পুলিশের চালানো গুলিতেই মুগ্ধের মৃত্যু হয়
ট্রাইব্যুনালে পরিবারের অভিযোগ- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে আলোচিত শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর পরিবারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তার যমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ ও বড় ভাই মীর মাহমুদুর রহমান দীপ্ত গতকাল ট্রাইব্যুনালে এসে এ অভিযোগ দায়ের করেন। পরে মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বলেন, পুলিশের চালানো গুলিতেই মুগ্ধর মৃত্যু হয়। মুগ্ধ গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে একটা বিতর্ক ছিল যে, গুলিটা পুলিশের মধ্যে থেকে করা হয়েছে, নাকি বাইরের কারো করেছে। অথবা স্নাইপার থেকে করা হয়েছে কি না। তবে আমাদের কাছে যে প্রমাণাদি আছে, তার মাধ্যমে বলতে পারি পুলিশের পক্ষ থেকেই এ গুলি চালানো হয়েছে। আমরা যে ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছি সেখানে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে, পুলিশের গুলিতেই মুগ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
বড় ভাই দীপ্ত বলেন, মুগ্ধ যেখানে মারা যায় তার ১০ কদম দূরেই হাসপাতাল ছিল। হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তাররা তাকে স্পটডেড ঘোষণা করেন। সেখানে আমাদের পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। তখন হাসপাতালে ডাক্তাররা আমাদেরকে বারবার বলছিল লাশ নিয়ে যাওয়ার জন্য। কারণ, পুলিশ আসলে পরবর্তীতে আমরা লাশ নাও পেতে পারি। পরে সেখান থেকে ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে আমরা দ্রুত বাসায় লাশ নিয়ে আসি।
তিনি বলেন, মুগ্ধর লাশ কবরস্থ করার সময়ও আমাদের অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। লাশ দাফন করার জন্য পুলিশের এনওসি’র প্রয়োজন হয়। এ জন্য আমরা থানায় গিয়েছি। কিন্তু থানা থেকে আমাদের বলা হয় তাদের এখন কলমের একটি দাগ দেয়ার পর্যন্ত অনুমতি নেই।
দীপ্ত বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসেছি মুগ্ধ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করতে। সে ১৮ জুলাই গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয়। সন্তান হারিয়ে বিগত ছয় মাসে আমাদের বাবা-মা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে গেছেন। আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা ছিল বাবা-মাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার। কিন্তু পারিপার্শ্বিক অনেক কিছুর কারণে ও প্রেসারাইজ সিচুয়েশন যেমন অন্যান্য ভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে বিভিন্ন মানুষের কারণে তারা এখন পর্যন্ত সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপনে আসতে পারছেন না। এটা আমাদের একটি চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, এ ছয় মাসে হত্যাকাণ্ডের বিষয় যতটুকু প্রমাণ বের করা সম্ভব তা আমরা নিজ উদ্যোগেই করেছি। যেহেতু প্রথম দিকে প্রশাসন পুরোপুরি অকার্যকর অবস্থায় ছিল, তাই আমরা নিজ উদ্যোগে এ কাজ করেছি। নিজ উদ্যোগে আমাদের সব ধরনের ভিডিও ফুটেজ, সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করতে হয়েছে।
দীপ্ত আরো বলেন, মুগ্ধ হত্যার বিষয়ে পাওয়া ভিডিওর পুরোটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া হয়েছে। যেহেতু হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজ আছে, তাই দ্রুত বিচারের বিষয়ে আমরা সরকারের কাছে আশা করতেই পারি। আশাকরি সরকার ভিডিওটিকে ফরেনসিকের মাধ্যমে তাদের চেহারা পরিষ্কার করে, একজন একজন করে আসামিদেরকে শনাক্ত করে সুষ্ঠু বিচার সম্পন্ন করবে। আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য শুধু ন্যায়বিচার পাওয়া।
এ সময় তিনি মুগ্ধের নির্মম হত্যাকাণ্ডের ভিডিও সাংবাদিকদের দেখান।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা