যানজটে দর্শনার্থীদের ভোগান্তি বিক্রিতে খুশি ব্যবসায়ীরা
- পূর্বাচল (নারায়ণগঞ্জ) সংবাদদাতা
- ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ফুটপাতের পণ্য বিক্রি হচ্ছে। নিম্নমানের পণ্য বিক্রি করায় এবং অধিক দামের কারণে প্রতিনিয়ত ঠকছেন ক্রেতারা। মেলার প্রবেশ পথগুলোতে নিত্যদিনের যানজটের কারণে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন দর্শনার্থী ও ক্রেতারা। বছরের শুরু পহেলা জানুয়ারি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করা হলেও প্রথম ৬-৭ দিন দর্শনার্থী ও ক্রেতা খুব একটা ছিল না। বিশেষ করে গতকাল শনিবার ও গত শুক্রবার ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়ে খুশি হয়েছে বিক্রেতারা। মেলায় খাবারের মান নিম্নমানের হলেও হোটেলগুলোতে ছিল মানুষের প্রচণ্ড চাপ। তবে দোকানিরা সুযোগ বুঝে অধিক দাম রাখায় মানুষের মাঝে ক্ষোভ ছিল বেশি।
গত কয়েকদিন ক্রেতা-দর্শনার্থীদের সমাগম কম থাকার অভিযোগ ছিল রূপগঞ্জের পূর্বাচলে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৯তম আসরে। কিন্তু ছুটির দিন শুক্রবার ও শনিবার ব্যাপক লোক সমাগম ছিল বাণিজ্য মেলায়। মেলায় লোকসমাগম ও বিক্রি বাড়ায় হাসি ফুটেছে ব্যবসায়ীদের মুখে।
বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, তীব্র যানজটে ক্ষোভ ছিল ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের। খাবারের মান, ভাঙা সড়কে ধুলোবালি, ফুটপাতে পণ্য বিক্রিসহ বিভিন্ন অভিযোগও ছিল সবার। মেলায় দর্শনার্থীদের আগমন বাড়ায় তিনশ ফুট, এশিয়ান বাইপাস ও গাজীপুর বাইপাস সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়ে মেলায় আসা দর্শনার্থীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। এ দিকে হাইওয়ে পুলিশ যানজট নিরসনের চেষ্টা করলেও এত লোকের সমাগম সামলাতে তাদের সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়। যানজট এড়াতে মেলার দর্শণার্থীরা বিকল্প পথ হিসেবে রূপসি-কাঞ্চন সড়ক, ডেমরা-কালীগঞ্জ সড়ক, ছনপাড়া চাঁন টেক্সটাইল সড়ক ব্যবহার করতে গিয়েও যানজটের কবলে পড়তে হচ্ছে। মেলায় আসতে গিয়ে তাদের কারো চার ঘণ্টা, কারো তিন ঘণ্টা আবার কারো পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত অতিরিক্ত সময় গুনতে হচ্ছে। একদিকে ধুলোবালি; অন্য দিকে ভাঙা সড়ক। এ সড়কে চলতে গিয়ে অনেক দর্শনার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন।
গাজীপুর থেকে আসা দর্শনার্থী সোহেল রানা জানান, মেলার তৃতীয় দিনে এসে একদম ফাঁকা দেখেছি, কিন্তু শনিবার এসে দেখি মেলায় মানুষের প্রচণ্ড চাপ। মেলা পুরোপুরি প্রস্তুত হওয়ায় আমি খুশি। মনে হচ্ছে মেলা প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
বাণিজ্য মেলায় বেশিরভাগ স্টলেই ছিল উপচেপড়া ভিড়। তবে সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে গৃহস্থালি, ইলেকট্রনিকস, প্রসাধনি, কাশ্মিরি স্টলগুলোয়। এ ছাড়া শিশুপার্ক ও রেস্তোরাঁয় বসার জায়গা ছিল না। শিশুপার্কের ভেতরে রাইডগুলোর টিকিট কাটতে দর্শনার্থীদের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। বেশি লোকের সমাগম হওয়ায় রেস্তোরাঁগুলো খাবারের দাম বেশি নিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন অনেকে।
রূপগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণবাগ এলাকার রাশেদুল ইসলাম জানান, মেলায় হাজী বিরিয়ানি নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিন্তু খেঁাজ নিয়ে জানা যায়, এসব বিরিয়ানির স্টলগুলোর পরিচালনার সাথে আসল প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো সম্পর্ক নেই। এসব স্টল সিন্ডিকেটের লোকজন চালাচ্ছে।
স্টলের দোকানিরা জানান, ২০ ফুট প্রস্থ ৩০ ফুট দৈর্ঘে্যর স্টল বরাদ্দ পেতে ইপিবি থেকে নেয়া বরাদ্দে খরচ হয়েছে মাত্র ৯ লাখ টাকা। কিন্তু আমরা ওই স্টল চালাচ্ছি ১৪ লাখ টাকার চুক্তিতে। মূল মালিক ব্যবসা না চালিয়ে ৫ লাখ টাকা মুনাফা নিয়ে গেছে। এ মুনাফার জন্য ভালো মানের খাবার দিতে পারছি না, কারণ মসলার দাম বেশি, সব পণ্যের দাম বেশি, আর কর্মচারীদেরও খরচ আছে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম জানান, মেলায় খাদ্যবিষয়ক ভেজাল প্রতিরোধে ভোক্তা অধিকারসহ একাধিক টিম কাজ করছে। আমাদের লোকজনও তদারকি করছেন। তবে লোকবল কম, দাম নিয়ে ভোক্তারা অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নরসিংদীর মাধবদী এলাকা থেকে আসা মেহেদী হাসান পারভেজ বলেন, বাণিজ্য মেলায় আসতে দুপুর ২টার দিকে রওয়ানা হই। মেলায় পৌঁছেছি সন্ধ্যা ৬টার দিকে। রাস্তাঘাটের দীর্ঘ যানজটের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছিলাম। মেলা থেকে ফিরতেও একই ভোগান্তিতে পড়তে হবে। বাণিজ্য মেলায় এবার বিক্রি বেশি হবে বলে মনে হচ্ছে।
গেট ইজারাদার প্রতিষ্ঠান ডিজি ইনফোটেক লিমিটেডের ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম বলেন, শীত উপেক্ষা করে গত শুক্রবার ও শনিবার দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। শুক্রবার প্রায় দেড় লাখ ও শনিবার প্রায় ৯০ হাজার লোকের সমাগম হয়েছে। মেলায় আসা দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে এ বছর ই-টিকিটিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যাতে করে দর্শনার্থীরা নির্বিঘ্নে মেলায় প্রবেশ করতে পারে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর সচিব ও বাণিজ্য মেলা পরিচালক বিবেক সরকার বলেন, মেলার সকল স্টল নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। শুক্রবার ছুটির দিন থেকে মেলা পুরোদমে জমে উঠেছে। মেলায় দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা দিতে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রাখা হয়েছে। মেলায় দর্শনার্থীদের আসা-যাওয়ার জন্য ২০০টির অধিক বিআরটিসির শাটল বাস রাখা হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা