সংস্কার নিয়ে ডায়ালগ প্রয়োজন
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:১৫
বাংলাদেশ সফররত জাতিসঙ্ঘের নির্বাচনী চাহিদা মূল্যায়ন মিশনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ। গতকাল দুপুরে দলটির নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা: সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো: তাহেরের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল জাতিসঙ্ঘের আবাসিক কার্যালয়ে এ সাক্ষাতে মিলিত হন। এ সময় জাতিসঙ্ঘ মিশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, জাতিসঙ্ঘের রাজনৈতিক ও শান্তি প্রতিষ্ঠা বিষয়ক বিভাগ এবং নির্বাচনী সহায়তা বিভাগের রাজনৈতিক বিষয়ক কর্মকর্তা সারা পিট্রোপাওলি, এশিয়া প্যাসিফিক বিভাগের রাজনৈতিক বিষয়ক কর্মকর্তা আদিত্য অধিকারী এবং ডিজিটাল যুগে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান এবং প্রক্রিয়া (ইউএনডিপি) শান্তিরা কার্যক্রম বিভাগের উপদেষ্টা নাজিয়া হাশেমি।
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।
সাক্ষাৎ শেষে ডা: সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের গণমাধ্যমে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় বলেন, জাতিসঙ্ঘের নির্বাচনী চাহিদা মূল্যায়ন মিশনের আমন্ত্রণে আমরা এখানে এক বৈঠকে মিলিত হয়েছি। তারা কয়েকটি বিষয়ের ওপর জানতে চেয়েছে, নির্বাচনে ইউএনডিপি কী ধরনের সহযোগিতা করতে পারে এবং স্বচ্ছ-ফেয়ার ইলেকশন হওয়ার জন্য কী কী পদক্ষেপ নেয়া দরকার। সে ব্যাপারে আমরা কী ভাবছি। এসব বিষয়ে তারা কথা বলেছে। ইউএনডিপির এ মিশনকে আমরা স্বাগত করি কি না। আমরা বলেছি, যেকোনো আন্তর্জাতিক সংস্থাকে আমরা স্বাগত জানাই সহযোগিতার জন্য। তবে ইন্টারফেয়ার করার জন্য নয়। হস্তক্ষেপ ছাড়া যদি আমাদের কারিগরি ও আর্থিক ব্যাপারে সহযোগিতা করে সেটার জন্য আমরা বলেছি, ইউ আর ওয়েলকাম। নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার ব্যাপারে আমরা আরেকটি কথা বলেছি, প্রত্যেক কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা সংযোগ করার জন্য। কারণ সিসি ক্যামেরা থাকলে নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি বোঝা যাবে। এখানে হিউজ ফান্ডের কথা আসছে। আমরা বলেছি এক্ষেত্রে তোমরা আমাদের সহযোগিতা কর। ইলেকশন স্ষ্ঠুু করার জন্য এটা বড় ধরনের সহযোগিতা হবে। তারা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে জানতে চাইলে আমরা বলেছি, আমরা নীতিগতভাবে অংশগ্রহণমূলক, পক্ষপাতহীন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। এটা আমাদের মূলনীতির ভেতরেই আছে। এরপর তারা বলেছে নির্বাচনের তারিখ কখন হতে পারে? আমরা বলেছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করা যায়। তবে এখানে কিছু জরুরি সংস্কার প্রয়োজন। সংস্কার ছাড়া যদি নির্বাচন হয়, তবে নির্বাচন আগের মতোই হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। জরুরি সংস্কার করা এবং নির্বাচনী কিছু আইন পরিবর্তন করা যেটা নির্বাচনকে আরো শক্তিশালী করবে এবং বেশি অথরিটি দেবে; আমরা সেটার ওপর জোর দিয়েছি। সাংবিধানিক মৌলিক পরিবর্তন আনা দরকার বলেছি। আমরা বলেছি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী কন্টিনিউ করতে পারবে না। প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য থাকবে। এসব বিষয়েও সংস্কার হওয়া দরকার বলে আমরা জানিয়েছি। এ ক্ষেত্রে সংস্কার কমিশন যেসব প্রস্তাব জমা দিয়েছে আমরা মনে করি সেগুলোকে নিয়েই সরকারের রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে অবিলম্বে ডায়ালগ শুরু করা দরকার। ডায়ালগ শেষ করেই কনসেসাস তৈরি করা প্রয়োজন মৌলিক বিষয়গুলোতে। এরপর নির্বাচন শুরু করার জন্য যে সময় দরকার তার ভিত্তিতেই যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন করা দরকার। প্রয়োজনীয় মিনিমাম ও সম্ভবপর সংস্কার করে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন করা। এটা হচ্ছে আমাদের স্ট্যান্ডের কথা। সংস্কার ছাড়া যদি নির্বাচন হয়, তবে নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ থেকে যাবে, এটা আমরা মনে করি। আর সংস্কারের নামে অযথা সময়ক্ষেপণ করা এটাও সঠিক হবে না। মৌলিকভাবে এসব বিষয়ে আজ আমাদের কথা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডা: তাহের বলেন, বিএনপি বাংলাদেশের একটি বড় দল। তাদের একটি দৃষ্টিভঙ্গি আছে এবং তারাও তাদের বক্তব্য রেখেছে। আমরা বলেছি প্রয়োজনীয় রিফর্মস করে যথাসম্ভব নির্বাচন দেয়া। এটাই আমাদের স্ট্যান্ড। আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে তিনি বলেন, জনগণ এবং পরিবেশই এ বিষয়ে বলবে। সেখানে পরিস্থিতি এবং জনগণের যে মতামত এবং ম্যান্ডেট থাকবে সেটাই আমাদের অবস্থান। সেখানে আমাদের বিশেষ কোনো নিজস্ব কিছু নেই। আরেক প্রশ্নের জবাবে ডা: তাহের বলেন, জামায়াতে ইসলামী কোনো দলের পক্ষে বিপক্ষে আইনগত বিষয়ে মতামত দেবে না। এটা জনগণ, সমাজ, পরিবেশ-পরিস্থিতিই সিদ্ধান্ত নেবে। আগে স্থানীয় সরকার না জাতীয় সরকার নির্বাচন সে বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো মতামত ঠিক করিনি। আমরা আলোচনা করব এবং তারপর আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানাব। কেয়ারটেকার সরকারের ব্যাপারে তিনি বলেন, এটা তো একেবারেই আমাদের মৌলিক দাবি। এর আগে যে কেয়ারটেকার সরকারের দাবি উত্থাপন করা হয়েছিল তা জামায়াতে ইসলামীই আগে করেছিল। পরে অন্যান্য দল এটাকে সাপোর্ট দিয়েছে। আমরা এর জন্য আন্দোলন করেছি। এটা সংবিধানে সংযোজিত হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে এটা বন্ধ করে। তারাও আন্দোলন করেছিল আমাদের সাথে কেয়ারটেকার সরকারের জন্য। নিজের সুবিধার জন্য তারা এটি বন্ধ করেছে। কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। এটা আমাদের মৌলিক দাবি এবং এটাই হতে হবে।
চট্টগ্রামে আইনজীবীদের সভা
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রাম আদালতের এপিপি শহীদ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের খুনিদের দোসরদের স্থান চট্টগ্রাম আদালতপাড়ায় হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমির সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী।
গত রোববার রাতে চট্টগ্রামের দেওয়ান বাজারস্থ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর বিআইএ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আইনজীবী দায়িত্বশীল সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অ্যাডভোকেট আব্দুল মালিকের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী নায়েবে আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, মহানগর জামায়াতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ, আইনজীবী সমিতির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, অ্যাডভোকেট শামসুল আলম, অ্যাডভোকেট আব্দুল মোত্তালিব, অ্যাডভোকেট আরিফুর রহমান, অ্যাডভোকেট কবির হোসাইন, অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল গালিব, অ্যাডভোকেট শাহাদাত হোসেন, অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার, অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমদ, অ্যাডভোকেট মোজাফফর আহমদ, অ্যাডভোকেট ফজলুল বারি, অ্যাডভোকেট সাইফুদ্দিন মানিক প্রমুখ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা