মসজিদের পাশাপাশি সমাজেরও ইমাম হতে হবে : ডা: শফিক
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:১৮
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, ইমামদের মসজিদের পাশাপাশি সমাজেরও ইমাম হতে হবে। আলেমদের মধ্যে আমরা কোনো বিভেদ করব না। কে আলিয়া, কে কওমি দেখার প্রয়োজন নেই। আল্লাহর হুকুম বাস্তবায়নে আমরা সবাই এক। ওলামায়ে কেরামরা এক হয়ে গেলে দেশ জান্নাতের বাগান হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
গতকাল রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ মসজিদ মিশন আয়োজিত ‘লিডারশিপ ইমাম ট্রেনিং ও প্রশিক্ষণ কর্মশালা’ শীর্ষক প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। মসজিদ মিশনের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওনালা যাইনুল আবেদিনের সভাপতিত্বে ও জেনারেল সেক্রেটারি ড. মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানীর সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম, নয়া দিগন্তের প্রকাশক শামসুল হুদা, ইসলামী ঐক্যজোট একাংশের চেয়ারম্যান মুফতি ইজহারুল ইসলাম চৌধুরী, প্রফেসর ড. রফিকুর রহমান মাদানী, মাওলানা আবু তাহের জিহাদী, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মুফতি মুসা বিন ইজহার, মাওলানা এনামুল হক মুসা, আবু জাফর কাসেমী, মুফতি ফখরুল ইসলাম, মুফতি মিজানুর রহমান, মুফতি ফয়জুল্লাহ আশরাফি, মাওলানা আজীজুর রহমান প্রমুখ।
ডা: শফিকুর রহমান বলেন, আল্লাহতায়ালা মসজিদে নববীকে রাসূল সা:-এর মাধ্যমে সমাজ সংশোধন ও বিশ্ব পরিচালনার মারকাজে পরিণত করেছিলেন। এই মসজিদে নববীই ছিল রাসূল সা:-এর পার্লামেন্ট ও কেবিনেট। এখানে বসেই তিনি সব বিচার করতেন। সেখানে আলাদা কোনো বিচারালয় ছিল না। অথচ এখন বলা হয় মসজিদে রাজনৈতিক আলাপ করা যাবে না। কোনো সালিস-বিচারের কথা বললে মসজিদের বাইরে গিয়ে আলোচনা করেন। এভাবে সমাজ থেকে মসজিদকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
জামায়াত আমির বলেন, সমাজে ইসলামী হুকুমত চালু হলে মানুষের জীবন, সম্পদ ও সম্মান তিনটিই রক্ষা পাবে। ইমামদের কুরআন-হাদিসের আলোকে আলোচনা করতে হবে। সমাজের কোনো বিষয়ে কথা বলা প্রয়োজন সেটি বুঝে খুতবা দিতে হবে। মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্য হয় এমন কোনো কথা না বলাই উত্তম। তিনি ইমামদের শুদ্ধ সালামের রেওয়াজ সমাজে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রত্যেকটি মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে সম্মান করতে হবে। তবেই সমাজে ইসলাম ও শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।
বইয়ের মোড়ক উন্মোচন : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী শহীদ আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ রচিত ‘ইসলামী নেতৃত্বের স্বরূপ’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকার মগবাজারস্থ আল ফালাহ মিলনায়তনে গতকাল এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেন, শহীদ আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ছিলেন একজন আমানতদার ও দক্ষ নেতা। তার সম্মানিত বাবা মাওলানা আবদুল আলী বলেছিলেন, আমি আমার এই ছেলেকে ইসলামের জন্য ওয়াকফ করেছি। শহীদ মুজাহিদ বাবার সেই আকাক্সক্ষার প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছিলেন। অত্যন্ত সততা ও দক্ষতার সাথে তিনি সরকারি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। একজন জাতীয় নেতা ও ইসলামী আন্দোলনের সংগঠক হিসেবে আমাদের জন্য রেখে গেছেন বিশাল অবদান ও অনেক শিক্ষা। কারাভ্যন্তরেও তিনি প্রিয় সংগঠনের কথাই ভেবেছেন। কারাগার থেকে আমাদের জন্য লিখেছেন উত্তম নসিহত সংবলিত বই। আমরা শহীদ আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের জান্নাতুল ফেরদৌস প্রাপ্তির জন্য দোয়া করছি। তার অবদান ও শাহাদাত আল্লাহতায়ালা কবুল করুন।
মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, সাপ্তাহিক সোনার বাংলার চেয়ারম্যান এ কে এম রফিকুন্নবী, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরী আমির আবদুল জাব্বার। পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তৃতা করেন, লেখকের ছেলে, অনুবাদক ও লেখক আলী আহমাদ মাবরুর। উপস্থিত ছিলেন শহীদ আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের সহধর্মিণী, ভাই ও পরিবারের অন্যান্য সদস্য।
মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, শহীদ আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ছিলেন এ দেশের ইসলামী আন্দোলন ও রাজনীতির অন্যতম প্রধান নেতা। তিনি এ দেশে ইসলামী সমাজ বিনির্মাণের আন্দোলনে ছাত্রজীবন থেকে শাহাদত অবধি নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার ও তার সহকর্মী নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বে এ দেশের ইসলামী রাজনীতি ও সংগঠন মজবুত ভিতের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
আধিপত্যবাদী ও ইসলামবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের অবস্থান ছিল আপসহীন ও সংগ্রামমুখর। তার এই আধিপত্যবাদবিরোধী সংগ্রামী ভূমিকার কারণেই তিনি নির্মম জুলুমের শিকার হন। কিন্তু অবর্ণনীয় জুলুম ও দীর্ঘ বন্দিজীবন সত্ত্বেও তিনি তার আদর্শিক অবস্থান থেকে টলেননি। এমনকি আদর্শের ওপর অবিচল থেকেই তিনি শাহাদতবরণ করেছেন।
আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ কারাভ্যন্তরে রচনা করেছেন ‘ইসলামী নেতৃত্বের স্বরূপ’ বইটি। বইটিতে তিনি তার দীর্ঘ রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক জীবনের অভিজ্ঞতালব্ধ আলোচনা পেশ করেছেন। তিনি সংক্ষেপে আলোকপাত করেছেন ইসলামী নেতৃত্বের কাক্সিক্ষত গুণাবলি বিষয়ে। ইসলামী আন্দোলনের সর্বপর্যায়ের নেতৃত্বের জন্য বইটি খুবই প্রাসঙ্গিক ও উপকারী হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বইটির প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান তাফহীম পাবলিকেশনের চেয়ারম্যান রাজিফুল হাসান বাপ্পী। সঞ্চালনা করেন তাফহীমের সেলস বিভাগের প্রধান আমজাদ ইলাহী। স্বাগত বক্তৃতা করেন, শামছুর রহমান ফাউন্ডেশনের সদস্যসচিব মো: ইকবাল হোসেন ও তাফহীম পাবলিকেশনের সম্পাদক মুহাম্মদ আবু সুফিয়ান। উপস্থিত ছিলেন পাবলিকেশনের পরিচালক ওয়াহিদ জামান, সিইও শাহমুন নাকীব ফারাবী, শেয়ারহোল্ডার মামুন আবদুল্লাহ প্রমুখ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা