১০ জানুয়ারি ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১, ৯ রজব ১৪৪৬
`
এএফপির বিশ্লেষণ

প্রাণ ফিরছে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে

-

বিশ্বের বিভিন্ন নামী ব্র্যান্ডের জন্য তৈরী পোশাক সরবরাহ করে বাংলাদেশ। তবে গত বছর দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার সরকারের পতন আন্দোলন ও তার পরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বাংলাদেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরী পোশাক শিল্প। সে সময় সরকার পতনে এ খাতের শ্রুমিকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তবে এ শিল্প খাতটি এখন অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে শ্রমিকরা জানিয়েছেন, যে কারণে তারা এত ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তাদের সেই লক্ষ্যে এখনো অর্জিত হয়নি। সরকার পরিবর্তনের পরও তাদের জীবনমানের কোনো উন্নতি হয়নি। বাংলাদেশের পোশাকশিল্প নিয়ে এমনই মিশ্র প্রতিক্রিয়া উঠে এসেছে এএফপির বিশ্লেষণে।
বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক প্রস্তুতকারক। বিগত কয়েক মাসে সহিংসতার কারণে বারবার কারখানা বন্ধ হয়ে যায়, এর আগে বিক্ষোভকারীরা আগস্টে দীর্ঘকালীন স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে। তবে উন্নত পরিবেশ এবং অধিক বেতনের দাবিতে পোশাক কারখানাগুলোতে বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। অক্টোবরে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ৪০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতির সতর্ক করে দিয়েছিল। কয়েক ডজন কারখানা বন্ধ হয়ে যায় এবং হাজার হাজার মানুষ চাকরি হারিয়ে ফেলে। কিন্তু সেপ্টেম্বরে পাঁচ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধিতে সম্মত হওয়ার পর, শিল্পটি আবার ঘুরে দাঁড়ায়। স্নোটেক্স কোম্পানির প্রধান এস এম খালেদ, যিনি ২২ হাজার কর্মী নিয়োগ করেছেন, তিনি বলেন, ‘আমরা ভালো করছি।’
বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত ব্র্যান্ডগুলোর জন্য পোশাক উৎপাদন করে এর মধ্যে রয়েছে ফ্রান্সের ক্যারিফোর, কানাডার টায়ার, জাপানের ইউনিক্লো, আয়ারল্যান্ডের প্রাইমার্ক, সুইডেনের এইচএন্ডএম এবং স্পেনের জারাসহ বিভিন্ন নামীদামি ব্র্যান্ড। বাংলাদেশের রফতানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ আসে পোশাক খাত থেকে। গত বছর এ খাত ৩৬ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। এর আগের বছর ৩৮ বিলিয়ন ডলার রফতানির তুলনায় অস্থিরতা সত্ত্বেও তা সামান্যই কমেছে। এস এম খালেদ নামে এই রফতানিকারক বলেন, ‘আমি কমপক্ষে ১৫টি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের সাথে কাজ করছি এবং আমাদের পণ্য ৫০টি দেশে পাওয়া যাবে, অস্থিরতার ঢেউয়ের পর প্রায় সব পোশাক কারখানা পুরোদমে কাজ করছে। আমরা প্রবৃদ্ধির দিকে রয়েছি।’
চাহিদা কমে যাওয়ার মতো চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, বিজিএমইএতে সরকার-নিযুক্ত প্রশাসক আনোয়ার হোসেন বলেন, শিল্পটি আবার শক্তি ফিরে পাচ্ছে। গত বছর জুলাই-ডিসেম্বর মাসে পোশাক শিল্পে ১৩ শতাংশ রফতানি বেড়েছে, বিপ্লবের পরের সময়কাল যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায়।
কিন্তু শ্রমিকরা জানান ভিন্ন কথা। গার্মেন্টকর্মী খাতুন মজুরি বৃদ্ধিকে স্বাগত জানালেও বলেন ওভারটাইম এবং চারজনের পরিবারকে সহায়তা করার জন্য সুবিধাসহ মাসে ১৪০ ডলার আয় করি। মাসে ৮.২৫ ডলার মজুরি বৃদ্ধি চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট নয়। আমাদের কারখানার ভেতরে ভালো সুযোগ-সুবিধা রয়েছে, যেমন টয়লেট, ক্যান্টিন এবং পানির ফোয়ারা। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা পূরণের সময় আমরা ১০ মিনিটও বিরতি পাই না।’
শ্রমিক অধিকার সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ওয়ার্কার্স সলিডারিটি (বিজিডব্লিউএস) গ্রুপের তাসলিমা আক্তার বলেন, শ্রমিকরা ন্যূনতম জীবনযাত্রার মান বজায় রাখতে লড়াই করছে। কারখানার মালিকদের অবশ্যই জীবিকা নির্বাহের মজুরির বিনিময়ে মুনাফা সর্বাধিক করতে চাওয়া বিশ্বব্যাপী ক্রেতাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। পোশাক (কারখানা) মালিকদের আরো দায়িত্ব নিতে হবে এবং আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সাথে আরো ভালোভাবে দরকষাকষি শিখতে হবে। এই শিল্প নতুন নয় এবং সমস্যাগুলো সমাধান করা অসম্ভব নয়।
পোশাক শিল্পের আপাতদৃষ্টিতে আর্থিক সাফল্য সত্ত্বেও বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক আবদুল্লাহ হিল রাকিব সতর্ক করে বলেছেন যে এটি ভঙ্গুর। আমরা এখন পোশাক খাতে যে স্থিতিশীলতা দেখতে পাচ্ছি তা কেবল উপরিভাগে।


আরো সংবাদ



premium cement
কাতারের আমিরের প্রতি তারেক রহমানের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ শিল্প কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরের জন্য তুরস্কের প্রতি আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ১১ জনকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়েছে, পাঠানো হবে আরো ২৮ জন : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মুকসুদপুরে বাসের চাপায় মোটরসাইকেলের ২ আরোহী নিহত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে খুলনার সাবেক কাউন্সিলরকে গুলি করে হত্যা হত্যা মামলার আসামি উত্তরা পূর্ব থানা থেকে পালালো সাবেক ওসি দাবানলে পুড়ছে লস অ্যাঞ্জেলেসের বিস্তীর্ণ এলাকা কিংসের কাছে হারল ক্যাপিটালস শতাধিক পণ্য ও সেবায় বাড়ল শুল্ক-কর বেরোবিতে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৪ দ্বিতীয় জয় চট্টগ্রামের, ঢাকার টানা পঞ্চম হার

সকল