এই ভালোবাসাকে কবুল করেন। দেশের শতকরা ৯১ জন নিজেদের মুসলমান হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। বাকি যারা আছেন তারাও এ দেশের মানুষ, ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের। আর সব মিলিয়েই আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, চরমোনাই পীর সাহেব বলেছেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে যে মর্যাদায় থাকার কথা তা আমরা পাইনি। এটার মূল কারণ দু’টি- একটি দুর্নীতি আর একটি দুঃশাসন। যেখানে আল্লাহ তায়ালার বিধান থাকবে না সেখানে দুর্নীতি অবিসংবাদিত, আর দুঃশাসন সেখানে দুর্নীতির হাত ধরেই আসবে। নামাজে আল্লাহর বিধান মানলাম আর সমাজে মানলাম না সেখানে আল্লাহকে পরিপূর্ণভাবে মানলাম না। কিন্তু আমাদের মনের আকাক্সক্ষা আমরা পুরোটা মানতে চাই। মদিনার বিধানের অধীনে সব ধর্মের মানুষ পূর্ণ নিরাপত্তার পাশাপাশি সব নাগরিক সুবিধা পাবে।
দুই দলের সম্পর্কের উন্নয়নের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে চরমোনাই পীর বলেন, আমরা আগে থেকেই বলে আসছি ইসলামের পক্ষে যেন আমরা একটা বাক্স পাঠাতে পারি। সে চেষ্টা আমাদের আগে পরে চলেছে, এখনো চলবে।
তিনি বলেন, ৫৩ বছর পরে ৫ আগস্টে যে নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি এর মাধ্যমে ইসলামের পক্ষে একটি ভালো ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে। সেই ক্ষেত্রে যদি সময় উপযোগী পদক্ষেপ না নিতে পারি তাহলে এটা আমাদের জন্য অকল্যাণ ও দুর্ভাগ্যের। এজন্য আমরা সবাই একত্র হয়ে দেশ গড়ার ক্ষেত্রে যেন কাজ করতে পারি সেজন্য সবার দোয়া চাই।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক মাঠে যারা কাজ করে তাদের চিন্তার ব্যবধান থাকতেই পারে। আমরা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনে করি ১০০ জনের মধ্যে ৯২ জন মুসলমান এ দেশে বসবাস করে। এখানে বাস্তবতা হলো ইসলামীনীতি আদর্শই রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বাস্তবায়িত হবে। কিন্তু আমরা দেখেছি অন্যান্য রাজনৈতিক স্বার্থান্বেষী মহল নিজের স্বার্থে এবং দলের স্বার্থে আমাদের সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে তারা মসনদে বসেছে। ইসলামের পক্ষে তাদের দ্বারা কোনো ভালো কাজ লক্ষ করিনি বা তারা করেনি, জাতির জন্য পাইনি, দেশের জন্য পাইনি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের চিন্তা হলো আমরা কারো সিঁড়ি হবো না, পরগাছা হবো না, আমরা নিজেরাই ইসলামের পক্ষে একটা শক্তি অর্জন করব এবং ইসলামী শক্তি নিয়ে বাংলাদেশের ক্ষমতার মসনদে থাকবে। আমরা আর ব্যবহৃত হতে চাই না।
আর দুই দলের বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমান পরিবেশে আমরা কাছাকাছি চলে আসছি বলতে পারেন।
এ বিষয়ে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমাদের দাবি তাদের দাবি একই। আমাদের একটা রাজনৈতিক দাবির মধ্যেও কোনো কনফ্লিক্ট নেই, কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমরা কোনো পরামর্শ করিনি, অন্তর থেকে জাতির প্রয়োজনে বের হয়েছে।
মতবিনিময় শেষে উভয় দলের শীর্ষ নেতারা চরমোনাই দরবার শরীফের মসজিদে একসাথে জোহরের নামাজ আদায় করেন।


আরো সংবাদ



premium cement