জুলাই হত্যা মামলার আসামির পুলিশ প্রটেকশন!
- আবু সালেহ আকন
- ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৪৫
নাম খান মো: আক্তারুজ্জামান ওরফে আক্তার। সবাই তাকে অনলাইন আক্তার হিসেবে চেনেন। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। জুলাই বিপ্লবে একটি হত্যা মামলার আসামি এই আক্তার। ওই মামলায় জামিনে বের হয়ে এখন তিনি চলেন পুলিশ প্রটেকশনে। যেখানেই যান তার বাহিনীর পাশাপাশি পুলিশ তার নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকে। এখনো তিনি দখল বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছেন। সর্বশেষ গত ১৪ জানুয়ারি তিনি দেশবরেণ্য আলেম মুফতি কাজী ইব্রাহিমের ওপর হামলা চালিয়েছেন দলবল নিয়ে।
অবৈধ দখল, জালিয়াতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে অনলাইন গ্রুপ নামে আবাসন প্রতিষ্ঠানের মালিক আওয়ামী লীগ নেতা আক্তারের বিরুদ্ধে। ৫ আগস্ট পূর্ববর্তী সময়ের সাবেক এক সেনাকর্মকর্তাকে মালিক করে অনিয়মের মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকা কামিয়ে অবৈধভাবে পাচার করেছেন ওই ব্যক্তি। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা সেনানিবাস এলাকার আশপাশে মূল্যবান জমি জালজালিয়াতির মাধ্যমে দখল নিয়ে অনলাইন আক্তার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। আর এই জালিয়াতিতে সহযোগী ছিলেন বরখাস্তকৃত সেনাকর্মকর্তা মো: মজিবুর রহমান। তিনি আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের জিওসি ছিলেন। অনলাইন গ্রুপে তার শেয়ার রয়েছে। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এসএসএফ বাহিনীর প্রধান ছিলেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনলাইন গ্রুপের অপর মালিক মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান ঢাকা সেনানিবাসের পাশে মানিকদী, মাটিকাটা ও ইসিবি চত্বর এলাকায় একক রাজত্ব কায়েম করেন।
ইসিবি চত্বরে অনলাইন সিটি, বিজে টাওয়ার, ওয়াসি টাওয়ারে আনুমানিক ৩০টি ফ্ল্যাট রয়েছে মজিবুর রহমানের। এসব ফ্ল্যাট খান মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামানের কাছ থেকে অবৈধ দখলবাজির সহযোগী হিসেবে উপঢৌকন পেয়েছেন তিনি। ইসিবি চত্বর থেকে পশ্চিমে ব্লুমুন গ্রাম টাওয়ার সংলগ্ন ও মাস্টারটেক এলাকায় কয়েক একর জমির মালিকানা বরখাস্তকৃত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো: মজিবুর রহমানের ও নাম খান মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামানের নামে। তারা অবৈধ দখল করেছেন শহীদ পরিবারের জমিও।
অবৈধ দখলের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ বিদেশে মানিলন্ডারিং করে দেশে ও বিদেশে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন আক্তার। রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএস, ইসিবি, মাটিকাটা, মানিকদী এলাকার সাধারণ জমির মালিকদের কাছে এক আতঙ্কের নাম আক্তার।
জুলাই বিপ্লবে এই আওয়ামী লীগ নেতা আক্তার ছাত্র-জনতার ওপর ব্যাপক নিপীড়ন চালিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গত ৫ আগস্ট মিরপুর ১৪ নম্বরে ফজলু (৩১) নামে এক ব্যক্তি বিজয়োল্লাসের সময় গুলিতে নিহত হন। ওই ঘটনায় ভাসানটেক থানায় একটি মামলা হয়। মামলায় ২২ নম্বর আসামি করা হয়েছে এই আক্তারুজ্জামানকে। জানা গেছে, এই মামলায় আক্তার বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। এখন তিনি পুলিশ প্রটেকশনে চলাফেরা করেন। গত ১১ জানুয়ারি এভারোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের এক উৎসবে তাকে পুলিশ প্রটেকশনে উপস্থিত হতে দেখা যায়। সর্বশেষ গত ১৪ জানুয়ারি এভারোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের হলরুমে টিচার্স-অভিভাবক মিটিং চলাকালে এই আক্তারুজ্জামান দলবল নিয়ে সেখানে প্রবেশ করে দেশবরেণ্য আলেম কাজী ইব্রাহিমের ওপর হামলা করেন।
কাজী ইব্রাহিম গতকাল অভিযোগ করেন, অনলাইন আক্তার যেভাবে অন্যের জমি ও ফ্ল্যাট দখল করেছেন এভাবেই পুলিশ ও সশস্ত্র ক্যাডার নিয়ে এভারোস স্কুলের দখলের চক্রান্তে মেতে উঠেছেন। এয়ারপোর্ট থানা শ্রমিক লীগের সহসভাপতি রানাকে ব্যবহার করে তাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, গত ১৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার স্কুল অডিটোরিয়ামে স্কুলের পরিচালক, শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সামনে অনলাইন আক্তার ওরফে খান আক্তারুজ্জামান পুলিশ ও সশস্ত্র ক্যাডার নিয়ে অশালীন আচরণ করেন এবং হত্যার হুমকি প্রদান করেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে আক্তারুজ্জামানের চারটি মোবাইল নম্বরে চেষ্টা করেও কোনো নম্বরে সংযোগ পাওয়া যায়নি।
এ দিকে, অনলাইন আক্তারের পুলিশ প্রটেকশনে চলাফেরার বিষয়ে জানতে গতরাতে গুলশান জোনের ডিসির নম্বরে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। ভাসানটেকের ওসির নম্বরে ফোন দেয়া হলে তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে জানান।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা