০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১, ৭ রজব ১৪৪৬
`

সাদা পোশাকে গ্রেফতার করতে পারবে না ডিবি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

-

সাদা পোশাকে ডিবি কাউকে গ্রেফতার করতে পারবে না জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব:) মো: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘অভিযানের সময় অবশ্যই নির্ধারিত পোশাক পরিধান করতে হবে, পরিচয়পত্র দেখাতে হবে।’ গতকাল দুপুরে রাজধানীর ডিবি কার্যালয় পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদেরকে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
গত ৫ আগস্টের আগে ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন ইউনিটে টর্চার সেল বা আয়নাঘর ছিল, ডিবিতে এখনো কোনো আয়নাঘর আছে কি না? এমন প্রশ্নের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ডিবি কার্যালয়ে আয়নাঘর বলতে এখানে কোনো কিছু নেই। আর কোনো ধরনের আয়নাঘর থাকবেও না। এখন ডিবি পুকুরটা একটু ময়লা আছে। আমরা তাদের বলেছি পুকুরটা যেন আয়নার মতো করে পরিষ্কার করা হয়। এখানে কোনো আয়নাঘর থাকবে না। এখানে কোনো ভাতের হোটেলও থাকবে না। তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া ডিবি পুলিশদের বলা হয়েছে, তারা সাদা পোশাকে কোনো অভিযান বা আসামি গ্রেফতার করবে না। তারা অবশ্যই ডিবি জ্যাকেট ও আইডি কার্ড পরে অভিযানে যাবে। আইনের বাইরে কোনো কাজ করা যাবে না। সাংবাদিকদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা দেখেন আমরা কোনো দুর্নীতি বা আইন বহিভূর্তভাবে কোনো কাজ করছি না। আপনাদের কাছে যদি আমাদের কোনো দুর্নীতি বা অনিয়মের অভিযোগ থাকে, তাহলে প্রকাশ করে দেন। তবে অবশ্যই সত্য ঘটনা প্রকাশ করবেন।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা ভারতের বিষয়ে অনেক সত্যি সংবাদ প্রকাশ করেছেন। এজন্য আপনারা ধন্যবাদ পাওয়ার উপযুক্ত। আপনাদের সত্য সংবাদ প্রকাশের কারণে ভারতের অপপ্রচার অনেক কমে গেছে। এভাবে আপনারা সত্য সংবাদ প্রকাশ করলে, আমাদের জন্য অ্যাকশন নিতেও সুবিধা হয়।‘ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নের গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাথে আমরা আলোচনা করেছি। আলহামদুলিল্লাহ আগের চেয়ে পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হয়েছে। তবে কিভাবে আরো উন্নতি করা যায়, সে ব্যাপারে আমরা চেষ্টা করছি বলেও জানান তিনি।

ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে গেছে স্বীকার করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘গত কয়েকদিনে আমরা অনেক ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছি। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। পর্যায়ক্রমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।’ লিবিয়াতে বাংলাদেশী প্রবাসীদের আটকে রেখে নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায় করা হচ্ছে, এমন তথ্যের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যারা লিবিয়া গিয়ে আটকে আছে, তারা কিন্তু আমাদের অনেক বড় সোর্স অফ ইনকাম। তারা অনেক কষ্ট করে আমাদের দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। তারা আমাদের বড় সম্পদ। তাদের জন্য আমরা সর্বোচ্চ কাজ করার চেষ্টা করছি। তবে তথ্য প্রয়োজন। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ দায়ের করার অনুরোধ জানান তিনি।
টেকনাফ সীমান্ত এলাকায় প্রচুর অপহরণের ঘটনা ঘটছে, এ ব্যাপারে আপনারা কি পদক্ষেপ নিচ্ছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘টেকনাফ সীমান্ত এলাকায় যতজন অপহরণের শিকার হয়েছিল। তাদের সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছে। আপনারা জানেন, মিয়ানমারের আরাকান আর্মি বাংলাদেশ সীমান্তের মিয়ানমারের এলাকা দখল করে রেখেছে। সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমার সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এখন আমাদের দু’পক্ষের সাথেই যোগাযোগ রাখতে হচ্ছে। তিনি বলেন, এখন মিয়ানমার সরকারের সাথে আমরা সীমান্ত নিয়ে কোনো বৈঠকে বসতে পারছি না। আবার আরাকান আর্মি কোনো স্বীকৃতি পায়নি। ফলে আমাদের দু’পক্ষের সাথে যোগাযোগ করে সীমান্ত এলাকা শান্ত রাখার চেষ্টা করছি। আমাদের সীমান্ত আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। সীমান্ত এলাকা অপহরণ ও মাদক চক্র সক্রিয় আছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘মিয়ানমার সীমানা এলাকায় অপহরণ চক্রের পাশাপাশি কয়েকটি মাদক চক্র সক্রিয় আছে। শুধু এক বদি ধরা পড়েছে। তবে বদি চক্রের অনেক সদস্য এখনো সক্রিয় রয়েছে। আমরা সবাইকেই আইনের আওতায় নিয়ে আসতে কাজ করে যাচ্ছি।
৩২১ এসআই সচিবালয়ে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের বিষয়ে উদ্যোগ বা ব্যবস্থা কী হচ্ছে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘পুলিশ একাডেমি থেকে শৃঙ্খলাজনিত কারণে যদি কেউ আউট হয় তাদের আর নেয়া হয় না। এটা শুধু আমাদের পুলিশ একাডেমি বলে নয়; বাংলাদেশের রাজশাহী সারদা পুলিশ একাডেমি খুবই নামকরা একাডেমি, পুরো এশিয়ার মধ্যে। তাদেরকে শৃঙ্খলাজনিত কারণে বের করা হয়েছে; সেটা যে সত্যি তার বড় প্রমাণ হচ্ছে তারা সচিবালয়ে এসে বিশৃঙ্খলা করছেন। তিনি বলেন, তারা যদি শৃঙ্খলই হতেন তাহলে তো তারা প্রপার ওয়েতে বিষয়টা জানাতে পারতেন, তারা আইজিপির কাছে যেতে পারতেন, কিন্তু যাননি।


আরো সংবাদ



premium cement