ফ্যাসিস্ট সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিদের অডিও ভিডিও যাচাইয়ের নির্দেশ
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৩০
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও তাদের সহযোগীদের কল রেকর্ড, অডিও এবং মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে জানিয়েছে প্রসিকিউশন। এসব ভয়েস রেকর্ড ও ভিডিও ফুটেজ ডিজিটালি ফরেনসিক করার জন্য সিআইডিকে একটা রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করা হয়। প্রসিকিউশনের এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ ব্যক্তি এবং তাদের অডিও রেকর্ডের সত্যতা যাচাই করতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবং পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
গতকাল সোমবার চেয়ারম্যান বিচারপতি মো: গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো: শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো: মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ ও প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহা এ বিষয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত সিআইডি এবং বিটিআরসিকে অডিওর সত্যতা যাচাই করার নির্দেশ দেন।
শুনানিতে প্রসিকিউশন থেকে বলা হয়, ভয়েস সঠিক আছে কি না তা যাচাই করতে আদালতের আদেশ প্রয়োজন। এ সময় ট্রাইব্যুনাল প্রশ্ন করেন, কী পাওয়া গেছে? জবাবে প্রসিকিউশন থেকে বলা হয়, এনটিএমসি থেকে আমরা গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ড পেয়েছি। এই তথ্যগুলো যাচাই করতে আমরা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি। আলামত নষ্ট হচ্ছে।
শুনানি শেষে আদালত গুরুত্বপূর্ণ কল রেকর্ডের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ফরেনসিক পরীক্ষার অনুমতি দেন। সিআইডি ও বিটিআরসিকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করার নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা ট্রাইব্যুনালে তিনটি আবেদন করেছি। তার মধ্যে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন ছিল। সেই দু’টি আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। আরেকটি হলো, যেকোনো ডিজিটাল ডাটা আদালতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, এই ডিজিটাল ডাটা আদালতে উপস্থাপন করার আগে এটা সার্টিফিকেশনের প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশে সার্টিফাইড অথরিটি হলো সিআইডি। সেখানে তারা ডিজিটাল তথ্যগুলো সার্টিফাই করে যে, এটা সঠিক কি না। সঠিক জায়গা থেকে রেকর্ড হয়েছে কি না, নাকি ভুয়া। এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া আদালতে উপস্থাপনের যোগ্য হয় না। এ ক্ষেত্রে আমরা বিপুল পরিমাণ ডিজিটাল এভিডেন্স পেয়েছি। বিভিন্ন সময় মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ, কল রেকর্ড, মেসেজ, বিভিন্ন সংস্থা, বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে ফুটেজ আমরা পেয়েছি। এখান থেকে বেছে বেছে সেই ভয়েসগুলো, ভিডিও ফুটেজগুলো, মেসেজগুলোকে ডিজিটালি ফরেনসিক করার জন্য সিআইডিকে একটা ফরেনসিক রিপোর্ট দেয়ার জন্য নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করেছি। সেই আবেদনে আমাদের প্রাপ্ত তথ্যগুলোর ওরা সার্টিফিকেশন দেবে।
তাইম ও হৃদয় হত্যায় এসি তানজিল ও কনস্টেবল আকরামকে হাজির করার নির্দেশ : এ দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ইমাম হোসেন তাইম হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতারকৃত পুলিশের এসি তানজিল আহমেদ এবং গাজীপুরের কোনাবাড়িতে হৃদয় হত্যার আসামি পুলিশ কনস্টেবল আকরামকে গ্রেফতার দেখানোর জন্য প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট মূলে হাজির করার আবেদনের ওপরে গতকাল সোমবার শুনানি হয়। শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল আগামী ২০ জানুয়ারি ওই দুই আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রসিকিউশনের পক্ষে এই দুই আবেদনের শুনানি করেন প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ। তিনি বলেন, ৫ আগস্ট সরকার পতনের সময় হৃদয় নামের এক কিশোরকে আট থেকে ১০ জন পুলিশ সদস্য টেনে হিঁচড়ে বের করে আনলে পেছন থেকে একজন পুলিশ সদস্য গুলি করে হত্যা করে। পরবর্তী সময়ে সেই কনস্টেবল আকরামকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি আরো বলেন, ঢাকা শহরের সবচেয়ে বড় ম্যাসাকার ঘটে যাত্রাবাড়ীতে। এসি তানজিল আহমেদ সেখানে উপস্থিত থেকে নির্দেশনা দিয়েছেন। তার ও অন্য অফিসারের নির্দেশনায় সেখানে একটি বড় হত্যাকাণ্ড হয়েছে। ইমাম হোসেন তাইম নামে একজন পুলিশের ছেলেকে সরাসরি গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এসি তানজিল আহমেদ সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা