০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১, ৭ রজব ১৪৪৬
`
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা

খালাস চেয়ে খালেদা জিয়ার আপিলের শুনানি শুরু

‘রাজনৈতিক স্কিমের অংশ হিসেবে খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হয়’
-

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় হাইকোর্টের দেয়া ১০ বছরের সাজার রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আপিলের শুনানি শুরু হয়েছে। গতকাল প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগে খালেদা জিয়ার আপিলের আংশিক শুনানি হয়। অসমাপ্ত অবস্থায় আজ বুধবার পরবর্তী শুনানির জন্য রাখা হয়েছে। আজ আপিল বিভাগের কার্যতালিকার দুই নম্বরে খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য রয়েছে।
গত মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বেলা সোয়া ১টা পর্যন্ত খালেদা জিয়ার আপিলের শুনানি হয়। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন, আমিনুল ইসলাম, নাসির উদ্দিন অসীম, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, জাকির হোসেন ভূঁইয়া, মো: মাকসুদ উল্লাহ প্রমুখ। শুনানি শেষে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, রাজনৈতিক ইস্কিমের অংশ হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বেআইনিভাবে পাঁচ বছর সাজা দেয়া হয়।

এ মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার কোনো অভিযোগ নেই, কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই। এ মামলার নথিতে উনার কোনো যোগসূত্র নেই। তারপর রাজনৈতিক ইস্কিমের অংশ হিসেবে খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হয়। সাধারণত আপিল করলে সাজা কমে। আমাদের পাক-ভারত উপমহাদেশের ইতিহাসে এমন দৃষ্টান্ত নেই যে পাঁচ বছরের সাজা ডাবল হয়ে গেছে। সেটা শুধু খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে হয়েছে। তখন একটি রাজনৈতিক ইস্কিম ছিল। খালেদা জিয়া যেন নজিরবিহীনভাবে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতে দেয়া পাঁচ বছরের সাজা বৃদ্ধি করে দশ বছর করে।
তারপরও নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে এ মামলায় তাকে সাজা দেয়া হয়। তিনি বলেন, হাইকোর্ট অনুমানের ওপর ভিত্তি করে তাকে এ সাজা দিয়েছে। অথচ ফৌজদারি মামলায় অনুমানের ভিত্তিতে সাজা দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট রেজিমের সময় এটা ফরমায়েশি রায় ছিল। তিনি আরো বলেন, আমরা বিশ্বাস করি আপিল বিভাগে বেগম খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাবেন।

এর আগে গত ১১ নভেম্বর এ মামলায় হাইকোর্টের দেয়া ১০ বছরের সাজার রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার করা পৃথক দু’টি লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ। একই সাথে তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দেয়া ১০ বছরের সাজার রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ড. মো: আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেন। একই সাথে খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।
পরে একই বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া। ওই বছরের ২৮ মার্চ খালেদার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আবেদনে রুল দেন হাইকোর্ট। ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের আবেদনে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো: মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার সাজা ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement