০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১, ৪ রজব ১৪৪৬
`

জাপানে টেকনিক্যাল ইন্টার্নে অনেক কর্মী যাওয়ার সুযোগ

-

বাংলাদেশ থেকে দক্ষ শ্রমিক তৈরি করে স্বপ্নের দেশ জাপানে টেকনিক্যাল ইন্টার্নে অনেক শ্রমিক পাঠানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে। কিন্তু প্রতি বছর দেশটিতে দক্ষ কর্মী যাওয়ার চিত্র হতাশাজনক। জাপান সরকারের চাহিদা অনুযায়ী শুধুমাত্র ভাষা (লেভেল এন-৪) পুরোপুরি না জানার কারণে এই সেক্টরে শ্রমিক যাওয়ার হার বাড়ছে না।
এমন অভিযোগ করে অভিবাসন ব্যবসায়ী ও এই পেশা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতি বছর জাপানে নেপাল, ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা ও ভারত থেকে ভাষা জানা প্রচুর শ্রমিক দেশটিতে গিয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেলেও বাংলাদেশ তার ধারে কাছেও যেতে পারছে না।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী গত বছর দেশটিতে সহ¯্রাধিক শ্রমিক টেকনিক্যাল ইন্টার্নের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছেন। যা মাসের হিসাবে গড়ে শতাধিক কর্মী। দেশটির শ্রম সেক্টরে বাংলাদেশী দক্ষ কর্মীর চাহিদা এবং বিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্স আনতে হলে অবশ্যই সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ের ট্রেনিং সেন্টারগুলোতে জাপানি ভাষার প্রশিক্ষক নিয়োগ দেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। নতুবা ট্রেনিংয়ের নামে মাসের পর মাস শুধু জাপানগামীরা ওই সব ট্রেনিং সেন্টারে গিয়ে নিয়মমাফিক ভর্তি হতে পারবেন, কিন্তু কাজের কাজ কিছ্ইু হবে না বলে মনে করছেন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাস সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার পর সদ্য জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো: দাউদ আলীর সাথে এই বিষয়ে বক্তব্য নিতে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। জাপানে বাংলাদেশ দূতাবাসের (শ্রম কাউন্সেল বিভাগ) বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে নয়া দিগন্তকে বলেন, আসলে জাপান সরকার কখনো তার দেশে প্রতি বছর কত লোক নেবে সেই কোটা তারা নির্ধারণ করে না। তারা ভাষা জানা লোকদেরকেই শুধু টেকনিক্যাল ইন্টার্নে অথবা ভাষা প্রশিক্ষণ কোর্স করার জন্য জাপানে আসার সুযোগ দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে আমাদের বাংলাদেশ সরকার প্রথম থেকেই ভাষা জানা লোকদের জাপান আসার সুযোগ দিলেও জাপানে এসে এক বছরের ল্যাংগুয়েজ কোর্সে ভর্তি হয়ে কাজ করার সুযোগ থাকলেও সেটি দিচ্ছে না বা দেয়া হয়নি। দেখা যাচ্ছে, পার্শ্ববর্তী দেশ নেপাল থেকে ল্যাংগুয়েজ কোর্স করতে এসে প্রতি বছর হাজার হাজার নেপালি ভাষা শিখে এখানে কাজ করছেন। সপ্তাহে ২০ ঘণ্টার সুযোগও পাচ্ছেন। এতে তাদের থাকা খাওয়ার খরচ উঠে যাচ্ছে। একইভাবে ভারত, শ্রীলঙ্কা এবং ফিলিপাইন থেকে আসা অনেক লোক এই দেশে এসে কাজ করে প্রচুর রেমিট্যান্স তারা তাদের দেশে পাঠাচ্ছেন। আমাদের দেশের ব্যাংকিং চ্যানেলে ভাষা ল্যাংগুয়েজ কোর্সে আসার সুযোগ না থাকায় এই সুযোগটি হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। এই বিষয়ে সুযোগ রয়েছে কি-না সেটি বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্টদের ভেবে দেখা উচিত বলে মনে করছেন দূতাবাসের ওই কর্মকর্তারা। তাহলে দেশ অনেক উপকৃত হবে। এক প্রশ্নের উত্তরে ওই কর্মকর্তা নয়া দিগন্তকে বলেন, জাপান সরকারের চাহিদা হচ্ছে, দেশে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন অথবা জাপান এসে ল্যাংগুয়েজ কোর্সে ভর্তি হয়ে একজন শিক্ষার্থীকে কমপক্ষে এন-ফোর ধাপ পার হতে হবে। তাহলে সে কাজ চালিয়ে নিতে পারবে। কিন্তু এই ধাপ পার হতে আমাদের দেশের বিএমইটির এবং বেসরকারি ট্রেনিং সেন্টারগুলোতে সে মানের প্রশিক্ষক নেই। যার কারণে মাসের পর মাস ট্রেনিং নেয়ার পরও স্বপ্নের দেশ জাপানে আসা বাংলাদেশী দক্ষ কর্মীর হার অনেক কম মনে করছেন তারা।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাপানে টেকনিক্যাল ইন্টার্নে যেতে জাপানি ভাষায় লেভেল এন-৫ পর্যন্ত দক্ষতা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে প্রার্থীর বয়স হতে হবে ১৮-৩০ বছর। শিক্ষাগত যোগ্যতা লাগবে এসএসসি। উচ্চতা থাকতে হবে কমপক্ষে ১৬০ সেন্টিমিটার। ইতঃপূর্বে যারা জাপানে কর্মরত ছিলেন, তারা আবেদনের জন্য যোগ্য হবেন না বলে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো থেকে জানানো হয়েছে।
বিএমইটি থেকে বলা হয়েছে, আইএম জাপান কর্তৃক জাপানে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন হিসাবে পাঁচ বছরের জন্য কাজ করতে আগ্রহী প্রার্থীদেরকে িি.িনসবঃ.মড়া.নফ ওয়েবসাইট থেকে আবেদন ফরম ডাউনলোড করে বিএমইটির ই-মেইল ঠিকানায় পাঠাতে হবে। যোগ্যদের প্রাথমিকভাবে বাছাই পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য মোবাইল ফোনে মেসেজ পাঠানো হবে। নির্ধারিত সময়ে বিএমইটি কর্তৃক কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কাগজ নিয়ে যেতে হবে। এর মধ্যে লেভেল এন-৫ বা জাপানি ভাষায় পর্যাপ্ত দক্ষতা সংক্রান্ত মূলসনদসহ এক সেট ফটোকপি, এসএসসির মূল সনদ এক সেট ফটোকপি, মূল জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্মসনদ ও জীবনবৃত্তান্ত এবং দুই কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। পরবর্তীতে আইএম জাপানের প্রতিনিধিদল প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত টেকনিক্যাল ইন্টার্নদের গণিত ও জাপানি বর্ণমালা এবং শারীরিক যোগ্যতা (রান, সিট, আপস অ্যান্ড পুস আপস) বিষয়ক পরীক্ষা নেবে। যারা উত্তীর্ণ হবেন তাদের পর্যায়ক্রমে জনশক্তি কর্মসংস্থান ব্যুরোর অধীনস্থ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ছয় মাস মেয়াদি প্রি-ডিপারচার ট্রেনিংয়ের জন্য পাঠানো হবে। সফলভাবে উত্তীর্ণদের তিন বছরের চুক্তিতে জাপানে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হবে। তিন বছর জাপানে চাকরির মান সন্তোষজনক হলে তাকে আরো দুই বছরের চুক্তিতে নবায়ন করার সুযোগ দেবে জাপান সরকার। প্রি-ডিপারচার ট্রেনিং ও থাকা বাবদ কোনো খরচ প্রার্থীদের কাছ থেকে নেয়া হবে না। তবে খাওয়া বাবদ খরচ গুনতে হবে প্রার্থীদেরকে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাপানে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন হিসেবে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো অভিবাসন ব্যয় কর্মীদের কাছ থেকে নেয়া হবে না। শুধুমাত্র পাসপোর্ট তৈরি, মেডিক্যাল ফি এবং বহির্গমন ছাড়পত্র সংক্রান্ত ফি কর্মীদের কাছ থেকে নেয়া হবে।
এই প্রসঙ্গে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিচালক (ট্রেনিং) প্রকৌশলী মো: সালাহ উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করে জাপানগামীদের ট্রেনিংবিষয়ক মান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি তার দফতরে যাওয়ার অনুরোধ জানালেন।


আরো সংবাদ



premium cement
বিদেশী কোচ, ফুটবলার বদল করবে ব্রাদার্স খালেদা জিয়া কী নির্দেশনা দিয়েছেন জানালেন মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়ার সাথে বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা অডিটের খরচ তুলতে টাকা উত্তোলন, সাময়িক বরখাস্ত হিসাবরক্ষক ৯০ বাংলাদেশী জেলে ও নৌকর্মীকে হস্তান্তর করেছে ভারত চাঁদনী চক বিজনেস ফোরামের কমিটি ভেঙে প্রশাসক নিয়োগের অভিযোগ ‘জনগণকে নিয়ে জুলাই বিপ্লবের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গঠন করা হবে’ ভারতে পালানোর সময় ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার আড়াইহাজারে গ্রামবাসীর বসতঘরে হামলা ‘গণপিটুনিতে নিহত ডাকাত সহযোগীদের’ মুন্সীগঞ্জে ছাত্রলীগের সাথে ছাত্রদলের সংঘর্ষে আহত ১২ প্রেস কাউন্সিলকে শক্তিশালী করার আহ্বান প্রধান বিচারপতির

সকল