ফুটবলের ভালোবাসাকে বাণিজ্যে রূপ দিন : রাষ্ট্রদূতকে ইউনূস
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৪৪
আর্জেন্টিনাকে ফুটবলের আবেগপূর্ণ সম্পর্ককে বাণিজ্য সহযোগিতায় রূপান্তরের আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ফুটবল খেলা ঘিরে বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার মধ্যে যে আবেগপূর্ণ সম্পর্ক তা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষত বাণিজ্য ও দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা সম্প্র্রসারণে কাজে লাগানোর জন্য আহ্বান জানান তিনি।
গতকাল রোববার বাংলাদেশে নিযুক্ত আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত মার্সেলো সেসা ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান।
আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের প্রতি বাংলাদেশীদের ব্যাপক সমর্থনের কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমাদের মধ্যে আবেগপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আমরা এর ওপর ভিত্তি করে আরো এগোতে পারি। মাঠ প্রস্তুত। আমরা এটি অন্যান্য ক্ষেত্রেও নিয়ে যেতে পারি।’
প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশের সাথে তুলার বাণিজ্য বৃদ্ধি ও এ খাতে সম্পূর্ণ মালিকানাধীন বা যৌথ উদ্যোগে বিনিয়োগ এবং জ্বালানি খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনা খুঁজে বের করার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত সেসা প্রধান উপদেষ্টাকে জানান যে, আর্জেন্টিনা ও বাংলাদেশের মধ্যে এখনো সহযোগিতার অনেক ক্ষেত্র অনাবিষ্কৃত রয়েছে, যা উভয় দেশের জন্য বিপুল সম্ভাবনা ধারণ করে। তিনি আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আয়ার্সে বাংলাদেশের দূতাবাস চালুর বিষয়টি বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘দূতাবাস চালু হলে যে সুসম্পর্ক আমাদের রয়েছে, তা আমরা উভয় দেশের কল্যাণে কাজে লাগাতে পারবো।’
রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন যে, বর্তমানে বাংলাদেশের সাথে আর্জেন্টিনার প্রায় ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য রয়েছে। তিনি বলেন, আর্জেন্টিনার সরকার বাংলাদেশ থেকে আমদানি বাড়িয়ে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে সমতা আনার চেষ্টা করছে। বর্তমানে আর্জেন্টিনা বাংলাদেশে সয়াবিন, গম, ভুট্টা, কাঁচা তুলাসহ অন্যান্য পণ্য রফতানি করে এবং বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের তৈরী পোশাক আমদানি করে।
রাষ্ট্রদূত তুলা, যৌথ বিনিয়োগ, ওষুধ শিল্প, টেক্সটাইল, নারী ফুটবলসহ ফুটবল খেলায় সহযোগিতা বৃদ্ধি, ক্ষুদ্রঋণ, বাণিজ্য প্রতিনিধি দল প্রেরণ, এলএনজি ও ধানের রোগ প্রতিরোধসহ বিভিন্ন খাতে নিবিড়ভাবে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। রাষ্ট্রদূত সেসা ২০২৪ সালের ২৯ আগস্ট জোরপূর্বক গুম প্রতিরোধে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক কনভেনশন ফর দ্য প্রোটেকশন অব অল পারসন্স ফ্রম এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্সেস (আইসিপিপিইডি)-এ স্বাক্ষর করার প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেন। তিনি আর্জেন্টিনায় ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা চালু করার জন্য বাংলাদেশের সহযোগিতাও কামনা করেন।
সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারের বিদায়ী সাক্ষাৎ
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নার্ডিয়া সিম্পসন। গতকাল রোববার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় রাষ্ট্রদূত সিম্পসন গত জুলাই ও আগস্ট মাসের স্মরণীয় ঘটনার স্মৃতিচারণ করেন এবং দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার বলেন, ‘এটি আবেগময় ছিল। আমরা বাংলাদেশের মানুষের সাথে এই যাত্রায় ছিলাম। তিনি বাংলাদেশের মানুষকে খুব উদার ও অতিথিপরায়ন হিসেবে অভিহিত করেন এবং বাংলাদেশে তার চার বছরের সময়কে দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা হিসেবে উল্লেখ করেন।
অধ্যাপক ইউনূস রাষ্ট্রদূতকে চলতি বছরের আগস্ট মাসে জুলাই বিপ্লবের প্রথম বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানান। প্রধান উপদেষ্টা জানান, ছাত্র নেতৃত্বাধীন জুলাই বিপ্লবের সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত অন্য রাষ্ট্রদূতদেরও সরকার আমন্ত্রণ জানাবে।
সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
শহীদ আসাদ মুক্তিকামী মানুষের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে আত্মত্যাগকারী শহীদ আসাদ এ দেশের গণতন্ত্রপ্রেমী, মুক্তিকামী মানুষের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তিনি বলেন, ‘তার আত্মত্যাগ আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশের জন্য নিজের দায়িত্ব পালন করতে এবং সত্যের পক্ষে দাঁড়াতে উদ্বুদ্ধ করে। এর প্রমাণ জুলাই-আগস্টে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থান। শহীদের আত্মত্যাগ কখনো বৃথা যাবে না।’
আজ ২০ জানুয়ারি ‘শহীদ আসাদ দিবস’ উপলক্ষে গতকাল দেয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, শহীদ আসাদ দিবস বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিন। তিনি বলেন, পাকিস্তানি শাসকদের বৈষম্যমূলক আচরণ, নির্যাতন ও দমন-পীড়নে বাংলার মানুষ যখন দিশেহারা, তখন বাঙালির মুক্তির দিশারি হিসেবে বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতির স্বাধীনতা আন্দোলন নতুন মাত্রায় রূপ নেয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সামনের রাস্তায় ছাত্র-জনতার চলমান মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্র মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান পুলিশের গুলিতে নিহত হন এবং অনেকে আহত হন। শহীদ আসাদের এ আত্মত্যাগ চলমান আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে।
স্বাধিকারের দাবিতে সোচ্চার সব শ্রেণী-পেশার মানুষ জেল-জুলুম উপেক্ষা করে রাজপথে নেমে আসে। পর্যায়ক্রমে আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর আকার ধারণ করে। সেদিনের সেই আন্দোলন পরবর্তীতে গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। তিনি শহীদ আসাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শহীদ আসাদসহ সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা