ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধানে মধ্যপ্রাচ্যকে জনগণের ইচ্ছায় চলার ব্যবস্থায় যেতে হবে
- ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ মুসলিম স্কলার ও কমিউনিটি নেতা আজমল মসরুর বলেছেন, ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান করতে মধ্যপ্রাচ্যকে জনগণের ইচ্ছায় চলার ব্যবস্থায় যেতে হবে। সেখানকার কয়েকটি দেশ ইসরাইলকে গণহত্যা চালানোর জন্য গোপন সিগন্যাল দিচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করে পাশ্চাত্য সমাজকে টিকে থাকতে হলে পুরো ব্যবস্থায় সংস্কার আনতে হবে। গণহত্যা চালাতে যুদ্ধে ইন্ধন দেয়ার মানবতাবিরোধী কাজ থেকে সরে আসতে হবে। নিজেদের ভেতরের পাহাড়সম বৈষম্যকে দূর করতে হবে।
বাংলাদেশে সফরকালে দৈনিক নয়া দিগন্তকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জনাব মসরুর এ কথা বলেন। উত্তরায় তার বাসায় এই সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক মাসুমুর রহমান খলিলী ও মাল্টিমিডিয়া এডিটর যুবরাজ ফয়সল। জনাব আজমল মসরুর পৈতৃকভাবে ব্রিটেনে বসবাসরত বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ইমাম, ইসলাম প্রচারক ও রাজনীতিবিদ। মূল ধারার বিভিন্ন গণমাধ্যম ও মুসলিম চ্যানেলে তিনি রাজনৈতিক আলোচনা ও কমিউনিটি-বিষয়ক উপস্থাপক হিসেবে সুপরিচিত। মাসরুর ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ইসলামিক সোসাইটি অব ব্রিটেনের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০২৪ সালে নতুন বেথনাল গ্রিন ও স্টেপনি নির্বাচনী এলাকায় স্বতন্ত্র হিসাবে দাঁড়িয়ে ৩০.৫ শতাংশ ভোট নিয়ে দ্বিতীয় হন। জয়ী প্রার্থীর সাথে তার ব্যবধান ছিল দেড় হাজার ভোটের মতো। আজ প্রকাশ হলো তার সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্ব।
প্রশ্ন: আপনি ৫০ বছরের বেশি সময় লন্ডনে কাটিয়েছেন এবং ওখানকার মূলধারার রাজনীতির সাথেও আপনি যুক্ত। আপনার এই লম্বা সময়ের অভিজ্ঞতায় একজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত হিসেবে ব্রিটেনে নেতিবাচক বা ইতিবাচক কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন?
আজমল মসরুর: যারা বিদেশে বসবাস করি আমাদের সবচাইতে বড় সমস্যা হলো আমাদেরকে তারা বিদেশী বলে, ৫০ বছর পরেও বিদেশী বলে। এখানে আমাদের দায়িত্ব হলো জোরালো গলায় বলা যে আমরা বিদেশী নই। আমাদেরকে যখন তারা এথনিক মাইনরিটি বলে তখন আমরা জোরালো গলায় বলি আমাদের মাইনরিটি স্ট্যাটাস কখন শেষ হবে? আমার বাবা ইংল্যান্ডে আসেন ১৯৫৬ সালে। আমি ৫০ বছর এ দেশে বড় হলাম, তারপর আমাকে মাইনরিটি ডাকবা না, আই এম পার্ট অব দ্যা মেজরিটি। এই আইডেন্টিটি জোর গলায় বলাটা হচ্ছে আমাদের প্রথম কাজ। এটা হচ্ছে আমাদের রিয়েল স্ট্রেন্থ। দ্বিতীয়ত: আমি আমার আইডেন্টিটির প্রতি খুবই কমফর্টেবল। আই এম ভেরি কমফর্টেবল এজ এ মুসলিম এবং ভেরি কনফিডেন্ট এজ বাংলাদেশী অ্যান্ড ব্রিটিশ। এর মধ্যে কোনো কনফ্লিক্ট আমি দেখি না।
আর তিন নম্বর হলো ইংল্যান্ডের মতো জায়গায় বসে আমাদের অধিকার আদায় করার জন্য সংগ্রাম করতে হবে। আমাকে কাজ করতে হবে, আমার বাড়ি বানাতে হবে। ইকোনমিক্যালি আমাকে অ্যাক্টিভ হতে হবে, সোশ্যালি আমাকে অ্যাক্টিভ হতে হবে, পলিটিক্যালি ইনভল্ভ হতে হবে। একই সাথে মিডিয়ার সাথে আমাকে এনগেজমেন্ট রাখতে হবে। এগুলো যদি আমি করি তাহলে লোকেরা আমাকে সম্মান দেবে। আমি বাংলাদেশের জনগণকে সমানভাবে রিকোয়েস্ট করবো আপনারা বাংলাদেশী হয়ে মনে করবেন না যে আপনাদের হাতে সব কিছু গড়ে তৈরি করে দেয়া হবে। আপনাদের নিজেদের দেশকে নিজেদের গঠন করতে হবে। এটার জন্য নিজেদের হাতে দেশকে সংস্কার করবেন, ক্লিন করবেন, পলিটিক্যালি ইনভল্ভ হবেন, সোশ্যালি ইনভল্ভ হবেন। আমাদের ইসলামিক হিস্ট্রির মধ্যে গল্প আছে।
খলিফা আমিরুল মুমিনিন আলী রা: তখন বসে আছেন। একটা লোক এসে কমপ্লেন করছে, হে আলী আপনার সময় এত বেশি ফিতনা কেন? যখন আবু বকর ও ওমর ছিলেন তখন উনাদের সময় ফিতনা এতটা ছিল না। আলী একটা সেকেন্ড বিরতি নিয়ে উনাকে বললেন, যখন আবু বকর ও ওমর দুনিয়া শাসন করছিলেন তখন তারা চারপাশে আমার মতো লোক পেয়েছিলেন, আর আমি যখন শাসন করছি তখন তোমার মতো লোক পাচ্ছি। এ জন্য আমাদের মধ্যে ফিতনা বেশি। ইংরেজিতে বলে ‘উই গেট উই ডিজার্ভ’ আমাদের পলিটিক্যাল লিডারশিপ আসে আমাদেরকে রিপ্রেজেন্ট করার জন্য। আমরা যদি নিজেকে সংস্কার না করি প্রফেসর ইউনূস কেন আল্লাহ যদি ফেরেশতা পাঠান আসমান থেকে, তাতেও আমাদের সংস্কার হবে না। এ জন্য বাংলাদেশের জনগণকে আমি বলব আপনাদের সংস্কারের জন্য নিজেদের সংস্কার শুরু করতে হবে এখন থেকে। সব চাইতে দুঃখের ব্যাপার হলো আমি যখন ঢাকা শহরে হাঁটছি আর দেখছি লোকেরা খাচ্ছে আর তাদের খাওয়ার নোংরা ফ্লোরে ফেলছে। তারা কিন্তু আইন মানছে না। ড্রাইভিং করছে আইন ভঙ্গ করছে। এগুলো কি প্রফেসর ইউনূস চেঞ্জ করতে পারবেন। সংস্কার শুরু হতে হবে আমাদের কার্যকলাপ, আমাদের আচার ব্যবহার থেকে। আমরা যারা ইংল্যান্ডের মতো জায়গায় বসবাস করি, আমরা ওইখানে সংস্কার এইভাবেই দেখি। আমরা চাই গভর্নমেন্ট সংস্কার করবে আমাদের ম্যান্ডেট অনুযায়ী।
প্রশ্ন: আপনি কমনস সভার চারটা বা পাঁচটা ইলেকশন করেছেন এবং একসময় লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সাথেও যুক্ত ছিলেন কিন্তু পরে আবার এখান থেকে সরে এসে স্বতন্ত্র নির্বাচন করেছেন। আর সর্বশেষ ২০২৪ সালে যখন নির্বাচন করলেন তখন জয়ের প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। আসলে এথনিক মাইনরিটি যেটা বললেন ব্রিটিশ রাজনীতিতে তারা নানা ধরনের সমস্যার মধ্যে পড়ে, মেইনস্ট্রিমের রাজনীতি করতে তাদের মূল সমস্যাটা কোথায়?
আজমল মসরুর: ইংল্যান্ডের মতো জায়গায় মূল সমস্যা একটা, ওটা হচ্ছে আমার মুসলমান আইডেন্টি। মুসলমান হিসেবে তারা আমাকে গ্রহণ করতে পারছে না। ব্রিটিশ হিসাবে বাংলাদেশীকে গ্রহণ করতে তাদের কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু আমার ইসলামিক আইডেন্টিটি সমস্যা। আপনি নিশ্চয়ই জানেন আমার আরেকটা আইডেন্টিটি আছে, আমি একজন ইমাম, অনেকে আমাকে বলে যে আপনাকে দেখতে তেমনি মনে হয় না। তাতে অসুবিধা নেই বাট আমি একজন ইমাম, কয়েকটা মসজিদ আমি চালাই, আমি নামাজ পড়াই বিশেষ করে জুমার নামাজ। ৩৫ বছর হয়ে গেল, আমি যখন পলিটিক্সে ঢুকি তখন লোকেরা জানে যে আমি একজন মুসলিম ঢুকছি, আমি শুধু নামধারী মুসলিম না। আমি আসলেও কথা দিয়ে কার্যকলাপ দিয়ে ইসলাম প্রচার করি এবং ইসলাম নিজের লাইফে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করি।
এটা কিন্তু ব্রিটেনের মতো জায়গায় অথবা ইউরোপ আমেরিকাতে এক্সেপ্ট করতে চায় না। এটা আমাদেরকে ম্যানেজ করতেই হবে, আমাকে ম্যানেজ করতে হবে। এটা ম্যানেজ করার জন্য প্রথমে আমি বিশ্বাস করি যে মেইনস্ট্রিম পার্টি পলিটিক্স আমাদের করা দরকার। সবাইকে সেখান থেকে বের হয়ে আসলে চলবে না, কিছু ব্যক্তিকে থাকতে হবে। আমি লিবারেল ডেমোক্র্যাট পার্টির আগে লেবার পার্টিতে জয়েন করেছিলাম। টনি ব্লেয়ার আমাদের দেশকে যখন ইরাক ওয়্যারে নিয়ে গেল তখন আমি ওই পার্টি থেকে রিজাইন দিয়ে চলে আসি, আর লিবারেল ডেমোক্র্যাট দলে জয়েন করি। তাদের পক্ষ থেকে আমি একবার ইলেকশন করে সেকেন্ড হয়েছি। তাদের কাছ থেকে রিজাইন দিয়ে চলে আসলাম এই কারণে যে তারা ফিলিস্তিনের ব্যাপারে কিছু করতে প্রস্তুত ছিল না। যখন তারা কোয়ালিশন গভর্নমেন্টে ছিল তখন ২০১২ সালে আমি গাজায়। আর বম্বিং করে আমার হোটেলকে ধ্বংস করে দেয় ইসরাইলি এয়ারফোর্স। তখনকার ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার লিবারেল ডেমোক্র্যাট পার্টির লিডার আমার পার্সোনাল ফ্রেন্ড, আমি তাকে ফোন করে বলেছি আমার হোটেল তারা ভেঙে দিয়েছে আমি এখন রাস্তায়, তুমি কিছু বলো। সে আমার ফোনের উত্তর দেয়নি।
আমি লন্ডনে এসে অন প্রিন্সিপাল অন দ্যা বেসিস অব গাজা রিজাইন করেছি। তারপর থেকে আমি কোনো পার্টি পলিটিক্সে ঢোকিনি এই কারণে যে আমি দেখছি যে, মোরাল গ্রাউন্ড নিয়ে তারা কাজ করছে না। সেভেন অফ অক্টোবর ইনসিডেন্ট এর পর যখন গাজা যুদ্ধ শুরু হলো গাজার মুসলমানদেরকে জেনোসাইড শুরু করল তখন আমরা সবাই চিন্তা করলাম যে আমাদের কিছু করার দরকার। তখন আমি আবার নির্বাচনে গেলাম এবং ইন্ডিপেন্ডেন্টলি দাঁড়ালাম গাজার লোকদের জন্য। এতে লোকদের বিরাট সাড়া পেলাম, এক দেড় হাজার ভোটের কারণে আমি জয়ী হতে পারিনি। আমি এখনো মেইনস্ট্রিম পলিটিক্যাল পার্টিতে ফিরে যেতে প্রস্তুত, কিন্তু একটা কন্ডিশন হলো আমি মুসলিম এবং আমার ইসলামিক আইডেন্টিটিকে তোমাদের এক্সেপ্ট করতে হবে, আমি ওইটাকে কম্প্রমাইজ কখনো করবো না।
প্রশ্ন: আপনি গাজা ইস্যুর কথা বললেন, এখন মুসলিম বিশ্বের সবচাইতে আলোচিত ফোকাল পয়েন্ট হচ্ছে ফিলিস্তিন বা গাজা। আপনি কিভাবে এই সঙ্কটটার সমাধান হবে বলে মনে করেন, যেখানে মুসলিম লিডারশিপে যারা আছেন তাদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক এখন অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। আপনি যেহেতু এটা নিয়ে দীর্ঘ সময় কাজ করেছেন এবং শেষ ব্রিটিশ নির্বাচনে এটা আপনার প্রধান এজেন্ডা ছিল। এখন যে পরিস্থিতি তাতে এই সঙ্কটের কিভাবে সমাধান হতে পারে। এখন কি দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান সম্ভব, নাকি অন্য কোনোভাবে এর সমাধান করতে হবে।
আজমল মসরুর: ফিলিস্তিনের মেইন রুট প্রবলেম হলো মিডল ইস্টার্ন গভর্নমেন্টস। আমি আপনাকে ডাইরেক্টলি বলি সৌদি এরাবিয়ান গভর্নমেন্ট এবং ইউনাইটেড আরবের গভর্নমেন্ট। এবার গাজা থেকে যখন অ্যাটাক হলো ইসরাইলের উপরে, এর প্রতিক্রিয়ায় এই ধরনের জেনোসাইড রেসপন্স কেউ বিশ্বাস করেনি, আশাও করেনি ইসরাইলের কাছ থেকে। বাট এনিথিং ইজ পসিবল হয় সৌদি গভর্নমেন্ট ও ইউনাইটেড আরব এমিরেটসের গভর্নমেন্ট তাদেরকে ইনডাইরেক্টলি পারমিশন দিয়ে দেয়ায়। তাদের সম্ভবত বলা হয়েছে তোমরা যা ইচ্ছা তাই করো। তার কারণ হলো সৌদি গভর্নমেন্ট ও ইউনাইটেড আরব আমিরাতের গভর্নমেন্ট মনে করে ইজিপ্টের মুসলিম ব্রাদারহুড তাদের জন্য সবচাইতে বড় দুশমন এটাকে যেভাবে হোক ধ্বংস করতে হবে। হামাস যেহেতু হচ্ছে মুসলিম ব্রাদারহুড থেকে সৃষ্ট সংগঠন, তাই হামাসকে ধ্বংস করতে হলে গাজাকে ধ্বংস করলে কোনো অসুবিধা নেই। এটা হচ্ছে সৌদি আরব ও ইউনাইটেড আরব আমিরাতের চিন্তাধারা।
গাজা কমপ্লিট ধ্বংস করে ফেলো কিন্তু এজ লং এজ হামাস ধ্বংস হয় আমরা কিছুই বলবো না। এখন যদি হামাসকে ধ্বংস করার পরে আমাদেরকে তোমরা বলো গাজা রিভিল্ড করার জন্য, আমরা গাজা রিভিল্ড করবো। এই ধরনের ইনহিউমেন চিন্তাধারা, তাদের এই ধরনের হিউম্যান রাইটস ভায়োলেশন চিন্তাধারা নিয়ে তারা ইসরাইলকে সাপোর্ট দিয়েছে। এটার সলিউশন যদি আপনি আমাকে বলেন আমি বলবো এর একটা মাত্র সলিউশন হলো ‘টু ডেমোক্র্যাটাইজ সৌদি আরাবিয়া অ্যান্ড ইউনাইটেড আরব এমিরেটস’। এই দুই দেশের রাজকীয় যে সিস্টেম আছে ওইটাকে পরিবর্তন করে যদি ওখানে ফ্রি ইলেকশন হয় ওইখানে জনগণ যদি সত্যিকারভাবে ফ্রিডম পায় তাহলে ফিলিস্তিন ফ্রি হবে। আর যদি ওটা না হয় ফিলিস্তিন কখনো ফ্রি হবে কি না সন্দেহ।
প্রশ্ন: একসময় আপনার এই বক্তব্যগুলোর কারণে সম্ভবত সৌদি আরবে আপনাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছিল, অন্য দিকে আবার যারা উগ্রপন্থী আইসিস অথবা আলকায়দা তাদের পক্ষ থেকেও আপনি মৃত্যুর হুমকি পেয়েছিলেন। এই যে দুটি পক্ষ কেন মুসলিমদের মেইন স্ট্রিমের অর্থাৎ মুসলিম উম্মাহর স্বার্থের সাথে আসছে না। আর কিভাবে এই সঙ্কটের সমাধান করা যায়।
আজমল মসরুর: মিডল ইস্টের সবচাইতে বড় ক্রাইসিস চলছে বর্তমানে। সেখানে দুটা অক্সিসের একটা হচ্ছে সৌদি আরাবিয়া ও ইউনাইটেড আরব এমিরেটসের অ্যালায়েন্স আর আরেকটা হচ্ছে ইরানপন্থী একটা এলায়েন্স। এই দুটা আসলে বড় প্রবলেম। শুধু মিডল ইস্টের জন্য নয়, পৃথিবীর জন্য। যদি আমরা শান্তি চাই এই দুটা পাওয়ারকে আমাদেরকে চ্যালেঞ্জ করতেই হবে। আইসিস হচ্ছে তাদেরই একটা ক্রিয়েশন। এটা হলো একটা সিমটম, ইটস নট অ্যান ইস্যু। আমি আপনাকে একটা উত্তর দেবো হয়তো আপনি এগ্রি করবেন, বাট এগ্রি না করলে অসুবিধা নেই। সৌদি আরবের গভর্নমেন্ট ইউনাইটেড আরব আমিরাতের গভর্নমেন্টের একটা মাত্র ইন্টারেস্ট ইকোনমিক অ্যান্ড পলিটিক্যাল স্ট্রাগল হোল্ড কন্টিনিয়াসলি। তারা সবসময় ভালো থাকতে চায় সবসময় এই রিচনেস তারা ইনজয় করছে। আমি আপনাকে বলি আল সাউদ ফ্যামিলিকে কারা এই রাজত্বে বসিয়েছে। এটা কি আসলেও রাইট যে একটা ফ্যামিলি আপনার কাঁধে বসে সারা লাইফ রুলিং করবে। এটা কেমনে হয়? পাশ্চাত্যের সরকার কিন্তু তাদের এই রুলটা চলে যাক তা কখনো চায় না। এখন সিরিয়া ওপেন হওয়ার পরে দেয়ার ইজ এ পসিবিলিটি। এখন তাদের ভয়ে এসেছে যে সিরিয়াকে যদি আমরা এখন ডিস্টেবিলাইজ না করি তাহলে আমাদেরও পতন চলে আসতে পারে।
ইজিপ্টের জনগণ যখন ফ্রিলি ইলেকশনে পার্টিসিপেট করে মুসলিম ব্রাদারহুডকে জয়ী করে দিলো তখন সৌদি আরবের গভর্নমেন্ট সিসি-কে ব্ল্যাঙ্ক চেক দিয়ে বলছে যেকোনো অবস্থায় যেকোনোভাবে তুমি মুসলিম ব্রাদারহুডকে ধ্বংস করো। লিবিয়াতে গাদ্দাফি পড়ার পরে একই ঘটনা ঘটলো। ওইখানে আরেকটা পাগলকে পয়সা দিয়ে বলল তুমি আনস্টেবল করে রাখো। এটা সুদানে শুরু করছে, সমান প্রবলেম ইয়েমেনে শুরু করছে। আপনি যেদিকে তাকান না কেন মিডিল ইস্টে সব প্রবলেমে দুটি দেশ চলে আসে। একটি সৌদি আরাবিয়া আরেকটি ইউনাইটেড আরব আমিরাত। এখন এই দুইটার মূল উদ্দেশ্য কি তাদের রাজত্ব বজায় রাখা। ইকোনমিক পাওয়ার তাদের হাতে রাখা। সৌদি লোকেরা তাদেরকে যদি না চায় তারা কেমনে তাদেরকে বের করে দেবে, তাদের হাতে অ্যাবসলিউট কন্ট্রোল থাকবে দ্যাটস অল। এটা আসলে মরালি রং, রিলিজিয়াসলি রং, ইকোনমিকলি রং। আমাদের দেশ ব্রিটেন আমেরিকা তাদের স্বার্থ উদ্ধারের কারণে এদেরকে রাখছে। বলছে তোমরা থাকো, আমাদের স্বার্থ উদ্ধার হবে। গত ইলেকশনের পরে আমেরিকার ট্রাম্প বললেন আমি মোহাম্মদ বিন সালমানকে বলছি তুমি কোন ওয়েপেন চাও, যা চাও আমি তা দেবো, আমাকে এটা দিতে হবে, অয়েল দিতে হবে।
ট্রাম্প হচ্ছে অনেস্ট সম্পদ চোর আর বাইডেন হলো ডিসঅনেস্ট চোর। এই দুই সম্পদ চোরের বেস্ট ফ্রেন্ড হলো সৌদি আরব ও ইউনাইটেড আরব আমিরাতের গভর্নমেন্ট। আমাদের সিলেটে একটা কথা আছে, ‘চোরে চোরে আলী এক চোরে বিয়া করে আরেক চোরের শালী’।
এটার মানে হলো দুইটা চোরের মধ্যে একটা অ্যালায়েন্স আছে। এটা হচ্ছে মিডিল ইস্টের পলিটিক্স। এখন ইউনাইটেড কিংডম আমেরিকার মাধ্যমে এই চোরদেরকে ক্ষমতায় বসিয়ে রাখছে। ফিলিস্তিনের সংস্কার, ফিলিস্তিনের ফ্রিডম নির্ভর করে মিডল ইস্টের ফ্রিডমের ওপর। হাউ কুইকলি উই ক্যান ডেমোক্র্যাটাইজ দি এন্টায়ার মিডল ইস্ট- তার উপর।
শেষ পর্ব আগামীকাল
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা