০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১, ৭ রজব ১৪৪৬
`

সীমান্তে বাংলাদেশীকে মেরে লাশ নিয়ে গেল বিএসএফ

-

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার বড় কেয়ারা সীমান্ত এলাকায় জহুর আলী (৫৫) নামের এক বাংলাদেশী ব্যক্তিকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও সীমান্তের ওপারের ভারতীয় লোকজন পিটিয়ে হত্যা করেছেন বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন। ওই ব্যক্তির লাশ ভারতীয় পুলিশ ত্রিপুরা রাজ্যের খোয়াই মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেছে।
বিজিবি ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত জহুর আলী হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার পশ্চিম ডুলনা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় নিরাপত্তাপ্রহরী হিসেবে চাকরি করতেন। ৫ দিনের ছুটি নিয়ে তিনি ৫ জানুয়ারি বাড়িতে আসেন। ঢাকা থেকে আসার সময় গ্রামের হাটবাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে জহুর আলী অল্প মূল্যে কিছু লুঙ্গি কিনে নিয়ে আসেন। সেগুলো নিয়ে তিনি সোমবার বাড়ি থেকে বের হন। এর পর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। গতকাল মঙ্গলবার সকালে চুনারুঘাটের বড় কেয়ারা সীমান্ত এলাকার লোকজন ভারতীয় সীমান্তের গৌরনগর এলাকায় এক ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় সীমান্ত এলাকায় প্রচারিত হয় যে নিহত ব্যক্তি বাংলাদেশের। এ দিকে ভারতীয় লোকজন লাশটির ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিলে বাংলাদেশের অনেকেই তা জহুর আলীর লাশ বলে শনাক্ত করেন।
নিহত জহুর আলীর স্ত্রী সুফিয়া খাতুন এবং স্থানীয় গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আবদুল মালেক বলেন, তারা সীমান্ত থেকে খবর পেয়েছেন, বিএসএফ ও ওই এলাকার কিছু মানুষ জহুর আলীকে সীমান্ত এলাকা থেকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। পরে তারা লাশ টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যায়। ভারতীয় লোকজন তাদের এ ঘটনা জানান।

চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর আলম বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে সীমান্ত এলাকায় গিয়ে দেখতে পাই, ভারতের খোয়াই পুলিশ নিহত ব্যক্তির লাশ নিতে সীমান্ত এলাকায় গৌরপুরে আসে। পরে তারা এ লাশ ত্রিপুরার খোয়াই হাসপাতালের মর্গে নিয়ে গেছে। সীমান্ত এলাকার লোকজন জহুর আলীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ করেছেন। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।’
এ দিকে বিজিবি হবিগঞ্জ ৫৫ ব্যাটালিয়ন গতকাল সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ভারত সীমান্তে নিহত জহুর আলীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তারা নিশ্চিত হয়েছেন, তিনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। তিনি ঢাকায় একটি কোম্পানির নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন। ৫ জানুয়ারি ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন। ৬ জানুয়ারি কোনো এক সময়ে হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের আওতাধীন গুইবিল বিওপির মানিকভাণ্ডার এলাকার মেইন পিলার ১৯৬৮/এম-এর কাছ দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন।
হবিগঞ্জ বিজিবি-৫৫ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানজিলুর রহমান বলেন, বিএসএফ তাদের জানিয়েছে, এ মৃত্যুর বিষয়ে তারা সেখানকার পুলিশের মাধ্যমে জেনেছে। এর আগে তারা কিছুই জানতেন না। কিভাবে জহুর আলীর মৃত্যু হয়েছে সে বিষয়টি তারাও তদন্ত করছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement