০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১, ৭ রজব ১৪৪৬
`
মতবিনিময়ে ড. তোফায়েল

সংসদের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সুপারিশ বেশি আসছে

-

রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত এবং স্থানীয় সরকারগুলোকে সঠিকভাবে কাজ করার স্বার্থে একীভূত আইন করে সংসদীয় পদ্ধতিতে দলীয় প্রতীক ছাড়া নির্বাচনের কথা বলছেন স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার সুপারিশ বেশি আসছে। এ ছাড়াও তিনি জানান, গত সরকারের আমলে তিন বছরে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ব্যয় হয়েছে ২৩ হাজার কোটি টাকা।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনআইএলজি মিলনায়তনে স্থানীয় সরকার সংস্কার বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ে তিনি এসব কথা বলেন। এতে কমিশনের সদস্য ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ফেরদৌস আরফিনা ওসমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম, নারী উন্নয়ন কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মাশহুদা খাতুন শেফালী, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম, চট্টগ্রামের সাবেক চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট ও সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান (জিবল), লেখক ও মানবাধিকার কর্মী ইলিরা দেওয়ান উপস্থিত ছিলেন।
ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, উপজেলায় ইউনিয়ন না বাড়িয়ে জনসংখ্যা অনুযায়ী ওয়ার্ড বাড়ানো যেতে পারে। স্থানীয় নির্বাচনের জন্য ইসিকে স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে অনুরোধ করতে হয়। কিন্তু এই নির্বাচনের দায়িত্ব ইসির হাতে সাংবিধানিকভাবে দেয়া হলে মন্ত্রণালয়ের প্রভাব থাকবে না। সাংবিধানিকভাবে ইসির কাজ চারটি নির্বাচন করা। সাথে এটি যুক্ত করা উচিত। কমিশন প্রধান বলেন, গত ২০২১ থেকে ২০২৪ সময়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে ২৩ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এটা একদিনে করা উচিত। তাহলে রাষ্ট্রের ব্যয় অনেক কমবে। এটা ৬০০ কোটি টাকায় নেবে আসবে। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের কাজে সংসদ সদস্যদের হস্তক্ষেপ বন্ধ করা, তারা পরামর্শক হিসেবে থাকতে পারে।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মেম্বার পদের ক্ষেত্রে সবাইকে সমান সুযোগ দেয়া উচিত। স্কুল-কলেজের শিক্ষক বা চাকরিজীবীদের সুযোগ দেয়া যেতে পারে। বিশেষ করে বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের নির্বাচনে সুযোগ দিলে তাদের আর্থিক সমস্যা কিছুটা হলেও লাঘব হবে এবং এটা পার্টটাইম হিসেবে তারা কাজ করতে পারবেন। তিনি বলেন, পৌরসভার অবস্থা ভালো না। অনেকের বেতন বাকি। এগুলো বিলুপ্ত করা যায় কি না দেখতে হবে। পৌরসভাগুলোকে ইউনিয়ন পরিষদের সঙ্গে একীভূত করা যায় কি না সেটাও সংস্কার কমিশন ভাবছে।
তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে নাকি জাতীয় নির্বাচন আগে, এ নিয়ে স্থানীয় লোকদের মতামত আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিতে হবে। এক্ষেত্রে একইভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদেরও মতামত একই। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারে নারী প্রতিনিধিরা নানানভাবে বঞ্চিত। কথা বলারও সুযোগ পান না। কাজের ক্ষেত্রও কম। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীদেরও গুরুত্ব দিতে হবে। নারী আসনে নির্বাচন ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে হতে পারে।
তিনি বলেন, এছাড়া বাজেট সংকটের কারণে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিরা কিছু সামাজিক বাস্তবতার মুখোমুখি হন। নির্বাচন নির্দলীয় ও জাতীয় নির্বাচনের আদলে করা হলে এই সংস্কৃতির কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। স্থানীয় সরকারে পার্বত্য জেলাগুলোর ভূমিকা নিয়ে সংস্কারের প্রস্তাব নিয়ে ভাবছে কমিশন।

 


আরো সংবাদ



premium cement