গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি একদিন পিছিয়ে কার্যকর
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
শেষ মুহূর্তে জটিলতার অবসান
- যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণার পরও শতাধিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা
- ইসরাইল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করলে হামলা চালাবে হাউছিরা
- ইসরাইলকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করতে দেয়া যাবে না : এরদোগান
ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে গাজায় আটকদের মুক্তি ও যুদ্ধবিরতি শুরুর জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়ে গেছে। কাতারের রাজধানী দোহায় আলোচনার সাথে জড়িত একটি সূত্র মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওসকে এ তথ্য জানিয়েছে। তবে ইসরাইল সরকার আজ শনিবার রাতে এ বিষয়ে অনুমোদন দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর ফলে, রোববারের পরিবর্তে আগামী সোমবার থেকে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে পারে।
ইসরাইলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অনুমোদন দেরি হয়ার কারণে যুদ্ধবিরতি শুরু এবং প্রথম তিনজন বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া রোববারের পরিবর্তে সোমবার পর্যন্ত পিছিয়ে যেতে পারে। এ দিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে কাতারে অবস্থানরত দেশটির আলোচক দল জানিয়েছেন, চুক্তিটি চূড়ান্ত হয়েছে। নেতানিয়াহু বন্দীদের মুক্তি কার্যক্রমের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসরাইলি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভায় বৃহস্পতিবার সকালে এই চুক্তি নিয়ে ভোট হওয়ার কথা ছিল। তবে দোহায় আলোচনা চলাকালে শেষ মুহূর্তে কিছু মতবিরোধ দেখা দেয়ায় চুক্তি স্বাক্ষর একদিন পিছিয়ে যায় বলে দাবি করে ইসরাইল। এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বুধবার রাতে চুক্তি ঘোষণার পর ফিলিস্তিনি বন্দীদের তালিকা নিয়ে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। হামাস তাদের সামরিক নেতাদের মুক্তির দাবি করে, যাদের মধ্যে কয়েকজন আত্মঘাতী বোমা হামলার পরিকল্পনার জন্য বহু বছর ধরে কারাবন্দী। ইসরাইল ও মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই দাবির কারণে আলোচনা নতুনভাবে জটিল হয়ে ওঠে। ইসরাইল চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করে এসব বন্দীর মুক্তি ঠেকায়। তবে হামাস আলোচনায় নতুন করে এই দাবিগুলো তুলে ধরে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত ব্রেট ম্যাকগার্ক, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ এবং কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীরা দোহায় কয়েক ঘণ্টা ধরে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালান।
অপর এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, শেষ পর্যন্ত এটি অপ্রয়োজনীয় সমস্যা হিসেবেই প্রমাণিত হয়। সমস্যার সমাধান হওয়ার পরও চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে কয়েক ঘণ্টা লেগে যায়। এই চুক্তিতে ইসরাইল, কাতার ও হামাসের প্রতিনিধিরা স্বাক্ষর করেছেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ব্রেট ম্যাকগার্ক চুক্তিতে সই করেন। এ দিকে দোহায় আলোচনা চলাকালে নেতানিয়াহুর কট্টর জাতীয়তাবাদী জোট সরকারের দুই মন্ত্রী বেজালেল স্মতরিচ ও ইতামার বেন গভির চুক্তির বিরুদ্ধে ভোট দেয়ার কথা জানান। নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার স্মতরিচের সাথে বৈঠক করে তাকে পদত্যাগ না করার অনুরোধ জানান এবং চুক্তি নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে তার আলোচনার বিষয়ে অবহিত করেন বলে একটি সূত্র জানায়।
বেন গভির এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দেন, যদি মন্ত্রিসভায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদিত হয় তবে তিনি পদত্যাগ করবেন এবং তার দল নেতানিয়াহু সরকারের জোট ত্যাগ করবে। তবে ৪২ দিনের যুদ্ধবিরতির পর ইসরাইল গাজায় পুনরায় অভিযান শুরু করলে তিনি আবার জোটে যোগ দেয়ার ইঙ্গিত দেন। লিকুদ পার্টি এক বিবৃতিতে বেন গভিরের সমালোচনা করে বলেন, তিনি সরকারকে বিপর্যস্ত করার চেষ্টা করছেন। লিকুদ পার্টি দাবি করেছে, চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে গ্যারান্টি দেয়া হয়েছে যে, ইসরাইল যুদ্ধ পুনরায় শুরু করতে পারবে এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র সরবরাহ পাবে। ট্রাম্প প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ গত বুধবার সিএনএনকে বলেন, আসন্ন প্রশাসন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে স্পষ্ট জানিয়েছে যে, হামাস যদি চুক্তির কোনো অংশ ভঙ্গ করে তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের পাশে থাকবে। তিনি আরো বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন নিশ্চিত করবে যে, গাজাকে নিরস্ত্র করা হবে এবং হামাসকে ধ্বংস করা হবে।
ইসরাইলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরাইলি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা শুক্রবার সকালে চুক্তি অনুমোদন দেয়ার জন্য বৈঠকে বসবে। তবে পুরো মন্ত্রিসভা বৈঠকে বসবে শনিবার রাতে। ইসরাইলি আইনে সরকারিভাবে অনুমোদন ছাড়া ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেয়া যায় না। যদি চুক্তি অনুমোদিত হয়, তবে জনসাধারণের কাছে আদালতে আপিল করার জন্য ২৪ ঘণ্টার সময় থাকবে। নেতানিয়াহুর সহযোগীরা বলছেন, নির্ধারিত সময়সূচির কারণে যুদ্ধবিরতি ও বন্দীদের মুক্তি রোববারের পরিবর্তে সোমবার শুরু হবে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম পর্যায়ে ৩৩ জন বন্দীকে মুক্তি দেয়া হবে। এর মধ্যে থাকবেন নারী, শিশু, ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষ এবং ৫০ বছরের নিচের আহত বা অসুস্থ পুরুষ। ইসরাইলের ধারণা, এই ৩৩ জনের বেশির ভাগই জীবিত।
এই প্রথম পর্যায়ে বন্দীদের ধাপে ধাপে মুক্তি দেয়া হবে এবং গাজায় ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার প্রথম দিন থেকেই এটি কার্যকর হবে। প্রথম পর্যায় চলাকালে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) ধীরে ধীরে গাজার সীমানার কাছে একটি বাফার জোনে সরে যাবে। আইডিএফ গাজার কেন্দ্রে নেতজারিম করিডোর এবং গাজা ও মিসর সীমান্তের ফিলাডেলফি করিডরের বেশির ভাগ এলাকা ছেড়ে দেবে। এই সময়ে ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজায় ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হবে। যারা হেঁটে যাবে তাদের নিরাপত্তা তল্লাশি করা হবে না, তবে যানবাহনগুলো কাতারের ও মিসরীয় কর্মকর্তারা তল্লাশি চালাবেন, যাতে ভারী অস্ত্র স্থানান্তর না হয়।
সাত শতাধিক ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেয়া হবে, যার মধ্যে প্রায় ২৭৫ জনকে ইসরাইলি হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল। এ ছাড়া গাজার আরো এক হাজার ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয়া হবে, যাদের আইডিএফ যুদ্ধ চলাকালে আটক করেছিল কিন্তু ৭ অক্টোবরের হামলায় তারা অংশ নেয়নি। ইসরাইলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দীদের চূড়ান্ত সংখ্যা নির্ধারিত হবে হামাস জানালে যে, কোনো বন্দীরা জীবিত আছেন। যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন থেকেই গাজায় প্রতিদিন ৬০০টি সাহায্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করবে, যার মধ্যে ৫০টি জ্বালানি সরবরাহ করবে। পাশাপাশি, গাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের জন্য ২ লাখ তাঁবু এবং ৬০ হাজার মোবাইল বাড়ি সরবরাহ করা হবে।
চুক্তি অনুযায়ী, কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি বাস্তবায়নের জামিনদার হিসেবে কাজ করবে। যুদ্ধবিরতির ১৬তম দিনে, ইসরাইল ও হামাস চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায় নিয়ে আলোচনার শুরু করবে। এই পর্যায়ে বাকি বন্দীদের মুক্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরাইলের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
ফিলিস্তিনিদের দুঃখ-দুর্দশাকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরে আনতে এবং ফিলিস্তিনের ভূখণ্ডে ইসরাইলের দখলাদারির প্রতিবাদে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দেশটিতে নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস। এতে ১ হাজার ২০০ জনের মতো নিহত হন বলে দাবি করে ইসরাইল। সেই সাথে ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যান হামাসের যোদ্ধারা। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে ওই দিন থেকে গাজায় তাণ্ডব শুরু করেছে ইসরাইল, যা এখনো চলছে। ইসরাইলি হামলায় এ পর্যন্ত ৪৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। আর আহত ব্যক্তিদের সংখ্যা অগণিত। এ ছাড়া হামলায় গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার ১৯ লাখই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, যা এ উপত্যকার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ।
যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণার পরও শতাধিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা
ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণার পর থেকে ইসরাইলি বিমান হামলায় ১০১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার তুর্কি সংবাদমাধ্যম টিআরটি এ তথ্য জানিয়েছে। গাজায় ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স সার্ভিসের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, ইসরাইলি বাহিনীর সবশেষ হামলায় ৩১ জন নারী ও ২৭ শিশু রয়েছে।
বুধবার যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হওয়ার ঘোষণা আসার পরও এসব প্রাণহানির ঘটনা ঘটল। মাহমুদ বাসাল নিশ্চিত করেছেন, হতাহতের মধ্যে ৮২ জন গাজার উত্তরাঞ্চলে এবং ১৬ জন দক্ষিণাঞ্চলে নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া খান ইউনুসে ১৪ জন এবং রাফায় দু’জন নিহত হয়েছেন। বাকি পাঁচজন গাজার কেন্দ্রীয় প্রদেশে নিহত হন।
ইসরাইল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করলে হামলা চালাবে হাউছিরা
ইসরাইল যদি যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে তাহলে তাদের ওপর হামলা অব্যাহত রাখবে বলে হুঁশিয়ারি করেছে ইয়েমেনের হাউছি বিদ্রোহীরা। যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতিক্রিয়ায় ইয়েমেনের হাউছিদের নেতা আব্দুল মালিক আল হাউছি বলেছেন, তার বাহিনী গাজায় ১৫ মাস ধরে চলমান যুদ্ধ শেষ করার লক্ষ্যে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ করবে। যদি তা লঙ্ঘিত হয় তবে তাদের হামলা অব্যাহত থাকবে। গাজাযুদ্ধ শুরুর পর থেকে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে ইয়েমেনের উপকূলের কাছে নৌসীমায় ইসরাইল ও তাদের সাথে সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলো লক্ষ্য করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়ে আসছে হাউছিরা। দীর্ঘদিন ধরেই তারা বলে আসছে, ইসরাইল গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করলে তারা তাদের হামলা বন্ধ করবে। তারা উত্তরে শত শত কিলোমিটার দূরে ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলাও চালিয়েছে। ইসরাইলও বেশ কয়েকবার হাউছিদের লক্ষ্য করে ইয়েমেনে হামলা চালিয়েছে। সম্প্রতি গত সপ্তাহে ইসরাইলের যুদ্ধবিমান ইয়েমেনের দু’টি বন্দর ও একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বোমা হামলা চালিয়েছে। এ ছাড়া লোহিত সাগরে বাণিজ্য রক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ২০২৩ সালের হাউছিদের দমনে একটি বহুজাতিক অভিযান শুরু করে এবং অস্ত্র সংরক্ষণের সুবিধা লক্ষ্য করে হুথিদের শক্ত ঘাঁটিতে বারবার বিমান হামলা চালিয়েছে।
ইসরাইলকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করতে দেয়া যাবে না : এরদোগান
ইসরাইলি সরকারকে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করতে দেয়া উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান। তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন এরদোগান। আলজাজিরার বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে মেহের নিউজ এজেন্সি। সংবাদ সম্মেলনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান গাজার জনগণের প্রতি তাদের বাধ্যবাধকতা বজায় রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বকে গাজার জনগণের প্রতি তাদের আইনি ও নৈতিক দায়িত্ব পালন করতে হবে।’ গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে এরদোগান বলেন, ‘ইসরাইলি সরকারকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করতে দেয়া উচিত নয়। তিনি আরো বলেন, ‘৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু নিহত হওয়ার পরও গাজা আত্মসর্পণ করেনি। তাদের দমন করা যায়নি। গাজাবাসীরা নিপীড়কদের কাছে মাথা নত করেনি।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা